বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

রাম চলেছেন নির্ধারিত বনবাস যাপনে। পথে গঙ্গাতীরে রাত্রি ভোর হল। সূর্যোদয় সমাগত। কোকিলের কলকাকলিপূর্ণ ভোরে, বনভূমি কেকাধ্বনিমুখর, রামচন্দ্র লক্ষ্মণকে বললেন, তরাম জাহ্নবীং সৌম্য শীঘ্রগাং সাগরঙ্গমাম্। হে সৌম্য, চল সাগরের দিকে দ্রুত ধাবমানা জাহ্নবী পার হই। জ্যেষ্ঠ রামের কথানুসারে সুমিত্রানন্দন লক্ষ্মণ গুহ ও সারথিকে ডেকে আনলেন।

স্থপিতি গুহর নির্দেশে একটি শক্তপোক্ত, সুন্দর, শুভ, অনায়াসে পারাপারের উপযুক্ত, সঙ্গে একজন দক্ষ কর্ণধার, এমন নৌকা নিয়ে উপস্থিত হলেন অমাত্যরা। গুহর অনুরোধে, রাম, খড়্গ ও তূণীর যথাযথভাবে বেঁধে নিলেন। গঙ্গা উত্তরণের উদ্দেশ্যে সীতা ও লক্ষ্মণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেলেন। সূত সুমন্ত্র করজোড়ে সামনে এসে দাঁড়ালেন—এখন তাঁর কী করণীয়? কিমহং করবাণীতি রাম ডানহাতে সুমন্ত্রকে স্পর্শ করে তাঁকে রাজা দশরথের কাছে সাবধানে ফিরে যাবার নির্দেশ দিলেন। রামের জন্য যা কিছু করণীয় সব করেছেন সুমন্ত্র। এখন আর রথ নয়,পায়ে হেঁটেই মহারণ্যে প্রবেশ করবেন তিনজনে। মর্মাহত সুমন্ত্র, স্বীকার করলেন, নিয়তির অমোঘ বিধানে রামের মতো ব্যক্তি সাধারণের মতো ভাই ও স্ত্রীকে নিয়ে বনবাসী হয়েছেন। ভাগ্যের বিধান অলঙ্ঘনীয়। ব্রহ্মচর্য, বেদপাঠ, মৃদুতা ও সরলতার কোনও ফলই নেই। রাম, পত্নী ও ভাইয়ের সঙ্গে বনবাস বরণ করে ত্রিলোকজয়ের গৌরব অর্জন করবেন ঠিকই। কাতরকণ্ঠে সুমন্ত্র জানালেন, রামের সাহচর্যবঞ্চিত হয়ে তাঁরা কিন্তু মৃতপ্রায় হবেন কারণ পাপিষ্ঠা রানি কৈকেয়ীর অধীনে তাঁদের জীবনে রয়েছে শুধু দুঃখভোগ। অচিরেই দূর প্রবাসগামী রামকে দেখতে দেখতে সুমন্ত্রর চোখের জল আর বাধা মানল না। কোনও মতে অশ্রুসংবরণ করে আচমন করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে রাম তাঁকে মধুরকণ্ঠে বললেন, ইক্ষ্বাকুকুলে সুমন্ত্রের তুল্য শুভাকাঙ্খী আর কেউ নেই। তাই রাজা দশরথের শোকে সান্ত্বনার প্রলেপ দিতে পারেন তিনিই।
রাম এই সব বলছেন তার একমাত্র কারণ, বৃদ্ধ রাজা শোকার্ত। মন ভেঙে পড়েছে তাঁর, তার পরে আছে কামনার বশবর্তী হওয়ার দুর্বহ ভার। তাই রামের অনুরোধ,কৈকেয়ীর প্রিয়সাধনের জন্যে মহান রাজা যা নির্দেশ দেবেন, সুমন্ত্র যেন অবিচলিতভাবে অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করেন। রাজারা সেইভাবেই রাজ্য শাসন করেন যাতে কোনও কাজেই তাঁদের মনের গতি প্রতিকূলতার সম্মুখীন না হয়। তাই সফল রাজা দশরথ যেন কোনও অনাকাঙ্খিত ঘটনার ফলভোগী না হন, শোকে ম্রিয়মাণ না হন, সুমন্ত্র এমন ব্যবস্থাই যেন করেন। যে রাজা দুঃখের মুখ দেখেননি কখনও সেই রাজাকে

সুমন্ত্র রামের বার্তা জানাবেন, ন চাহমনুশোচামি লক্ষ্মণো ন চ শোচতি। অযোধ্যায়াশ্চ্যুতাশ্চেতি বনে বৎস্যামহেতি চ।। অযোধ্যা থেকে নির্বাসিত হয়ে, আমার ও লক্ষ্মণের, বনবাসের দরুণ কোনও অনুশোচনা নেই। চোদ্দ বছর অতিক্রান্ত হলে আমায়, লক্ষ্মণ ও সীতাকে তিনি সত্বর দেখতে পাবেন। চতুর্দশসু বর্ষেষু নিবৃত্তেষু পুনঃ পুনঃ। লক্ষ্মণং মাঞ্চ সীতাঞ্চ দ্রক্ষ্যসে ক্ষিপ্রমাগতাম্।।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৭: পাঞ্চালদেশে যাত্রাপথে পাণ্ডবদের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় কিসের ইঙ্গিত?

