রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


নাইভস আউট।

 

নাইভস আউট

কাহিনি বৈশিষ্ট্য: মার্ডার মিস্ট্রি (২০১৯)
ভাষা: ইংরিজি
প্রযোজনা: রাম বার্গম্যান রিয়ান জনসন
পরিবেশনা: এমআরসি, টি স্ট্রিট প্রোডাকশন, রাম বার্গম্যান প্রোডাকশন
কাহিনি ও চিত্রনাট্য: রিয়ান জনসন
নির্দেশনা: রিয়ান জনসন
চিত্রগ্রহণ: স্টিভ ইয়েডলিন
আবহ সংগীত: নাথান জনসন
সম্পাদনা: বব ডুক্সে
প্রোডাকশন ডিজাইনার: ডেভিড ক্র্যাঙ্ক
শিল্প নির্দেশনা: ডেভিড ক্লেসিঙ্গার
অভিনয়ে: ড্যানিয়েল ক্রেগ, ক্রিস ইভান্স, আনা ডি আরমাস, জেমি লি কার্টিস, মাইকেল শ্যানন, ডন জনসন, টনি কোলেট, লেকিথ স্ট্যানফিল্ড, ক্যাথরিন ল্যাংফোর্ড, জেডেন মার্টেল, ক্রিস্টোফার প্লামার প্রমুখ
সময়সীমা: ১৩০ মিনিট
দেখা যাবে: অ্যামাজন প্রাইম ভিডিয়ো
রেটিং: ৯.৫/১০

৪০ মিলিয়ন ইউএস ডলার মানে প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকায় বানানো নাইভস আউট নামের ২০১৯ এ মুক্তিপ্রাপ্ত এই মার্কিন মার্ডার মিস্ট্রি ৩১২.৯ ইউএস ডলার মানে ২৬২০.২৬ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ছবির শিরোনামের বাংলা অর্থ হল খোলা ছুরি। বিদেশি ছবিতে অনসম্বল কাস্ট আমাদের ক্ষেত্রে মাল্টিস্টারার। রিয়ান জনসনের লেখা এবং পরিচালনায় ড্যানিয়েল ক্রেগ সহ ১১ জন গুণী অভিনেতা অভিনেত্রীর সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এই টানটান রহস্য বাহিনী।
বেস্টসেলিং রহস্য কাহিনি লেখক প্রভূত সম্পত্তির অধিকারী হারল্যান থ্রম্বের মৃত্যুর তদন্তের জন্য বেনোয়েট ব্ল্যাংক নামে এক দুঁদে গোয়েন্দাকে নিয়োগ করা হয়েছে। অদ্ভুত ব্যাপার নিয়োগকর্তার নামধাম ব্ল্যাংক জানেন না। তার কাছে একটা খামের মধ্যে মোটা অংকের পারিশ্রমিক দিয়ে বলা হয়েছিল এই মৃত্যুর তদন্ত করার জন্য। যদিও পুলিশ এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক আত্মহত্যা বলে রায় দিয়েছিল কিন্তু গোটা ঘটনার মধ্যে ক্রমশ অসংখ্য সন্দেহজনক প্রশ্ন এবং সূত্র পাওয়া যেতে লাগল। এই বিরাট সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে পরিবারের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল তাই তাঁরা কেউই সন্দেহের উর্ধ্বে নন।
আরও পড়ুন:

মুভি রিভিউ: দ্য নেমসেক— ঝুম্পা লাহিড়ী ভাসমান বাঙালির দরদি কাহিনিকার

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬০: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা— দুধি লতা ও পঞ্চরতি লতা

লেখক নির্দেশক রিয়ান জনসন ২০০৫ নাগাদ তার কম বাজেটের প্রথম ছবি ব্রিকের পর, এই ‘খুনী কে’? ধারার এই রহস্য কাহিনিটি লেখেন পরবর্তী বহুবছর তাঁর অন্যন্য ছবি বানানোর ব্যস্ততায় কাজ থমকে ছিল এরপর ২০১৮ সালে জনসন তার নিজের লেখা কাহিনির চিত্রনাট্য রচনায় মন দেন। প্রায় ৭/৮ মাস ক্রমাগত চরিত্রায়ন এবং কাহিনি বিন্যাস-এর ওপর কাজ করতে করতে মনোমত চিত্রনাট্য তৈরি হল। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ শুটিং শেষ হয়। ৪৪তম টরেন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেপ্টেম্বর এবং আমেরিকায় নভেম্বর ২০১৯ এ এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল।
আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৪: সরলাদেবী—নির্ভীক এক সরস্বতী

