শনিবার ৯ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

ছোট থেকে বিশাখাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য ওর মাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। কখনও গল্প শুনিয়ে, কখনও দুধে বিশাখার পছন্দের খাবার মিশিয়ে মুখের সামনে ধরতে হয়েছে। কারণ, দুধ না খেলে তো দেহে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি দেখা দেবে। ফলে হাড়ও দুর্বল হয়ে যাবে। বিশাখা দুধ না খেলে কখনও কখনও ছানা, এমনকি পনির ও সন্দেশও খাওয়ানো হত। এদিকে বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে খাদ্যাভ্যাস নিয়ে মায়ের পরিবর্তন দেখে বিশাখা একেবারে অবাক!
বিশাখা এখন মুশকিলে পড়েছে। কারণ, বিশাখা এখন দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার বেশি খেতে দেখলেই ওর মা বকাঝকা করছেন। কারণ, ঋতুস্রাব শুরুর পরই বিশাখা ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ বা পিসিওএস-এ আক্রান্ত হয়। বিশাখার মা শ্রমণা বক্তব্য, ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ বা পিসিওএস-এর জন্য মেয়ের পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। তাই ওকে দুধ খাওয়াই বারণ করি। সমাজমাধ্যমে পুষ্টিবিদের নানান ভিডিয়ো দেখে তিনি এমন সিদ্ধন্ত নিয়েছেন। সেই সব পরামর্শে কাজও হচ্ছে।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬৫: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা— নোনা শাক ও নোনা ঝাঁজি

মুভি রিভিউ: ‘বাবলি’ স্বর্ণযুগের বাংলা ছবির মতো রোম্যান্সে ভরপুর

এদিকে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা এ বিষয়ে একমত যে, ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ (পিসিওএস) হয়েছে বলে এ তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ (পিসিওএস) একটি সাধারণ হরমোনজনিত শারীরিক সমস্যা। মূলত বয়ঃসন্ধির সময়েই এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। জীবনযাপন এবং রোজ দিনের খাদ্যাভ্যাসে বদল আনতে পারলেই এই ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ (পিসিওএস) এর প্রকোপ ঠেকিয়ে রাখা যায়। কিন্তু, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার বেশি খেলে কি সত্যিই ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ (পিসিওএস) এর সমস্যা বেড়ে যেতে পারে?
আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৯: ভারতের বিপ্লবী মেয়েরা এবং অন্তরে রবীন্দ্রনাথ

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৫২: পুলক রাখিতে নারি (কেল)

এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ সুতনুকা পালের বক্তব্য, “এ বিষয়ে খুব বেশি তথ্যপ্রমাণ নেই। তবে তা থাকলেও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন এ নিয়ে গবেষণাপত্র রয়েছে। দুধ বা দুগ্ধজাত খাবারে রয়েছে ল্যাক্টোজ। অন্যান্য ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’-এর মতো ওভারিতে থাকা সিস্টের বাড়বৃদ্ধির আরও একটি অন্যতম কারণ হতে পারে এই ‘ল্যাক্টোজ’। তাই বেশি দুধ, ছানা বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে সমস্যা হলেও হতে পারে।”
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৮: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—আমি রূপে তোমায় ভোলাব না…/৩

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৬৩: বেলুড়মঠে শ্রীমায়ের অভিনন্দন

 

দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার না খেলে কী ভাবে ক্যালশিয়ামের অভাব পূরণ হবে?

পুষ্টিবিদদের কথায়, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার একেবারে বন্ধ করার দরকার নেই। সুতনুকাও এ বিষয়ে একমত। পুষ্টিবিদ সুতনুকা জানান, “দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার না খেলে শরীরে নানা খনিজের অভাব দেখা দেবে। তাই দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার একেবারে বন্ধ না করে দিনে ১০০ থেকে ১৬০ মিলিগ্রাম খাবার খাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে দই খাওয়াও নিরাপদ, কোনও সমস্যা নেই।”


Skip to content