রবিবার ১০ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

চপ-শিঙাড়া, ঝালমুড়ি মুখে দিলেই ঠোঁটের ওপরে নীচে, মুখের ভিতরে জ্বালা করে ওঠে। ব্যথা করতে থাকে দীর্ঘক্ষণ। আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না হঠাৎ করে কী হল। কয়েক দিন ধরে যন্ত্রণাটা থাকে। আবার ধীরে ধীরে ব্যথা কমেও যায়। মুখের মধ্যে এই ক্ষত অন্য কিছু নয়, একে বলা হয় মাউথ আলসার।

আমরা অনেকেই নিজের অজান্তেই মুখের আলসারে ভুগি। মূলত আমাদের শরীরে ভিটামিন বি১২, ভিটামিন-সি, ফোলেট, জিঙ্কের মতো কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদানের অভাবের জন্য মাউথ আলসার হয়। টক জাতীয় কিছু খেলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় পাকস্থলীতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হলেও এমনটা হতে পারে। এমন সমস্যা বারবার হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। তবে কিছু ঘরোয়া টোটকাও আমাদের হাতের কাছে রয়েছে যা মুখের আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে। রইল তেমন কয়েকটি ঘরোয়া টোটকার হদিস।
 

তালিকায় কী কী ঘরোয়া টোটকা আছে?

 

জিঙ্ক-সমৃদ্ধ খাবার

কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, কাজু, ওট এবং বিটের মতো সব্জি খাওয়া যেতে পারে। এই সব খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ জিঙ্ক থাকে। তাই সহজেই জিঙ্কের ঘাটতি মেটে। ফলে জিঙ্কের অভাব থেকে মুখে ঘা হলে সহজেই সেরে যাবে।
 

নারকেল তেল

ত্বকের যত্ন থেকে চুলের দেখাশোনা — নারকেল তেলের ভূমিকা অনবদ্য। তবে কেবল রূপচর্চায় নয়, নারকেল তেল আমাদের শরীরেরও দেখাশোনা করে। মুখে আলসার হলে, চটজলদি সমাধানের জন্য নারকেল তেলে ভরসা রাখতে পারেন। মুখে ক্ষত দেখা দিলে অল্প নারকেল তেল নিয়ে কুলকুচি করলে কমে আসে জ্বালা-যন্ত্রণা ভাব।

আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫৩: রাজনীতিতে উন্নতির জন্য নিন্দা বা প্রশংসা ব্যক্তিগত পরিসরে করাই শ্রেয়, সভায় নয়

গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-৪: যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই না?

 

মধু লাগান

মধুর গুণাগুণ তো সবারই জানা। মুখে ঘা হলে মধু নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন। ক্ষতস্থানে মধু দিলে জায়গাটি ঠান্ডা হবে। জ্বালা ভাব অনেকটাই কমে যাবে। মধুতে থাকা অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল উপাদান, যে কোনও সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। তাই মুখের ক্ষত বা আলসারে মধু লাগালে উপকার পেতে পারেন।
 

বেকিং সোডা

হেঁশেলের একটি একটি দরকারি উপাদান হল বেকিং সোডা। রান্নাতে ব্যবহার ছাড়াও, আমাদের শরীরের বেশ কিছু সমস্যায় বেকিং সোডা খুব কার্যকরী। মুখের আলসারের ক্ষেত্রে ঘরোয়া টিপস ভালো বিকল্প হতে পারে হিসাবে বেকিং সোডা। এটি আমাদের পিএইচ ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই ক্ষতের জ্বালা ভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। মুখের আলসার হলে আধ কাপ জলে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলকুচি করলে ঘা সেরে যাবে।

আরও পড়ুন:

পাঁচ বা দশটা নয়, খেতে হবে ২৩টি কাঠবাদাম! পুষ্টিবিদেরা কেন এই সংখ্যাতেই গুরুত্ব দিচ্ছেন?

রোজ অফিস যাওয়ার আগে, না কি সন্ধেবেলায় ফিরে, কখন হাঁটতে ওজন ঝরবে?

 

খাবারদাবার

ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। মটরশুঁটি, ডাল, পালংশাক, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার নিয়মিত খেতে পারেন। নিয়মিত ফল খেলেও সমস্যা মিটবে।
 

ভিনিগার

জলের সঙ্গে সামান্য ভিনিগার মিশিয়ে নিয়ে সেই জল দিয়ে প্রতিদিন দু’বার করে কুলকুচি করুন। উপকার পাবেন।

আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৭৭: কথা কিছু কিছু

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৪৭: ও বন্ধু তুমি শুনতে কি পাও?

 

কুলকুচি

নুন জল দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁত ভালো থাকে এটা হয়তো অনেকেই জানেন। কিন্তু মুখে আলসার কমাতেও নুন জল দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। সমস্যা মিটতে পারে।
 

ত্রিফলা

কিছুটা উষ্ণ জল নিন। এতে প্রয়োজন মতো কিছুটা ত্রিফলা ভালো করে মেশান। এ বার সেই জল দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। নিয়মিত করলে ঠোঁটের ঘা কমবে।

তবে মনে রাখবেন, মুখের ঘা কোনও কোনও ক্ষেত্রে বড়সড় সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। হতে পারে ক্যানসারের লক্ষণও। বিশেষত যাঁরা ধূমপান করেন বা খৈনি খান, তাঁদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি। তাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে কিছু হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।


Skip to content