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫৩: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—খলসি ও করঞ্জা

রাম প্রণাম জানালেন জননী কৌশল্যাসহ অন্যান্য বিমাতাদের। লক্ষ্মণ ও সীতার ইচ্ছা অনুযায়ী, সম্মানীয়া মাতাদের,একই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে, দু’জনের অভিবাদন ও সুস্থতার সংবাদ জানাতে অনুরোধ জানালেন রাম। সুমন্ত্র যেন রাজাকে এটাও বলেন, রাজা দশরথ যেন অচিরেই ভরতকে মাতুলালয় থেকে আনিয়ে রাজপদে অভিষিক্ত করেন। ভরতকে স্নেহালিঙ্গনে বেঁধে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করলে, তাঁদের বিচ্ছেদ হয়তো রাজাকে আর ভারাক্রান্ত করবে না। ভরতঞ্চ পরিষ্বজ্য যৌবরাজ্যেঽভিষিচ্য চ। অস্মৎসন্তাপজং দুঃখং ন ত্বামভিভবিষ্যতি।।

সুমন্ত্রকে আরও বললেন, ভরতও যেন রামের উপদেশ মনে রাখেন,যেমন রাজা দশরথের প্রতি তাঁর ব্যবহার, তেমন মায়েদের প্রতিও ব্যবহারবিষয়ে যেন সমদর্শী হন তিনি। ভরতজননী কৈকেয়ীর সঙ্গে একযোগে দেবী কৌশল্যা ও সুমিত্রা দেবীও যেন সমানভাবে পূজিতা হন। যুবরাজপদে অধিষ্ঠিত হয়ে রাজার অভীপ্সিত কাজ রূপায়িত করলে ইহলোক ও পরলোক উভয়লোকেই সুখী হতে পারবে সে।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৭০: পাভেল কোথায়?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৯: রসিক স্বভাব মা সারদা

রামের উপদেশ অনুসারে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ আত্মস্থ করে সুমন্ত্র স্নেহভরে বললেন, তিনি যা বলবেন,সেটি তাঁর স্নেহব্যাকুল চিত্তের আবেগের প্রকাশ। সুমন্ত্র রীতি বহির্ভূতভাবে শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন, একমাত্র রামভক্তির কারণে। ত্বং ক্ষন্তুমর্হসি। সেটি তোমার ক্ষমার যোগ্য। বাছা, পুত্রহীনা মায়ের মতো রামবিহীন তিনি কীভাবে সেই নগরে প্রবেশ করবেন? পুরবাসীরা রামসহ রথটি আগে দেখেছেন, এখন রামবিহীন রথটি দেখে তাঁদের মন ভেঙ্গে খানখান হবে যে। যুদ্ধে যোদ্ধাবিহীন সারথিযুক্ত রথ দেখে যেমন সৈন্যরা হতাশ হয় তেমনই সওয়ারহীন এই রথটিকে দেখে দীনতায় আক্রান্ত হবেন পুরবাসীরা। সুমন্ত্র জানালেন, আপনি সুদূরবর্তী হলেও প্রজাদের মানসদৃষ্টিতে আপনি একান্তই কাছে রয়েছেন। সর্বদা আপনার চিন্তায় রত তাঁরা, শূন্যরথ দেখে যে আহার পরিত্যাগ করবেই। দূরেঽপি নিবসন্তং ত্বাং মানসেনাগ্রতঃ স্থিতম্। চিন্তয়ন্ত্যোঽদ্য নূনং ত্বাং নিরাহারাঃ কৃতাঃ প্রজাঃ।। প্রবাসগমনের সময়ে, প্রজাদের সেই ব্যাকুল আর্তনাদ রামের স্মরণে আছে নিশ্চয়।

