মঙ্গলবার ৯ জুলাই, ২০২৪


ছবি সৌজন্যে: ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত ‘মিউজিয়াম অফ নর্থ’ জাদুঘরটি প্রাগৈতিহাসিককাল থেকে এখন পর্যন্ত এই আলাস্কার তথা উত্তর মেরুর বহু সাক্ষ্য খুব যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করে রেখেছে। এই অঞ্চলে খননকার্য চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা, ঐতিহাসিকরা এবং নৃতাত্বিকরা (এনথ্রোপোলজিস্ট) ডাইনোসর, ম্যামথ-সহ বহু প্রাগৈতিহাসিক জন্তু জানোয়ারের হাড়গোড় জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন। সেগুলোও যেমন রাখা আছে ওই উত্তরের জাদুঘরে, ঠিক তেমন শ্বেতভল্লুক, বিশাল বড় নীল তিমি- সহ বর্তমানকালের বেশ কিছু প্রাণী যাদের কিনা মূলত এই মেরু অঞ্চলেই দেখতে পাওয়া যায়, তাদের কঙ্কালও সংরক্ষণ করা আছে।
এখানকার আদিম উপজাতিদের ব্যবহার করা আদিম কালের বহু জিনিসও রাখা আছে সেই জাদুঘরটিতে। যেমন যেসব অস্ত্রশস্ত্র তারা ব্যবহার করতো শিকার করার জন্য, যেসব নৌকো করে তারা যাওয়া আসা করতো, তাদের পোশাক আশাক, ইত্যাদি ইত্যাদি এমন অনেক কিছুই রাখা আছে সেখানে। যদি এ সব ব্যাপারে কারও কৌতূহল থাকে তাহলে এখানে ঘুরে ঘুরে দেখলে আলাস্কার এবং সামগ্রিক ভাবে এই মেরু অঞ্চলের অনেক ঐতিহাসিক এবং প্রাগৈতিহাসিক বিষয় সম্পর্কে অনেক কিছুরই হদিস পাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৩৬: বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি পাহাড়ের ঢাল বরাবর নীচ থেকে ওপরে উঠে গিয়েছে

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫৫: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা— আমুর ও গোশিঙা

আমি আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র সম্পর্কে ইন্টারনেটে পড়েছিলাম। ডিনকে জিজ্ঞেস করতে সেটার সম্পর্কে আরও একটু বিশদে জানা গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসরের মধ্যে বা শহরের মধ্যে থেকে রকেট ছাড়া সম্ভব নয়। তাতে অনেক রকমের অসুবিধা। এখান থেকে বেরিয়ে গাড়ি চালিয়ে উত্তরে মাইল দশ বারো চলে গেলে পোকার ফ্ল্যাট রিসার্চ রেঞ্জ। ওটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র বা রকেট লঞ্চ সেন্টার।
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫২: দেশহিতৈষী মা সারদা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৩: মৃণালিনীর মৃত্যু হয়েছিল কীসে?

নাসা-সহ দেশের বিভিন্ন সংস্থা এখান থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করে, যেগুলো ছোট ছোট কৃত্রিম উপগ্রহ (আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট) বয়ে নিয়ে গিয়ে মহাকাশে পৃথিবীর চারিদিকে বিশেষ কিছু কক্ষপথে তাদের বসিয়ে দেয় বিবিধ রকমের তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। এ সব জায়গায় কোথায় কী ধরণের কাজকর্ম হয় সে সব সম্পর্কে পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনা করা যাবে।
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-১: টলস্টয় ও সোফিয়া—প্রেম ও বিবাহ/১

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩৫: কী যে করি করি ভেবে মরি মরি

তবে এই সব ভবন সম্পর্কে প্রথমেই একটু বলে রাখলে পরে কিছু ঘটনা বুঝতে সুবিধা হবে। কারণ আমার এখানকার অভিজ্ঞতার প্রায় অনেকটাই মূলত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরেই। আর এই কথাগুলো আমিও প্রথম দিন অর্থাৎ ওই চাকরির ইন্টারভিউ দিতে এসেই জেনেছিলাম। কাজেই এইটুকু আপাতত জানলেই মনে হয় পাঠকদের আমার অভিজ্ঞতার কথাগুলো বুঝতে বা বলা ভালো, অনুভব করতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। কোনও জায়গাতেই খুব একটা স্থানচ্যুত মনে হবে না।—চলবে।
* রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা (Mysterious Alaska): ড. অর্ঘ্যকুসুম দাস (Arghya Kusum Das) অধ্যাপক ও গবেষক, কম্পিউটার সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস।

Skip to content