শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

কী কী করবেন
চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনও ওষুধ খাবেন না। অনেক সময়ই বিভিন্ন মানুষের পরামর্শ শুনে ওষুধ সেবন করেন। কিন্তু সেটার ডোজ, কীভাবে খেতে হবে না জেনে, কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে অবহিত না হয়ে ওষুধ সেবন করা হিতে বিপরীত হতে পারে৷ এমনকী প্রাণ সংঘাতের কারণ হতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনও ওষুধ বন্ধ করবেন না বা কমবেশি করবেন না। যতই অসুখ আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকুক। অনেকেই প্রেশার নরম্যাল থাকলে, রক্তে সুগার ঠিক থাকলে ওষুধ সেবন নিজে নিজেই বন্ধ করে দেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে সেটা বন্ধ কখনওই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া করা উচিত নয়, কারণ এই নরম্যাল থাকছে ওষুধের কারণে। ওষুধ বন্ধ করে দিলেই আবার অস্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। তার থেকে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যা একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

কোনও নতুন ওষুধ শুরু করার পর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে যেমন ফুসকুড়ি, চুলকানি, শ্বাসের সমস্যা, অতিরিক্ত বমি, পেটখারাপ, মূত্রের অস্বাভাবিকত্ব, আচ্ছন্ন ভাব ইত্যাদি হলে তৎক্ষণাৎ ওষুধ বন্ধ করে চিকিৎসককে জানাবেন।

ঠান্ডা বা গরম নয়, স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল দিয়ে ওষুধ খান। নতুবা ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এক্সপায়ারি ডেট দেখে নেবেন। সেটা পেরিয়ে গেলে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই বিষ হয়ে যায় না।

ওষুধ খাবার আগে দেখে নেবেন কোনও রঙের পরিবর্তন হয়েছে কি না, গুঁড়ো হয়ে গেছে কি না, কোনও অস্বাভাবিক গন্ধ পাচ্ছেন কি না, তরল ওষুধে কোনওরকম সেডিমেন্ট পড়েছে কি না। এসব হলে ওই ওষুধ খাবেন না।

অনেক সময় কাছাকাছি একই ব্র্যান্ড নামে নানান গ্রুপের ওষুধ থাকে। তাই ভালো মতন প্রেসক্রিপশন দেখে তবেই ওষুধ কিনবেন। কোনও ধরনের সংশয় থাকলে চিকিৎসকের থেকে জেনে নেবেন। এমনও দেখা গেছে সম্পূর্ণ অন্য কাজের জন্য ওষুধ খেয়ে গিয়ে আপৎকালীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সবসময় রসিদ সহ ওষুধ কিনবেন। কারণ কোনও সমস্যা হলে ব্যাচ নম্বর সহ সেটা জানতে হবে। রসিদ ছাড়া সেটা প্রমাণিত হবে না।

যে চিকিৎসককেই দেখান না কেন, কী কী ওষুধ আপনি খান সেটা অবশ্যই জানাবেন। নতুবা আপনার অজান্তেই একই ধরনের দুটো বা তিনটে ওষুধ খেয়ে যেতে পারেন। যেটা অনেক ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক শুধু নয় এমনকী প্রাণঘাতী হতে পারে।

কোনও কারণে ওষুধ খেতে ভুলে গেলে, বিশেষ করে যেগুলো নিয়মিত ওষুধ যেমন প্রেশারের, সুগারের পরবর্তী ডোজের সঙ্গে ৭/৮ ঘণ্টা ব্যবধানে মনে পড়লে খেয়ে নিতে পারেন। কিন্তু তার কম ব্যবধানে কখনওই খাওয়া উচিত নয়। আপৎকালীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

বয়স্কদের অনেক সময় ইনহেলার নিতে হয়। নেবার পরে জল দিয়ে মুখের ভিতরটা ধুয়ে নেবেন। নতুবা তার কারণে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে।

আজকাল ওষুধ ঠিকমতো রাখার জন্য পিল বক্স পাওয়া যায়। বয়স্কদের মনে রাখার জন্য খুবই উপকারী। নতুবা বয়স্কদের ভুলে যাওয়ার প্রবণতায় না খাওয়া, বেশি খাওয়া, কম খাওয়া এসবই হতে পারে যার থেকে বহুবিধ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

বয়স্কদের এই ওষুধ বিষয়ে পরিবারের লোকেদের, পরিচর্যাকারীদের এমনকী চিকিৎসায় রত চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালন করা ও এই বিষয়ে সচেতনতা ভীষণভাবে জরুরি।

ছবি : লেখক

লেখক: কর্ণধার ‘বাঁচবো’, সহ সম্পাদক জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ শাখা৷ উপদেষ্টা, প্রোটেক্ট দ্যা ওয়ারিয়ার্স। যোগাযোগ : ‘বাঁচবো’, ফোন : ৯৯০৩৩৮৮৫৫৬

Skip to content