শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


এআর রহমান ও মণি রত্নম।

১৯৯২ সালে মুক্তি পেয়েছিল সুপারহিট ‘রোজা’ ছবি। পরিচালক মণি রত্নম এবং সঙ্গীত পরিচালক এআর রহমান প্রথম একসঙ্গে এই ছবিতে কাজ করেছিলেন। ছবি এবং গানগুলি দুই-ই দর্শকের মন ছুঁয়ে গিয়েছিল। ‘রোজা’র পরে ফের জুটি বাঁধেন এই দুই তারকা। তিন বছর পর ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় ‘বম্বে’। তবে এই ছবি নিয়ে পরিচালক-সুরস্রষ্টার মধ্যে বেশ ঝামেলা হয়েছিল। যদিও সেই সব ঝামেলা পেরিয়ে এই জুটি ‘রোজা’, ‘বম্বে’ ছাড়াও ‘দিল সে’ (১৯৯৮), ‘গুরু’ (২০০৭) এর মতো ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। সম্প্রতি ‘পোন্নিয়ান সেলভান’ ছবিতেও এই জুটির জাদু দর্শকরা দেখেছেন।
‘বম্বে’ ছবির কাজ চলাকালীন রহমানের উপর খুব চটে যান মণি রত্নম। কেন? চিত্রগ্রাহক রাজীব মেনন বিষয়টি একটি সাক্ষাৎকারে খোলসা করেন। রাজীব চিত্রগ্রাহক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন ‘বম্বে’ ছবি দিয়ে। ওই সাক্ষাৎকারে রাজীব জানান, “বম্বে ছবির শুটিং চলছে জোরকদমে। ছবির ‘হুম্মা হুম্মা’ গানের শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি সারা। এদিকে রহমান তখনও গানটি তৈরি করে উঠতে পারেননি! তাহলে শুটিং কী করে হবে ভেবে সবাই চিন্তিত! এদিকে বিরক্ত মণি সিদ্ধান্তই নিয়েই ফেলেছিলেন সরকার রহমানকে এই কাজ থেকে সরিয়ে দেবেন। যদি শেষমেশ মণির মন গলে যায়।’’
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৯: বাইনাচ-গানেরও কদর ছিল ঠাকুরবাড়িতে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৬: শ্রীমায়ের দুই ভ্রাতৃবধূর কথা

 

পিয়ানো পরিষ্কার

অনেকের বাড়িতে পিয়ানো থেকে। দীর্ঘ দিন ব্যবহারের পর পিয়ানো সাদা রিডগুলি কালচে পড়তে শুরু করে। এক্ষেত্রে একটা পাতলা কাপড়ে নিতে তাতে দাঁতের মাজন দিয়ে রিডগুলিতে ঘষে দিন। রিডগুলিতে ঘষার কাজ শেষ হলে হাল্কা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। দেখবেন রিড কেমন নতুনের মতো দেখতে লাগছে।

আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৩: মহাভারতে উল্লিখিত মিথ্যাশ্রয়ের প্রাসঙ্গিকতা কী আজও আছে?

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৩: তরু দত্ত— এক আনন্দ বিষাদের তরুলতা

রাজীবের কথায় “এক দিন সন্ধেবেলায় রহমান আমাদের সবাইকে ডাকলেন। আমরা ভেবেছিলাম পরের দিন গানটার শুটিং হবে, সেই জন্য তিনি ডেকেছেন। কিন্তু আমাকে ও মণিকে রহমান জানান, তিনি সুরটা তখনও ভেবে উঠতে পারেননি।” বিস্মিত মণি জানতে চান, “যদি তোমার সুর না করা হয়ে থাকে তা হলে এখন আমাদের ডাকলে কেন?” জবাবে রহমান জানান, “আপনাদের অন্য একটা জিনিস শোনাব বলেই ডেকেছিলাম।” এর পরই পরিচালক এবং চিত্রগ্রাহককে ‘বম্বে’ ছবির থিম মিউজিক শোনান সুরসম্রাট রহমান।
আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪৯: ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—ওড়া, কেওড়া, চাক কেওড়া ও কৃপাল

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৩: বাবু ডাক্তার ও ‘ডাক্তারবাবু’

রাজীব বলেন, রহমানের সেই সুর শুনে তিনি ও মণি ভীষণ ভাবে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের চোখে জল এসে গিয়েছিল। সাক্ষাৎকারে রাজীবের জানান, “আমি কেঁদেই চলেছিলাম। এমন সময় মণি জানান, ‘রহমান, এ তুমি কী করেছ? আমি তো তোমায় না বলতে এসেছিলাম। আর তুমি কিনা আমার চোখে জল এনে দিলে!” তখন রহমান তাঁকে বললেন, “এইমাত্র সুরটি করেছি।” গানটি তিনি টানা তিন দিন ধরে তৈরি করেছিলেন। তাই ‘হুম্মা হুম্মা’ তিনি করতে উঠতে পারেননি।

মণি এক সাক্ষাৎকারে রহমান সম্পর্কে বলেছিলেন, তাঁরা সারা রাত কাজ করতেন। মণির কথায়, “আমরা ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কাজ করতাম। কাজের মধ্যে আনন্দ ছিল। রাত ৩টের সময় হেডফোন লাগিয়ে মগ্ন রহমান। আমরা কিছুই শুনতে পাচ্ছি না। কাজ শেষ করে রহমান যখন হেডফোনটা আমাদের কানে দিল তখন ওর কাজটা শুনলাম। এক অন্য অভিজ্ঞতা”

Skip to content