
ছবি: প্রতীকী।
সে অনেক কাল আগের কথা। বারাণসীর রাজা ব্রহ্মদত্তের দুটি পুত্র ছিল। রাজা জ্যেষ্ঠপুত্রকে দিলেন ঔপরাজ্য, কনিষ্ঠকে সৈন্যাপত্য। বড় ছেলে উপরাজ হয়ে, ছোট ছেলে সেনাপতি হয়ে রাজ্যশাসনে পিতার সহায় হল। কালক্রমে রাজার প্রয়াণ ঘটলে অমাত্যগণ জ্যেষ্ঠপুত্রকে রাজ্যে অভিষিক্ত করতে চাইলেন। কিন্তু তিনি রাজপদের অভিলাষী নন, ঔপরাজ্য-ও ত্যাগ করে তিনি প্রত্যন্তদেশে এক শ্রেষ্ঠীর অধীনস্থ হয়ে জীবিকা গ্রহণ করলেন। রাজভোগের পরম সুখে তাঁর রুচি ছিল না। অগত্যা, কনিষ্ঠপুত্রটি রাজপদ লাভ করল।
কালক্রমে প্রত্যন্তবাসীরা জানতে পারল জ্যেষ্ঠকুমারের পরিচয়। তারা রাজকুমারকে উপঢৌকন দিতে থাকল, নিবৃত্ত করল জীবিকা অর্জনের কষ্ট থেকে। একদিন রাজকর্মচারীরা খাজনা নিতে এল। শ্রেষ্ঠী তখন আবেদন জানালেন রাজার কাছে পত্র পাঠিয়ে কর প্রত্যাহারের জন্য, কেননা তাঁরাই জ্যেষ্ঠকুমারের ভরণপোষণ করছেন। তিনিও ভাইকে পত্র দিলেন। রাজা সানন্দে কর প্রত্যাহার করলেন। ক্রমে ক্রমে আরও নগরবাসী জনপদবাসী দলে দলে এসে করভার লাঘবের আবেদন জানালো। তারা এখন থেকে জ্যেষ্ঠকুমারকেই কর দেবে এমনটাই তাদের সিদ্ধান্ত। রাজা তাও মঞ্জুর করলেন। ক্রমে ক্রমে জ্যেষ্ঠপুত্রের আর্থিক লাভ ও সম্মান বৃদ্ধি পেতে থাকল।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১০৭: লুকাবো বলি, লুকাবো কোথায়?

গল্পবৃক্ষ, পর্ব-২০: সঙ্কল্পজাতক
বৃদ্ধি পেতে থাকল বিষয়তৃষ্ণা।
ক্রমে ক্রমে কুমার জনপদের অধিকার চাইলেন, চাইলেন ঔপরাজ্য। রাজা তাঁর অভীষ্ট পূর্ণ করলেন। ক্রমে তিনি তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। রাজ্যলাভের আকাঙ্ক্ষায় তিনি সদলে রাজধানীর সমীপে এসে রাজাকে পত্র পাঠালেন। রাজ্য চাই, নচেৎ যুদ্ধ অনিবার্য।
রাজা জ্যেষ্ঠকুমারের মূঢ়তায় হতবাক হলেন। যুদ্ধে এই অবিমৃষ্যকারীর মৃত্যু হলে রাজার নিন্দা হতে পারে, তার চেয়ে রাজ্যত্যাগ শ্রেয়ঃ। এই ভেবে রাজা জ্যেষ্ঠকে রাজ্য দান করলেন। জ্যেষ্ঠ-ও কনিষ্ঠকে ঔপরাজ্য দিলেন। কিন্তু রাজ্যলাভেও তাঁর আকাঙ্ক্ষা কমল না। এখন তিনি আরও দুই তিনটি রাজ্য অধিকারের প্রয়াসী হলেন, তবু তাঁর অনিঃশেষ আকাঙ্ক্ষার তৃপ্তি হয় না।
এইখানে কাহিনীর একটি স্তর সম্পূর্ণ হল। দেখা যাচ্ছে যিনি বিগতস্পৃহ ছিলেন, কালক্রমে তিনিই ভোগলিপ্সু, যিনি রাজা, তিনি আবার ভোগাসক্ত নন। সম্ভবত রাজসুখের বাইরে বেরিয়ে এসে বীতরাগ জ্যেষ্ঠকুমার রাজভোগের মোহকে উপলব্ধি করেছেন এবং আসক্ত হয়েছেন।
ক্রমে ক্রমে কুমার জনপদের অধিকার চাইলেন, চাইলেন ঔপরাজ্য। রাজা তাঁর অভীষ্ট পূর্ণ করলেন। ক্রমে তিনি তাতেও সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। রাজ্যলাভের আকাঙ্ক্ষায় তিনি সদলে রাজধানীর সমীপে এসে রাজাকে পত্র পাঠালেন। রাজ্য চাই, নচেৎ যুদ্ধ অনিবার্য।
