রবিবার ১০ নভেম্বর, ২০২৪


ভাইথিরি রেসরটের উপর চা বাগান।

হঠাৎই ঠিক হল, এ বার আমরা বিবাহবার্ষিকী কাটাব ওয়েনাডে। কেরালার একটা জেলা হল ওয়েনাড। এখানে বেড়ানোর জন্য অনেক আকর্ষণীয় জায়গা আছে। আছে ট্রেকিং, ক্যাম্পিং, ঝর্না, গুহা, পাহাড়, বন-জঙ্গল। মেয়ে সুমেধাই ট্রেনের টিকিট, হোটেল সব বন্দোবস্ত করল। ছুটি নেওয়া ছিল না। কোনওক্রমে রোগীদের শিফট করা হল। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় ট্রেন। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এই প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনে যাবো। আমরা প্রথমে যাবো মাইসোরে। ওখানে আমার স্ত্রীয়ের কাজিন থাকে। কুশান ও শ্রীমন্তী। আর আছে ওদের ছোট্ট মেয়ে মিষ্টি। রাত সাড়ে এগারোটায় পৌঁছলাম মাইসোরে।

বন্দে ভারত ট্রেনটা খুব ভালো করেছে। সুন্দর ট্রেন। ইউরোপের ট্রেনের মতো। ওখানেও এরকম অনেক দূর পাল্লার ট্রেন দেখেছি। সেগুলোর সঙ্গে বন্দে ভারতের অবশ্যই তুলনা করা যায়। ট্রেনের চালক ঘোষণা করছেন সামনে কোন স্টেশন আসছে। ট্রেনে বিকেল বেলায় ভালোই স্ন্যাক্স দিল। গরম সিঙ্গাড়ার সঙ্গে মশলা চা। চেয়ার ট্রেন হওয়ায় যদিও পা ছড়িয়ে বসা কিংবা শোওয়া যায় না। কিন্তু জানলা দিয়ে দেখা যায় বাইরের ঘর-বাড়ি, গাছ-গাছালি প্রাকৃতিক দৃশ্য। আসতে থাকে স্টেশন, কোথাও ট্রেনটা থামে, কোথাও থামে না। সিট বেল্ট বাধার ব্যাপার নেই। শুনতে হয় না বিমান বালিকাদের ঘোষণা, “লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলম্যান, বয়জ অ্যান্ড গার্লস। ওয়েলকাম টু ইন্ডিগো সেভেন থ্রি এইট সেভেন”। ট্রেনে যাওয়ার মজাই আলাদা।
রাত সাড়ে এগারোটায় স্টেশন থেকে বেরিয়ে দেখি, কুশান দাঁড়িয়ে আছে ওর কালো রঙের গাড়ি নিয়ে। গাড়িটা শক্ত পোক্ত। ডিকিতেও অনেক জায়গা আছে। আমাদের তিনটে স্ট্রোলার অনায়াসে ঢুকে গেলো। কুশানের থ্রি বেড রুম ফ্ল্যাট। আমাদের তিনজনের সহজেই সুন্দর রাত্রিবাস হয়ে গেল। পরদিন সকালে উঠতে দেরি হয়ে গেল। উঠে দেখি কুশানের স্ত্রী শ্রীমন্তী লুচি আর আলুর দম বানিয়ে রেখেছে। দারুণ ব্রেকফাস্ট সেরে ঠিক দশটায় বেরোলাম।