এ বারে শূন্যরথ সুমন্ত্রকে দেখে তাঁদের আর্ত চিৎকার দ্বিগুণ হবে। দেবী কৌশল্যাকেই বা তিনি কি কৈফিয়ৎ দেবেন। মাতুলালয়ে রেখে এলাম পুত্রকে, আর দুঃখ নয়—এমন মিথ্যে বলার অভ্যাস যে তাঁর ধাতে নেই। অপ্রিয় সত্য বলি কী করে? নীতোঽসৌ মাতুলকুলং সন্তাপং মা কৃথা ইতি।। অসত্যমপি নৈবাহং ব্রূয়াৎ বচনমীদৃশম্। কথমপ্রিয়মেবাহং ব্রূয়াৎ সত্যমিদং বচঃ।। এই রথের ঘোড়াগুলি এ যাবৎ কাল রামের নির্দেশেই রাম ও তাঁর বন্ধুবর্গকে বহন করেছে। কীভাবে সেই সব সওয়ারীহীন রথ বহন করবে ঘোড়াগুলি? *তন্ন শক্ষ্যাম্যহং গন্তুমযোধ্যাং ত্বদৃতেঽনঘ।* হে নিষ্পাপ, আমি আপনাকে ছেড়ে অযোধ্যায় ফিরে যেতে পারব না। সুমন্ত্র রামের বনবাসের সহযাত্রী হতে চাইলেন, রামের অনুমতি প্রার্থনা করলেন তিনি। রামের প্রত্যাখ্যান তিনি সইতে পারবেন না। রাম, যদি তাঁকে পরিত্যাগ করেন তাহলে তিনি রথ-সহ আগুনে প্রবেশ করবেন। বনবাসজীবনে তিনি রথ নিয়ে রামের সব বিঘ্ন প্রতিহত করবেন। রামের জন্যে রথ চালনা করে যে সুখ পেয়েছেন সুমন্ত্র বনবাসেও একই সুখের প্রত্যাশী। তাই প্রসন্নমনে রাম একবারটি বলুন, প্রীত্যাভিহিতমাচ্ছামি ভব মে প্রত্যনন্তরঃ। তুমি আমার সহযাত্রী হও।
আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৪৬: রাজার নিয়ন্ত্রণহীন অনুচরেদের কুকর্মের দায় রাজাকেই নিতে হয়

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩৪: পুণ্য আষাঢ়ের প্রথম দিবসে

এই ঘোড়াগুলিও অরণ্যে রামের পরিচর্যা করে পরম উদ্দেশ্য সাধন করবে।নতমস্তকে রামের শুশ্রূষা করতে ইচ্ছুক সুমন্ত্র। তাই অযোধ্যা বা সুরলোকও কাম্য নয় তাঁর। দুষ্কৃতি মানুষের যেমন দেবলোকে প্রবেশাধিকার নেই তেমনই রাম ব্যতীত, সুমন্ত্র, অযোধ্যায় প্রবেশে অক্ষম। বনবাসান্তে এই রথে করেই রামকে অযোধ্যায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি। তাঁর অরণ্যবাসের চোদ্দ বছর পলকে চতুর্দশ মুহূর্তে পরিণত হবে।এর অন্যথা হলে চোদ্দ বছর শতবছর বলে মনে হবে তাঁর কাছে। হে সেবকবৎসল, প্রভুপুত্র যে পথে চলেছেন আমিও সেই পথের যাত্রী। তাই এই ভক্ত অনুগত সেবককে প্রভুর যোগ্য মর্যাদায় পরিত্যাগ করবেন না। ভৃত্যবৎসল তিষ্ঠন্তং ভর্ত্তৃপুত্রগতে পথি। ভক্তং ভৃত্যং স্থিতং স্থিত্যা ন মাং ত্বং হাতুমর্হসি।। সুমন্ত্র দীনভাবে এমন নানা কথাচ্ছলে রামকে বারবার অনুনয়বিনয়ে প্রার্থনা জানাতে লাগলেন।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯২: মহর্ষিদেব নাতজামাইকে দিয়েছিলেন সোনার কলম

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৭: পাঞ্চালদেশে যাত্রাপথে পাণ্ডবদের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় কিসের ইঙ্গিত?