রাজা জ্যেষ্ঠকুমারের মূঢ়তায় হতবাক হলেন। যুদ্ধে এই অবিমৃষ্যকারীর মৃত্যু হলে রাজার নিন্দা হতে পারে, তার চেয়ে রাজ্যত্যাগ শ্রেয়ঃ। এই ভেবে রাজা জ্যেষ্ঠকে রাজ্য দান করলেন। জ্যেষ্ঠ-ও কনিষ্ঠকে ঔপরাজ্য দিলেন। কিন্তু রাজ্যলাভেও তাঁর আকাঙ্ক্ষা কমল না। এখন তিনি আরও দুই তিনটি রাজ্য অধিকারের প্রয়াসী হলেন, তবু তাঁর অনিঃশেষ আকাঙ্ক্ষার তৃপ্তি হয় না।
এইখানে কাহিনীর একটি স্তর সম্পূর্ণ হল। দেখা যাচ্ছে যিনি বিগতস্পৃহ ছিলেন, কালক্রমে তিনিই ভোগলিপ্সু, যিনি রাজা, তিনি আবার ভোগাসক্ত নন। সম্ভবত রাজসুখের বাইরে বেরিয়ে এসে বীতরাগ জ্যেষ্ঠকুমার রাজভোগের মোহকে উপলব্ধি করেছেন এবং আসক্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫০: রোজই দেখি আলাস্কা পর্বতশৃঙ্গের বাঁ দিকের চূড়া থেকে সূর্য উঠতে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৮৯: উদ্বোধনের ঠাকুরঘরে মা সারদার সঙ্গে স্বামী অরূপানন্দের কথোপকথন
এ বার কাহিনির দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করা যাক।
দেবরাজ ইন্দ্র জগতের ভালোমন্দ পর্যবেক্ষণ করতে করতে দেখতে পেলেন বারাণসীরাজ অত্যন্ত দুরাকাঙ্ক্ষাপররায়ণ। ইন্দ্রদেব এই মূঢ়চেতাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য উপায়কুশল বালকের ছদ্মবেশে উপস্থিত হলেন। তিনি গোপনে রাজাকে জানালেন যে, তিনটি সমৃদ্ধ, জনবহুল ও শক্তিশালী রাজ্যের সন্ধান তিনি দিতে পারেন, রাজা ইচ্ছুক হলে অনতিবিলম্বে তা অধিগ্রহণ করতে যাত্রা করতে পারেন। রাজা সম্মত হলেন। অমাত্যদের আহ্বান করে অতিসত্বর আয়োজনের নির্দেশ দিলেন। নগরে ভেরী বাজিয়ে ঘোষণা করতে হবে, সেনাদের সুসজ্জিত করতে হবে, কিন্তু রাজা কি সেই আগন্তুক বালককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তিনি কে? নিবাস কোথায়? এতে তাঁর স্বার্থ কি? অমাত্যদের জিজ্ঞাসার সদুত্তর দিতে পারলেন না মহারাজ। সাকিন-ঠিকানা রাখা হয়নি বটে, তবে খুঁজে দেখা হোক, এই আদেশ দিলেন রাজা। সন্ধান অবিলম্বে ব্যর্থ হল। এই সংবাদে রাজা বিষণ্ণ, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। একটা বড় সুযোগ গেল তো হাতছাড়া হয়ে! মহাযশ অর্জনের এমন সুবিধা, তিন-তিনটি নগরের একাধিপত্যের সুযোগ চলে গেল। বুঝি ক্রুদ্ধ হয়ে সেই বালক চলে গেল। তাকে সন্তুষ্ট করে পাথেয় দেওয়া হল না যে। ভাবতে ভাবতে রাজার জ্বর এল, পেটগরম হল, অজীর্ণ হল, আমাশয়ে ধরল। বৈদ্যরা এই রোগের চিকিৎসা করতে পারলেন না। রাজা শয্যালীন হলেন। নগরে রটে গেল এই সংবাদ।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শেষে দেখা যাচ্ছে, রাজার দুরপনেয় আকাঙ্ক্ষা আর স্বাভাবিক নেই, মরীচিকাগ্রস্ত মানুষের যেমন উন্মত্ততা জন্মায়, আকাঙ্ক্ষা একদা বীতরাগ নিস্পৃহ এক পুরুষকে এমনই প্রমত্ত ও হাস্যাস্পদ মূঢ়তে পরিণত করেছে। এবার তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়।
