শনিবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৫


এক চার তিন দুই…কাউন্টডাউন শেষ। এসে গেল নতুন বছর। ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।

জীবনে প্রথম দিনটা গুরুতর হয়। অনেকে তাকে শুভ বলেন। এই যেমন যেদিন পৃথিবীতে, স্কুলে, কলেজে প্রথম পা পড়ে সেইসব দিন বিলক্ষণ স্মরণীয়। যদিও ঈশ্বরের সব দিন নাকি সমান, যদিও সূর্য রোজ নতুন নতুন দিনের প্রকাশ ঘটান, তবুও কিছু কিছু দিন মনে রাখার মতো।
এই যেমন নিজের কিংবা মনীষীদের আবির্ভাব দিবস, প্রথম ‘তোমাকে’ দেখার দিন কিংবা সেই যেবার খুব বন্যা হল, যেবার পরীক্ষায় খুব কড়া গার্ড পড়ল এইসব আর কী! নানান স্মরণীয় দিবসের মধ্যে কিছু কিছু পয়লা দিন উত্সবের। পয়লা মানেই নতুন কিছু সূচনা, সম্ভাবনার আশা, কল্পনা। যেমন পয়লা জানুয়ারি, পয়লা বৈশাখ। এর মাঝে পয়লা এপ্রিল চলে এলে মুশকিল। পয়লা আষাঢ়ে আবার অন্যতর ব্যঞ্জনা। যাই হোক, আজ পয়লা বৈশাখ।
আরও পড়ুন:

গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-২২: সন্ন্যাস

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯৩: মা সারদার সঙ্গে সরলাদেবীর কাশীভ্রমণ

বঙ্গাব্দের নতুন একটি বছরের শুভারম্ভ। কিন্তু ব্যাপার হল এই যে, বঙ্গাব্দ কাকে বলে, এটি কোন বঙ্গাব্দ এসব প্রায় কুইজের প্রশ্নের সমতুল, বঙ্গাক্ষরে লেখাও একদা যদি যাদুঘরে প্রবেশ করে তাও খুব অস্বাভাবিক হবে না। আর যাদের জন্য এইসব! সেই বাঙালিগণ ইংবং হিংবং এসবের কল্পদ্রুমে চড়ে নিজের ডালেই কোপ মারছে। তা ভালো, তবে বোশেখের প্রথম দিনটির আধুনিক উদযাপন বেশ শোকেসে সাজানো ডলপুতুলের মতো আলঙ্কারিক, হাত পা নাড়ে না, অথচ কেমন মানুষ মানুষ মনে হয়!
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯৬: পরাগপাখি

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১১১: বিপদ যখন আসে

পয়লা বৈশাখ হোক বা একলা বৈশাখ, তিরিশ বছর আগেও নববর্ষের দিন হালখাতার সৌজন্যে, অন্যান্য আয়োজনে, পালনে, যাপনে ও মননে যেমন ছিল, এখন তা নয়। পয়লার উদযাপন, পয়লা নম্বরে থাকার বাসনা ভালো, একলার বিজনসুখ-ও ভালো, অদ্বিতীয়ের গরিমা ভালো ততক্ষণ, যতক্ষণ তা একা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ার বেদনায় পীড়াদায়ক না হয়। পয়লা বৈশাখের যাপনে ক্যালেন্ডার, মিষ্টিমুখ আছে, শুভেচ্ছা বিনিময় আছে, আন্তর্জালে ভার্চুয়াল দুনিয়ার ঘটাপটা আছে।
আরও পড়ুন:

ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব-৫৬: সিলেটে দেখা মণিপুরী নাচ কবির নৃত্য ভাবনাকে উস্কে দিয়েছিল

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫৪: গ্রীষ্মকালে আলাস্কা সত্যিই অচেনা এক দেশ

সাক্ষাতে, টেলিযোগে, মেসেজে, চ্যাটে বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে ঠিকই, তবে তার কতটা সচেতন, কতটা বচ্ছরকারের দেখনদারি? এই পয়লার উদযাপন যেন প্রথমে থাকার হিড়িক, ক্লাসে ফার্স্ট হওয়ার, বাসে ট্রেনে উত্তম সিটটা ধরার, লাইনে আগে দাঁড়ানোর প্রাণান্তকর চেষ্টামাত্র। এতে ছলনা আর আত্মপ্রবঞ্চনায় জীবনের বন্যার উদ্দাম কৌতুকটাই, নব আনন্দে জাগার প্রাণশক্তিটুকুই চাপা পড়ে যায়।

সকলকে নববর্ষের সাদর শুভেচ্ছা, আগামীর দিন সার্থক হয়ে উঠুক।
* ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।

গল্প ও উপন্যাস পাঠানোর নিয়ম

‘সময় আপডেটস’ -এর এই বিভাগে যাঁরা গল্প ও উপন্যাস পাঠাতে চান তাঁরা ছোটদের ও বড়দের আলাদা আলাদা গল্প পাঠাতে পারেন। বুঝতে সুবিধার জন্য ইমেলের ‘সাবজেক্ট’-এ বিভাগের উল্লেখ করবেন। ছোটদের গল্পের জন্য ১০০০ শব্দ ও বড়দের গল্পের জন্য ১০০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে পাঠাতে হবে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর দিতে ভুলবেন না। গল্প বা উপন্যাস নির্বাচিত হলে যোগাযোগ করা হবে। ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com


Skip to content