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫৪: স্বার্থান্বেষীকেও চিনতে শেখায় এই গ্রন্থ

নাইভস আউট ছবিটি গোল্ডেন গ্লোবস, ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম আওয়ার্ড (বাফটা)-সহ পৃথিবীর বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতায় মনোনয়ন পেয়েছে পুরস্কৃত হয়েছে এবং সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য হিসেবে অস্কার পুরস্কারের জন্যেও মনোনীত হয়েছিল। ব্রিটিশ স্পাই এজেন্ট ০০৭ জেমস বন্ড চরিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা ড্যানিয়েল ক্রেগ প্রাইভেট ডিটেকটিভ বেনোয়েট ব্ল্যাংক-এর ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেছেন। রহস্য কাহিনি লেখক মৃত হারল্যান থ্রম্বের নার্স মার্টা ক্যাব্রেরার ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেছেন অ্যানা দ্য আর্মাস। তবে জেমস বন্ড দেখে পরিচালক রিয়ান জনসন ক্রেগকে পছন্দ করেননি। তিনি থিয়েটারে ক্রেগের অভিনয় দেখে তাকে এই চরিত্রে মনোনীত করেন।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৭: কী করে গল্প লিখতে হয়, ছোটদের শিখিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ

এই দেশ এই মাটি, ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব-২৩: রাজসভায় মিথিলার সঙ্গীতজ্ঞ

তবে মার্টার ভূমিকাভিনেত্রীর জন্য পরিচালক এবং কাস্টিং ডিরেক্টর ম্যারি ভারনিউকে বেশ সময় দিতে হয়েছে। ২০১৭ সালের ব্লেড রানার ২০৪৯ ছবিতে অ্যানা দ্য আর্মাসকে পছন্দ হলেও নার্স মার্টা ক্যাব্রেরার ভূমিকায় তাকে একটু বেশি লাস্যময়ী মনে হয়েছিল পরিচালকের। কিন্তু পরে অভিনেত্রীর চোখের আবেদন চরিত্রটির জন্য অত্যন্ত উপযোগী বলে মনে হয় পরিচালকের। ড্যানিয়েল ক্রেগ প্রথমে বেনোয়েট ব্ল্যাঙ্ককে আগাথা কৃষ্টির অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ডিটেকটিভ এরকুল পোয়ারোর মতোই ভেবেছিলেন। পরে পরিচালক তাঁকে চরিত্রটিকে অন্যভাবে চিত্রন করতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৭: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—ভালোবাসিবে বলে ভালোবাসিনে/২

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৯: বেশি ঘুম শরীরের পক্ষে ভালো?

যেকোনও সিনেমা সার্থক হয়ে ওঠে সিনেমাটোগ্রাফি এডিটিং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর স্ক্রিন-প্লে আর ডাইরেকশনের সার্থক মেলবন্ধনে। এই ছবির চিত্রগ্রহণ সম্পাদনা আবহ সংগীত একে অপরের যথাযথ পরিপূরক। তবে অবাক হয়ে দেখতে হবে এই ছবির শিল্পনির্দেশনা এবং অসামান্য সেট, যা ছবির বহু দৃশ্যেই নির্বাক চরিত্র। ছবিতে অসংখ্য নানা মাপের নানা ধরণের ছুরি দিয়ে সাজানো একটা সুবিশাল চক্র বা হুইল অফ নাইভস ব্যবহার করা হয়েছে, যা ছবির টাইটেলের সঙ্গে বিশেষ সামঞ্জস্যপূর্ণ। রয়েছে প্রমাণ মাপের যান্ত্রিক পাপেট বা ‘অটোমাটা’ যা মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। এ ছবিতে ব্যবহৃত আকর্ষণীয় সামগ্রী বহু মানুষের ব্যক্তিগত এবং নিউ জার্সির মরিস মিউজিয়ামের সংগ্রহ।
* জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’। এখন লিখছেন বসুন্ধরা এবং…এর ৩য় খণ্ড।

Skip to content