সেবকদের প্রতি যাঁর অপার করুণা সেই রাম,স্বীকার করলেন, তিনি জানেন তাঁর প্রতি প্রভুবৎসল সুমন্ত্র পরম শ্রদ্ধাবান। কিন্তু এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি সুমন্ত্রকে অযোধ্যায় প্রেরণ করছেন। তিনি বললেন, কনিষ্ঠা জননী কৈকেয়ী তোমাক ফিরে আসতে দেখে আশ্বস্ত হবেন যে রাম সত্যিই বনে গমন করেছেন। নগরীং ত্বাং গতং দৃষ্ট্বা জননী মে যবীয়সী। কৈকেয়ী প্রত্যয়ং গচ্ছেদিতি রামো বনং গতঃ।। যদি এ বিষয়ে দেবী কৈকেয়ী সন্তুষ্ট হন তবে ধার্মিক রাজা দশরথের মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। রাম অকুণ্ঠিতভাবে ঘোষণা করলেন তাঁর প্রথম মনোগত ইচ্ছা তাঁর মধ্যমা মাতা কৈকেয়ী যেন তাঁর স্বপুত্র ভরতের দ্বারা সুরক্ষিত সমৃদ্ধ রাজ্য লাভ করেন। প্রভু রাম আদেশ করলেন প্রিয় সেবক সুমন্ত্রকে, রামের এবং রাজা দশরথের প্রিয় কাজটি সম্পাদনের লক্ষ্যে সুমন্ত্র দ্রুত অযোধ্যায় ফিরে যান এবং রামের নির্দেশানুসারে অবিকল সেই বক্তব্যই সেখানে প্রকাশ করুন। মম প্রিয়ার্থং রাজ্ঞশ্চ সুমন্ত্র ত্বং পুরীং ব্রজ। সন্দিষ্টশ্চাপি যানর্থাংস্তাংস্তান্ ব্রূয়াস্তথা তথা।।

ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

রাম যদি হন আনন্দ তবে জোর করে আনন্দ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, এমন মানুষের প্রতিনিধি যেন সুমন্ত্র।আনন্দেই নিহিত আছে জাগতিক পরমার্থিক সবরকম সুখ। সেই আনন্দ নির্বাসিত হলে মানুষ নৈরাশ্যের অতল গহ্বরে তলিয়ে যায়,সেখান থেকে উদ্ধার দুঃসাধ্যপ্রায়।অশ্বশক্তিতে ছুটছে সময়।তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছে মন। মন অসীম রহস্যের আধার। রথকে লাগাম পড়ানো অসম্ভব।তবে মনের গতিময়তায় সেই সময়ের সঙ্গেও ছুটে চলা সম্ভব। সুমন্ত্র সেই ভেঙ্গে পড়া মানুষের দলের একজন। তিনি কিন্তু আনন্দের সান্নিধ্যে কাটিয়ে দিতে পারেন সুদীর্ঘ সময় এক পলকে। মানুষের সহনশীলতার নিক্তিতে সুখদুঃখের আবহমান চক্রের উত্থানপতনে, দুঃখে পতনের ইতিহাস হয়তো প্রলম্বিত। কে চায় না সুখসাগরে ডুব দিয়ে ভাসমান গ্লানি, অতৃপ্তি, বেদনা ভুলে থাকতে? তাই আনন্দের নির্বাসনে দিশাহারা হয়েছে অযোধ্যার প্রজারা। সুখের সহবাসে যেতে চাইছেন সুমন্ত্র।

প্রত্যাখ্যানের বেদনায় জীবন পণ করেছেন যেমনটি করে থাকেন নৈরাশ্যের আঁধারে ডুবে থাকা মানবমন। নিরানন্দ রামহীন নিরানন্দ জীবনে বড় বিপন্নতা,অনিশ্চয়তার শঙ্কা, আরও কোন দুর্বিপাকের ভয়, জটিলতা। রাম সাহস যুগিয়েছেন সুমন্ত্রকে, যেমন শত দুঃখের অভিঘাত সয়ে জ্বলজ্বল করে আশার দীপশিখা, মানুষের সদর্থক ইতিবাচক মানসিক শক্তি। সেই শক্তি সুদীর্ঘ বছর মাসের হিসেবকে তুড়ি মেরে নৈরাশ্যের কালকে সংক্ষিপ্ত করে তোলে যে উন্মাদনায় সেই শক্তিই হল আশাপ্রদ আনন্দ।আনন্দের প্রতিমূর্তি রাম সুমন্ত্রকে সেই শক্তিতে উজ্জীবিত করতে প্রয়াসী হয়েছেন। রাজার নিরানন্দময় বার্ধক্যের অন্ধকারে আশার আলো সঞ্চারিত করতে চেয়েছেন তাঁর নির্দেশগুলির মধ্যে দিয়ে। সুখ আনন্দের অভাব সাময়িক আবার তা ফিরে আসে সময়ের আবর্তনে। চির আনন্দময় রাম হতাশার গভীরে ডুবে থাকা দীন হীন মানসিকতায় আশার প্রদীপটি তুলে ধরেছেন, সেই আলোয় পথ খুঁজে পাবেন হয়তো নিরাশার বালুচরে পথ হারানো কোন পথিক, সুমন্ত্রর মতো।—চলবে।
* মহাকাব্যের কথকতা (Epics monologues of a layman): পাঞ্চালী মুখোপাধ্যায় (Panchali Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা, সংস্কৃত বিভাগ, যোগমায়া দেবী কলেজে।

Skip to content