দেবরাজ ইন্দ্র জগতের ভালোমন্দ পর্যবেক্ষণ করতে করতে দেখতে পেলেন বারাণসীরাজ অত্যন্ত দুরাকাঙ্ক্ষাপররায়ণ। ইন্দ্রদেব এই মূঢ়চেতাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য উপায়কুশল বালকের ছদ্মবেশে উপস্থিত হলেন। তিনি গোপনে রাজাকে জানালেন যে, তিনটি সমৃদ্ধ, জনবহুল ও শক্তিশালী রাজ্যের সন্ধান তিনি দিতে পারেন, রাজা ইচ্ছুক হলে অনতিবিলম্বে তা অধিগ্রহণ করতে যাত্রা করতে পারেন। রাজা সম্মত হলেন। অমাত্যদের আহ্বান করে অতিসত্বর আয়োজনের নির্দেশ দিলেন। নগরে ভেরী বাজিয়ে ঘোষণা করতে হবে, সেনাদের সুসজ্জিত করতে হবে, কিন্তু রাজা কি সেই আগন্তুক বালককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তিনি কে? নিবাস কোথায়? এতে তাঁর স্বার্থ কি? অমাত্যদের জিজ্ঞাসার সদুত্তর দিতে পারলেন না মহারাজ। সাকিন-ঠিকানা রাখা হয়নি বটে, তবে খুঁজে দেখা হোক, এই আদেশ দিলেন রাজা। সন্ধান অবিলম্বে ব্যর্থ হল। এই সংবাদে রাজা বিষণ্ণ, অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। একটা বড় সুযোগ গেল তো হাতছাড়া হয়ে! মহাযশ অর্জনের এমন সুবিধা, তিন-তিনটি নগরের একাধিপত্যের সুযোগ চলে গেল। বুঝি ক্রুদ্ধ হয়ে সেই বালক চলে গেল। তাকে সন্তুষ্ট করে পাথেয় দেওয়া হল না যে। ভাবতে ভাবতে রাজার জ্বর এল, পেটগরম হল, অজীর্ণ হল, আমাশয়ে ধরল। বৈদ্যরা এই রোগের চিকিৎসা করতে পারলেন না। রাজা শয্যালীন হলেন। নগরে রটে গেল এই সংবাদ।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শেষে দেখা যাচ্ছে, রাজার দুরপনেয় আকাঙ্ক্ষা আর স্বাভাবিক নেই, মরীচিকাগ্রস্ত মানুষের যেমন উন্মত্ততা জন্মায়, আকাঙ্ক্ষা একদা বীতরাগ নিস্পৃহ এক পুরুষকে এমনই প্রমত্ত ও হাস্যাস্পদ মূঢ়তে পরিণত করেছে। এবার তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯২: দুর্গা টুনটুনি

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৮: দুর্গম গিরি কান্তার ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’
বোধিসত্ত্ব সেই জন্মে বারাণসীতে জন্ম নিয়েছেন, তক্ষশিলায় পাঠ সম্পন্ন করে সর্ববিদ্যাবিশারদ হয়ে ফিরে এসেছেন পিতৃগৃহে। তিনি রাজার চিকিৎসায় আগ্রহী হলেন। রাজা সংবাদ পেলেন যে, এক বালক এসেছে চিকিৎসা করতে। রাজা মনে মনে ভাবলেন, কত বড় বড় বৈদ্য বিফল হলো, আর এই বাচ্ছাছেলে বলে কীনা… যাও, কিছু পাথেয় দিয়ে ওকে বিদেয় করো। হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে… গতবারের বালকটি পাথেয় পায়নি বলেই বুঝি রাজার এমন দুর্গতি, এবারের বালকটিকে তাই পাথেয় দিতে চাইলেন রাজা। কিন্তু বালক জানায় যে, বৈদ্যবেতন সে চায় না, ঔষধের মূল্যটি দিতে হবে। তখন তার ডাক পড়ল। বোধিসত্ত্ব রাজাকে প্রণাম করে অভয় দিয়ে জানতে চাইলেন, রোগের কারণ কি? রাজা ক্রুদ্ধ হয়ে উত্তর করেন, অতশত কারণে কি দরকার বাপু! চিকিৎসা করতে এসেছো, সেটাই করো। কিন্তু তা হয় কেমন করে? ব্যাধির কারণ, বৃত্তান্ত জেনে বৈদ্য ঔষধ দেন। এখানেও তা-ই হবে। তখন রাজা জানান যে, তাঁর অতৃপ্ত বিষয়তৃষ্ণা ও তজ্জনিত শোক এই রোগের কারণ। বিশদে বললেন সবটা। বালক বলল,
—শোক করলে কি মহারাজ নগরগুলি পাবেন?