কুশানই গাড়ি ঠিক করে রেখেছিল। ড্রাইভারের নাম শান্তারাম। ও ইংরেজি জানে, সঙ্গে তামিল ও কানাড়া। চালক তিনদিন আমাদের সঙ্গেই থাকবে। নেবে সব ধরে পনেরো হাজার টাকা। দুগ্গা দুগ্গা করে রওনা হলাম। পথে পড়ল নানজুনদেশ্বর টেম্পল। বিশাল মন্দির। এটা শিবের মন্দির। এখানে নাকি খুব জাগ্রত দেবতা আছে। মন্দিরে আসেন অনেক ভক্ত দূর দূর থেকে। এটাকে দক্ষিণের কাশীও বলা হয়। ১২০ ফুট লম্বা এই মন্দির। যেমন সব হিন্দু মন্দিরের মতো এখানেও পান্ডা আছে। আমি মন্দিরটি ভালো করে দেখবো বলে ওদের একজনের সাহায্য নিলাম। আমার স্ত্রী শুভ্রার এতে মত ছিল না। তবু আমি দল ছুট হয়ে ভিআইপি দর্শন করে নিলাম। আবার কি আর আসা হবে! এই সব মন্দিরের পিছনে অনেক গল্প আছে।

জনশ্রুতি, টিপু সুলতানের রাজহস্তির দৃষ্টি চলে যায়। টিপু সুলতান তার মন্ত্রীর পরামর্শ মতো অসুস্থ হাতিকে এই মন্দিরে পাঠান। ৪৮ দিন যজ্ঞ করার পর রাজহস্তিটি দৃষ্টি ফিরে পায়। টিপু সুলতান এমারেল্ড গ্রিন শিবলিঙ্গ এই মন্দিরে দেন। এই মন্দিরের নামে এই টাউনের নাম ও নাঞ্জানগুডু। আধঘণ্টা লেগে গেল মন্দির থেকে বেরোতে বেরোতে। আমাদের গাড়ি এ বার চলল ভাইথিরির দিকে।
আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫৬: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসাসা— নুনিয়া ও সিঙ্গরা

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫৪: লোকশিক্ষক মা সারদা

মাইসোর থেকে ভাইথিরি ১৮০ কিলোমিটার। গাড়ি চলল বান্দিপুর ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে। পথে প্রতি এক কিলোমিটার অন্তর স্পিড ব্রেকার। সুন্দর রাস্তা, মসৃণ। রাস্তার পাশে তিনটে হাতি দেখতে পেলাম। একটা বড় হাতি আর তার দুটো বাচ্চা। বাচ্চা হাতি দেখতে খুব ভালো লাগে। এই জঙ্গলে বাঘ এবং চিতা আছে। তবে তারা তো আর আমাদের স্যালুট দিতে দাঁড়িয়ে থাকবে না। বন-জঙ্গল পার হয়ে দুপুর দুটোতে পৌঁছলাম সুলতান বাথেরি টাউনে। সুলতান বাথেরি কেরালার ওয়েনাড জেলার বড় টাউন। বাথেরি জৈন মন্দিরের নামে এই টাউনটি। জৈন মন্দির তেরোশ শতাব্দীর।

এখান থেকে একটু দূরে আছে ‘এডাক্কাল কেভস’, যেখানে গুহার গায়ে স্বাক্ষর আছে পুরোনো ইতিহাসের। ভাইথিরি এখান থেকে আরও একঘণ্টার রাস্তা। তাই আমরা ঠিক করলাম এখানেই খাবারদাবার সেরে নেবো। মেয়ে সুমেধা মোবাইল ঘেঁটে বের করল রেস্টুরেন্ট। নাম জুবিলি জমজমাট ভিড়। ভালো খাবার। বড় থালায় বিশাল চিকেন পিস নিয়ে বিরিয়ানিটাই বেশি পপুলার। আমাদের এত খিদে ছিল না। আসলে মন ভরেছিলো পথের আনন্দে। আমি নিলাম কেরল রাইস আর চিকেন কারি। কেরল স্টাইলে বানানো। কেরল রাইস পারবয়লড রাইস ছোট আর মোটা। বেশ টেস্টি।ওখান থেকে ভাইথিরি পৌঁছতে একঘণ্টা লাগল। সবুজ গ্রামের মধ্যে দিয়ে আকা বাঁকা ছোটো রাস্তা। মনে হয় বলি গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ।

