
কবিগুরু।
ক্যালেন্ডারে সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার। আজও রবিবার।
রবি অবসরের, আনন্দের, উদযাপনের। অনন্ত কর্মের মাঝে প্রাণের আরাম মনের আনন্দ আত্মার শান্তির দিন কি রবিবার? নাকি প্রতিদিনই রবিবার? সে কি মা তোমার মতোই গরিব ঘরের মেয়ে? নাকি “তফাত্ যাও, সব ঝুট হ্যায়” বলে বিষম তাড়া খাওয়া এক অমল আলো? সে কি নীল আকাশ আর মাঠের ঝোপেঝাপে পথভোলা ছুটির দিন? নাকি মাটির কোন গভীর কোণে অতল কক্ষের গুপ্তধন? রবিবার কি ঐশ্বর্যের বিষম ঝলকে শ্বাসটুকুও আটকা পড়ে গেলে দখিনা বায় হয়ে ছুটে আসে? এসে উতল হাওয়ায় অচলায়তনটুকু ভেঙে দিয়ে কাছের সুরে দূরের ধ্বনি জাগিয়ে ঘরে-বাইরে, তাসের দেশে নব আনন্দের মঙ্গলালোক জ্বালে?
রবি অবসরের, আনন্দের, উদযাপনের। অনন্ত কর্মের মাঝে প্রাণের আরাম মনের আনন্দ আত্মার শান্তির দিন কি রবিবার? নাকি প্রতিদিনই রবিবার? সে কি মা তোমার মতোই গরিব ঘরের মেয়ে? নাকি “তফাত্ যাও, সব ঝুট হ্যায়” বলে বিষম তাড়া খাওয়া এক অমল আলো? সে কি নীল আকাশ আর মাঠের ঝোপেঝাপে পথভোলা ছুটির দিন? নাকি মাটির কোন গভীর কোণে অতল কক্ষের গুপ্তধন? রবিবার কি ঐশ্বর্যের বিষম ঝলকে শ্বাসটুকুও আটকা পড়ে গেলে দখিনা বায় হয়ে ছুটে আসে? এসে উতল হাওয়ায় অচলায়তনটুকু ভেঙে দিয়ে কাছের সুরে দূরের ধ্বনি জাগিয়ে ঘরে-বাইরে, তাসের দেশে নব আনন্দের মঙ্গলালোক জ্বালে?
রবিবার নতুন যৌবনের দূত হয়ে আসে, আধমরাদের জন্য। তাদের ঘা দিয়ে অবলের বল, অধনের ধন হয়ে রাত-প্রভাতের পথ ধরে রবিবারের যাতায়াত। রবিবার নিশীররাতের বাদলধারা, রবিবার আগুনের পরশমণি, রবিবার শ্রাবণের ধারার মতো ঝরে পড়ে, ঝড় হয়ে নেমে আসে। রবিবার নৃত্যের তালে তালে বেজে ওঠা হাসিকান্নার হীরাপান্না, রবিবার বিশ্ববীণার তারে বেজে ওঠা আনন্দধ্বনি, জগতের আনন্দযজ্ঞের মাঝে জীবন মরণের সীমানা ছাড়িয়ে দাঁড়ানো সেই বন্ধু, রবিবার মহাবিশ্বে মহাকালের মাঝে এক বিস্ময়, খোলা হাওয়া, জেগে থাকা অনন্ত।
আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৭৭: পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যাঁর জীবনের আকাশে কখনও শত্রুতার মেঘ জমেনি

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-১৬: একাকিত্বের অন্ধকূপ: হেমিংওয়ে ও চার স্ত্রী
রবিবার বছর বছর আসে। দারুণ অগ্নিবাণের মাঝে নিঃশব্দ চরণে আসে, চলেও যায়। সে প্রভাতের রবির কর থেকে অস্তরবির আলো আর সন্ধ্যার মেঘমালায় রহস্যঘন, তার সোনার তরী কোন্ কূল থেকে কোন্ ঘাটে ভেড়ে কে জানে, সে যে এক বাঁধন নাশা, মনের স্রোতে ভাসা চিরকালের কাঁদা-হাসা।
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-১৫: এ কেমন রঙ্গ জাদু, এ কেমন রঙ্গ…/৩

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১১২: প্রশাসক রামচন্দ্রের সাফল্য কী আধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে সফল প্রশাসকদের আলোর দিশা হতে পারে?
হে রবিবার, তোমার মধুর ধ্বনি হৃদ্-কমলের বনমাঝে, বিজনঘরে নিশীথরাতের প্রথম কদম ফুল। সে এক অনিঃশেষ মধুর, অতল রোদনের পারে এক মরা গাঙের বান, নয়নতারায় আপন আলোর ধারা, আপন-মাঝে জেগে ওঠা শক্তি, দুখজাগানিয়া মারের সাগরের শেষে ভয়ভাঙানিয়া চিরনবীন তরী, নিজেকে জয় করার বল। অসীমের চিরবিস্ময়, চিরনূতন, ভাস্বর হে ‘রবি’দিবস! আমার দুঃখদিনের রক্তকমল তোমার করুণ পায়ে সঁপে দিলাম।
* ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা।এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।