—না, পাবো না।
—তবে শোক করেন কেন? চেতন ও জড় উভয়েই একদা বিনষ্ট হয়, শরীর – আকার হারায়। চারটি নগর পেতে পারেন, কিন্তু একসঙ্গে চারটি পাত্রে ভোজন, চারটি শয্যায় শয়ন, চারটি বস্ত্র পরিধান সম্ভব? না তো? তবে বিষয়তৃষ্ণার বশীভূত হলে অপায়চতুষ্টয় ব্যতিরিক্ত আর কিছুই প্রাপ্য নয় যে! দেখতে পান না যে শৃঙ্গযুক্ত গবাদি পশুর শৃঙ্গগুলি বেড়েই চলে। কাম, বাসনা, আকাঙ্ক্ষা তেমনই। একবার তা সিদ্ধ হলে বারংবার মনে উদয় হতে থাকে। চর্মকার যেমন পাদুকা নির্মাণের কালে অতিরিক্ত চর্ম ছেঁটে দেয়, তেমনই অতিরিক্ত বাসনা পরিত্যজ্য। একটি বাসনার ত্যাগে সুখলাভ, সর্ববাসনাত্যাগে সদাসুখলাভ। তৃপ্তি আসবে প্রজ্ঞাবলে, উপলব্ধি জাগিয়ে তুলবে পরম চেতনা।
—শোক করলে কি মহারাজ নগরগুলি পাবেন?
—না, পাবো না।
—তবে শোক করেন কেন? চেতন ও জড় উভয়েই একদা বিনষ্ট হয়, শরীর – আকার হারায়। চারটি নগর পেতে পারেন, কিন্তু একসঙ্গে চারটি পাত্রে ভোজন, চারটি শয্যায় শয়ন, চারটি বস্ত্র পরিধান সম্ভব? না তো? তবে বিষয়তৃষ্ণার বশীভূত হলে অপায়চতুষ্টয় ব্যতিরিক্ত আর কিছুই প্রাপ্য নয় যে! দেখতে পান না যে শৃঙ্গযুক্ত গবাদি পশুর শৃঙ্গগুলি বেড়েই চলে। কাম, বাসনা, আকাঙ্ক্ষা তেমনই। একবার তা সিদ্ধ হলে বারংবার মনে উদয় হতে থাকে। চর্মকার যেমন পাদুকা নির্মাণের কালে অতিরিক্ত চর্ম ছেঁটে দেয়, তেমনই অতিরিক্ত বাসনা পরিত্যজ্য। একটি বাসনার ত্যাগে সুখলাভ, সর্ববাসনাত্যাগে সদাসুখলাভ। তৃপ্তি আসবে প্রজ্ঞাবলে, উপলব্ধি জাগিয়ে তুলবে পরম চেতনা।
আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৯: বেশি ঘুম শরীরের পক্ষে ভালো?

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০৫: বনবাসে অর্জুনের অসংযত জীবন, আশ্রয়দাতার বিশ্বাসভঙ্গ কি অনুসরণযোগ্য আচরণ?
এই উপদেশে রাজার জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হল। জ্ঞানৌষধিতে রাজার রোগ উপশম হল। এই ঔষধি অর্থের মূল্যে লাভ করা যায় না। এই ঔষধির সফল প্রয়োগে রোগী ও বৈদ্য উভয়েই আকাঙ্ক্ষামুক্ত হন, তৃষ্ণা অপগত হয়।
রাজার সেই কামনাতাড়িত আগ্রাসী মন নিয়ে আজকের দুনিয়া ছুটে চলেছে। মোহের বশবর্তী হয়ে মিত্রকে শত্রু, শত্রুকে পরম বন্ধু, অকরণীয়কে অবশ্য-কর্তব্য, কর্তব্যকে “দূর ছাই! ভাল্লাগেনা” মনে হয়। তখন অজ্ঞানতিমিরে জ্ঞানাঞ্জনশলাকা নিয়ে এসে দাঁড়ায় জাতকমালার এই কাহিনি।
রাজার সেই কামনাতাড়িত আগ্রাসী মন নিয়ে আজকের দুনিয়া ছুটে চলেছে। মোহের বশবর্তী হয়ে মিত্রকে শত্রু, শত্রুকে পরম বন্ধু, অকরণীয়কে অবশ্য-কর্তব্য, কর্তব্যকে “দূর ছাই! ভাল্লাগেনা” মনে হয়। তখন অজ্ঞানতিমিরে জ্ঞানাঞ্জনশলাকা নিয়ে এসে দাঁড়ায় জাতকমালার এই কাহিনি।
* ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।