দু’পাশে বন জঙ্গল। নাম না জানা গাছ গাছালি। খুব বড় বড় সাদাধুতুরা ফুল ফুটে আছে। এত বড় ধুতুরা ফুল কখনও দেখিনি। গুগল ম্যাপ থেকে ডিরেকশন নিতে নিতে ভাইথিরি মিস্ট রেসরটের সাইনবোর্ড দেখতে পেলাম। কিন্তু যাব কী করে? রাস্তা বলতে যা বোঝায় সেরকম কিছু নেই। রিসেপশন থেকে আগেই বলে দিয়েছিল, ভয় পাবেন না। পাঁচশো মিটার মতো সেই তথাকথিত ছোট আকা বাঁকা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে রেসরটে পৌঁছলাম। ভাবলাম পৌঁছনো তো গেল, বৃষ্টি হলে এই রাস্তা দিয়ে ফেরা যাবে তো? রিসেপশনে পৌঁছতে প্রদীপ ও চন্দন দিয়ে বরন করে নিল কেরালা স্টাইলে। তারপর দিল হানি-টি। হানি এখানে খুব পাওয়া যায়। রিসেপশনের কাছেই আমদের ঘর দেওয়া হল। ট্রি হাউস। ট্রি হাউসে আগে কোনওদিন থাকিনি। ঘরটা দারুন। ঘরের ভিতরে বড় গাছ উঠে গিয়েছে। সঙ্গে লতা পাতা।

ওয়েনাডে গ্লাস ব্রিজ।

অসাধারণ প্রকৃতি। জানলা দিয়ে পুরো জঙ্গল দেখা যায়। ব্যালকনিতে বসলে মনে হয় বনের মধ্যে বসে আছি। না আজ আর বেরোনো। এই বনবাসটা উপভোগ করা যাক রুমের নরম বিছানায় সাদা চাদরের তলায়। সন্ধেবেলা রেসরটের লোক এসে বলে গেল কী কী এখানে দেখার আছে। পরদিন সকাল আটটায় ট্রেকিং যেতে চাইলে যেতে পারো। জীবনে কখনও ট্রেকিং করিনি। এই বয়সে পারবো তো? এই বন জঙ্গলের মধ্যেই আছে রেস্টুরেন্ট। রাতে ওখানেই খেতে গেলাম। একটু মিস্টি ঠান্ডা আছে। কয়েকজন দেখলাম ক্যাম্প ফায়ার করছে। রেস্টুরেন্ট তা বেশ ভালো। সবরকম খাবার পাওয়া যায়। আমরা চাইনিজ খাবো ঠিক করলাম। ক্রিম অফ চিকেন স্যুপ নুডলস, মোমো, ফ্রায়েড রাইস, চিকেন গ্রেভি দিয়ে একটা ডিশ। এই জঙ্গলের মধ্যে এসব পাবো ভাবতে পারিনি।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৭৪: কথায়-কথায়

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩০: নলিনী দাশ— গণ্ডালুর সৃজনশিল্পী

পরদিন সকাল আটটায় ট্রেকিংয়ে বেরোলাম। পথ বলতে কিছুই নেই। বনের মধ্যে দিয়ে পায়ে হাঁটা। গাইড বলল, এখানে লিচ আছে, সাবধানে থাকবেন। প্রতি স্টেপ সাবধানে ফেলতে হবে। ফসকালে মুশকিল আছে। গাছ গাছালির মধ্যে দিয়ে আধ ঘণ্টা ট্রেকিং করে উপরে পৌঁছলাম। একদম হিলটপ। উপরে নীল আকাশ। দূরে পাহাড়। সামনে গাড় সবুজ বিস্তৃত চা বাগান। সেখানে কিছু মহিলা চা পাতা কেটে তুলে ঝুড়িতে ভরছে। ছবি তোলার জন্য সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আজকাল সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে ছবি তোলাকেই প্রথম কাজ মনে করে। আমাদের ট্রেকিংয়ের গাইডের নাম জন ব্রাভো সিং। ও বলল, আমাকে জেবি বলবেন। আমাকেও সকল জ্যোতির্ময় থেকে ছোট করে জেবি বলে। ট্রেকিংয়ে ওঠা থেকে নামা আরও রিস্কি। যে কোনও সময় পা পিছলে যেতে পারে।

