প্রয়াত মনোজ মিত্র।
বিনোদন জগতে দুঃসংবাদ। প্রয়াত বিশিষ্ট অভিনেতা মনোজ মিত্র। কিংবদন্তি শিল্পী বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। থিয়েটার ও চলচ্চিত্র জগতের বর্ষীয়ান অভিনেতা মঙ্গলবার সকাল ৮.৫০ নাগাদ তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই খবর জানান অভিনেতার ভাই, সাহিত্যিক অমর মিত্র।
মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। ‘বাঞ্ছারামার বাগান’, ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ সহ একাধিক সিনেমায় তাঁকে দেখা গিয়েছে। তিনি সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার জয়ী। নট ও নাট্যকার মনোজ মিত্রের প্রয়াণে বাংলা সংস্কৃতি জগতে বিরাট শূন্যতা তৈরি হল। অভিনেতা সল্টলেকের ক্যালকাটা হার্ট ইন্সিটিউটে ভর্তি ছিলেন। ভর্তির সময় ক্যালকাটা হার্ট ইন্সিটিউট জানিয়েছিল, অভিনেতার হৃদযন্ত্র ঠিক মতো কাজ করছে না। হার্ট পাম্পের সমস্যা আছে। সঙ্গে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই। ক্রিয়েটিনিনও বেড়ে গিয়েছে বিপজ্জনক মাত্রায়।সমস্যা দেখা দিয়েছে সোডিয়াম-পটাসিয়ামেরও। অভিনেতার চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
দুই বাংলার উপন্যাস: বসুন্ধরা এবং..., ৩য় খণ্ড, পর্ব-৪২: অরুণাভ অন্তর্ধান
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৮: মংপুর কমলালেবু পেয়ে অসুস্থ কবি খুব আনন্দ পেয়েছিলেন
বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ মিত্রের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের সাতক্ষিরা জেলার ধূলিহর গ্রামে, ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বরে। ১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক হন তিনি। বিষয় চিল দর্শন। এই কলেজেই তাঁর নাটক জীবন শুরু। তাঁর সঙ্গে সঙ্গী হিসেবে ছিলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বাদল সরকারের মতো ব্যক্তিত্বদের। স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এমএ করেন। তার পরে ডক্টরেটের জন্য গবেষণা শুরু করেন।
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৮৮: পালাবার কোনও পথ নেই
রহস্য উপন্যাস: হ্যালো বাবু!, পর্ব-৫৪: আততায়ী এক, নাকি দুই?
মনোজ মিত্রর অভিনয় জীবন শুরু ১৯৫৭ সালে। চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন ১৯৭৯ সালে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তবে এর আগে একাধিক কলেজে দর্শন বিষয়েও শিক্ষকতাও করেছেন। তাঁর লেখা প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’। নাটকটি লেখানে ১৯৫৯ সালে। তবে ১৯৭২-এ ‘চাক ভাঙা মধু’ নাটকের মাধ্যমে মনোজ মিত্র পরিচিতি পান। ‘চাক ভাঙা মধু’ নাটকটি নির্দেশনা করেন বিভাস চক্রবর্তী। ‘সুন্দরম’ প্রতিষ্ঠাতা হলেন মনোজ মিত্র। মনোজ থিয়েটারের মতোই চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গিয়েছেন। বহু পুরস্কার, সম্মান পেয়েছেন তিনি। অভিনেতা মনোজ মিত্রের মৃত্যু একটি যুগের অবসান।