পুকুডি লেক।

আমরা ঠিক করলাম আজ সকালে সুজিপারা লেকে যাবো। একদম লেকের মুখে পৌঁছনোর পর দেখলাম লেক দেখা এখন বন্ধ। কী আর করা যাবে। ঠিক করলাম গ্লাস ব্রিজ দেখবো। ওটা দেখতে গেলে জিপে করে পাঁচ কিলোমিটার মতো ভিতরে যেতে হবে। রাস্তা বলতে কিছু নেই বললেও কম বলা হবে। শুধু কিছু পাথর ফেলে একটা রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে নিয়ে চলল জিপটা। কিন্তু যখন পৌঁছলাম তখন মনটা যে খুশিতে ভরে উঠলো যে বলে বোঝানো মুশকিল। দু’পাশে সবুজ লম্বা গাছের সারি, দূরে সবুজ পাহাড় যেন আকাশকে ছুঁতে চলেছে। কেরল সত্যিই ‘গডস ওন কান্ট্রি’। অনেক ছবি তুললাম। আজকাল তো ফিল্ম রোলের ব্যাপার নেই। মনের আনন্দে ক্যামেরাবন্দি হয়ে থাকল অসাধারণ সেই সব দৃশ্যপট।
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-২: যতই দেখি তারে, ততই দহি…

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৫: প্রথম ভারতীয় সিভিলিয়ান সত্যেন্দ্রনাথ ভেবেছিলেন পরীক্ষায় পাশই করবেন না

এ বার আমরা যাবো পুকুডি লেক। বন-জঙ্গলের মধ্যে হঠাতই একটা সুদৃশ্য ফ্রেশ ওয়াটার লেক। দু’পাশে সবুজ গাছের সারি, দূরে পাহাড়। লেকের দুপাশ দিয়ে হাঁটার রাস্তা আছে বাঁধানো। সেখান দিয়ে কিছুক্ষণ না হাঁটলে জীবনের এক মধুরতম অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বানসোরা ড্যাম।

ওর মধ্যে বোটিং করার ব্যবস্থা আছে। তবে না থাকলেই ভালো হতো। এরকম একটা শান্ত লেককে নিশ্চিন্তে থাকতে দিলে খারাপ হতো না। ফেরার পথে দেখলাম জ্যাকফ্রুট আইস্ক্রিম পাওয়া যাচ্ছে। লোভ সামলাতে পারলাম না। সুন্দর টেস্ট।

পুকুডি লেক থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা। পড়ন্ত বিকেলের আকাশ আর পাহাড় দেখতে দেখতে আবার ভাইথিরি টাউনে পৌঁছলাম। এ বার যাবো স্পাইস গারডেনে। ওখানে মশলা, হাতে তৈরি করা চকোলেট, কেরালার বিখ্যাত আয়ুর্বেদিক তেল পাওয়া যায়। আমরাও বেশ কিছু জিনিসপত্র কিনলাম।

পরদিন যাবো বানসোরা ড্যামে। একশো ছাব্বিশ ফুট উঁচুতে এই ড্যামটি ভারতের সব থেকে বড় ড্যাম এবং এশিয়ার দ্বিতীয় ড্যাম। বানসোরা হিলসের নিচে এই ড্যাম। কাবানি নদীকে ঘিরে রয়েছে। দূরে সুন্দর ঘন সবুজ পাহাড়। নীচে স্বচ্ছ জল। আমরা এখানে ক্যানোটি বোটে চড়ে একদম লেকের ভিতরে চলে গেলাম। আমাদের মতো অনেক পরিবার বোটিং করতে এসেছে। একটা মেয়ে দেখলাম একলা একটা বোট চালাচ্ছে। কেন ও একলা?
আরও পড়ুন:

গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-১: ভাঙনের জয়গান গাও

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৩: ‘সুরের পরশে’ তুমি-ই যে শুকতারা

রাত্তিরে আর ভাইথিরি মিস্টে ফিরলাম না। সুলতান বাথেরিতে থাকব ঠিক করলাম। ছোট্ট হোটেল। তবে এক রাত্তিরের তো ব্যাপার। আজকে তো আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। স্পেশাল ডিনারের বন্দোবস্ত মেয়েই করল। একটা এক্সক্লুসিভ কেকের দোকানো পাওয়া গেল। সেখান থেকে কেক নিয়ে গেলাম উইলটন হোটেলে। এটা সুলতান বাথেরির সব থেকে বড় হোটেল। এখানে নাকি লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ইলেকশন ক্যাম্পেনের সময় খেতে এসেছিলেন। দেওয়ালে সব ভিআইপি ভিজিটররদের ছবি। শশী থরুরের ছবি দেখলাম। রেস্টুরেন্টে দেখলাম প্রচুর লোক খেতে এসেছে। রবিবার বলে কথা।

ড্যামের ভিতর কাবানি নদী।

আজকাল বিদেশের মতো পুরো ভারতে জুড়েই এখন ছুটির দিনে বাইরে খাবার চল হয়েছে। আমরা কেক কেটে অ্যানিভারসারি সেলিব্রেট করলাম। খাওয়াটাও বেশ ভালো ছিল। পরদিন ফিরবো মাইসোর হয়ে। রবিবার বলে ফিরতে তত দেরি হল না। দেড় ঘণ্টা আগেই পৌঁছে গেলাম। কী করি? কাছেই বনসাই গার্ডেন আছে। সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। ফিরবো সেই বন্দে ভারত ট্রেনে। সন্ধে সাতটায় ঠিক সময়ে ট্রেন পৌঁছল চেন্নাই স্টেশনে। এখন ঘরে ফেরা। বিবাহ বার্ষিকী সামনের বছর আসবে। তবে সে বারও কি ব্যস্ত জীবন থেকে বেরিয়ে আমরা যেতে পারবো প্রকৃতির কোলে? স্ট্রোলার ব্যাগ টানতে টানতে এগারো নম্বর প্ল্যাটফর্ম পেরনোর সময় সেই কথাটাই মনে হচ্ছিল।

ছবি: লেখক।
*ডাঃ জ্যোতির্ময় বিশ্বাস সাহিত্যের জগতে পদচারণা করেন ডাকনামে। ‘সবুজ বিশ্বাস’ নামে তিনি একাধিক সাহিত্যকেন্দ্রিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। বাচিক শিল্পেও তাঁর প্রবল আগ্রহ। এই মুহূর্তে বাচিকশিল্পে আমাদের রাজ্যে যাঁরা স্বনামধন্য, তাঁরা অধিকাংশই ডাঃ বিশ্বাসের বন্ধুস্থানীয়। ছাত্রজীবনে, এই শহরে এমবিবিএস পাঠকালে একসঙ্গে এ-মঞ্চে, সে-মঞ্চে কবিতা আবৃত্তি করেছেন। পরে পেশাগত কারণে বিদেশযাত্রা ও গবেষণাকর্মের শেষে শংকর নেত্রালয়ে যোগদানের ফলে সেই বাচিকশিল্পের সঙ্গে সেই যোগাযোগ ক্ষীণ হয়ে উঠেছে। চেন্নাই শহরের বাঙালিসমাজের যে কোনো অনুষ্ঠানে অবশ্য এখনো তিনি আবৃত্তি পরিবেশন করেন। ডাঃ বিশ্বাস চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বনামধন্য। ভারতের প্রথম শ্রেণির একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। তিনি চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ের অন্যতম ডিরেক্টর।

Skip to content