‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রবীর ঘোষ প্রয়াত।
‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রবীর ঘোষ প্রয়াত। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি দমদমের মতিঝিলে নিজের ফ্ল্যাটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শনিবার একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে প্রবীরের দেহ দান করা হবে।
রাজ্যের পাশাপাশি সারা দেশে কুসংস্কার বিরোধী লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন প্রবীর ঘোষ। তুকতাক, সম্মোহনের মতো বিষয় যে ভিত্তিহীন, প্রবীর তা হাতেকলমে প্রমাণ দিয়েছিলেন। তিনি একাধিক বিজ্ঞানবিষয়ক বই লিখেছেন। এর মধ্যে তাঁর ৫ খণ্ডে ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ বইটি পাঠকমহলে আলোড়ন তৈরি করেছিল।
আরও পড়ুন:
মা হওয়ার মুখে জটিলতা, ‘বালিকা বধূ’ খ্যাত অভিনেত্রী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি
হেলদি ডায়েট: দ্রুত রোগা হতে চান? ভরসা রাখুন সুপারফুড ডালিয়াতে
প্রবীরের ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস না। তিনি প্রবীর বলতেন, কেউ অলৌকিক শক্তির প্রমাণ দেখাতে পারলেই তাঁকে নগদ ৫০ লক্ষ টাকা দেবেন। যুক্তিবাদী আন্দোলনে ছড়িয়ে দিতে তিনি চাকরিও ছাড়েন। ঝাড়ফুঁক বা অলৌকিক ঘটনার খোঁজ পেলেই শহরতলি হোক বা গ্রামাঞ্চল সর্বত্র যুক্তিবাদী সমিতিকে নিয়ে প্রবীর সেখানে পৌঁছে যেতেন। সবাইকে প্রমাণ দিয়ে দেখাতেন, অলৌকিক বলে কিছু নেই। তিনি জ্যোতিষশাস্ত্র, ওঝাদের কাজকর্ম নিয়েও সরব হয়েছেন। প্রবীর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যুক্তিবাদী সমিতির সভাপতি ছিলেন।
আরও পড়ুন:
ঘন ঘন ভেসে আসছে রহস্যময় সঙ্কেত, তাহলে কি ভিনগ্রহীরা মানুষের খোঁজ পেয়ে গেল? কী বলছে সেই চৌম্বকীয় তরঙ্গ?
চলো যাই ঘুরে আসি: বাংলা— পৌরাণিক অনন্যতায় ঘুড়িষা
প্রবীরের জন্ম ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরে। পুরুলিয়ার আদ্রায় কেটেছে শৈশব। বাবা খড়্গপুর কর্মরত ছিলেন। তাই পুরুলিয়ার পরে খড়্গপুর, তার পরে তিনি দমদমে চলে আসেন। মানুষকে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে তিনি। ছাত্রজীবন থেকে পত্রিকা প্রকাশ করতেন। যুক্তিবাদী সমিতির কাজে আরও বেশি সময় দিতে তিনি ব্যাঙ্কের চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন ১৯৯৯ সালে।
যুক্তিবাদী সমিতির কাজে পুরোদমে অংশগ্রহণ করতে ১৯৯৯ সালে ব্যাঙ্কের চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন ভারতীয় বিজ্ঞান এবং যুক্তিবাদী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মণীশ রায়চৌধুরী। মণীশ বলেন, “মানুষের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু যুক্তিবাদী আদর্শের মৃত্যু কখনও হয় না। বহু বই যুক্তিবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যুক্তিমনস্ক হওয়ার প্রচেষ্টায় যাঁরা এই সব বই হাতে তুলে নেবেন, যুক্তিবাদী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, তখনই তাঁদের মধ্যে প্রবীর ঘোষ বেঁচে থাকবেন।”
যুক্তিবাদী সমিতির কাজে পুরোদমে অংশগ্রহণ করতে ১৯৯৯ সালে ব্যাঙ্কের চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন ভারতীয় বিজ্ঞান এবং যুক্তিবাদী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মণীশ রায়চৌধুরী। মণীশ বলেন, “মানুষের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু যুক্তিবাদী আদর্শের মৃত্যু কখনও হয় না। বহু বই যুক্তিবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যুক্তিমনস্ক হওয়ার প্রচেষ্টায় যাঁরা এই সব বই হাতে তুলে নেবেন, যুক্তিবাদী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, তখনই তাঁদের মধ্যে প্রবীর ঘোষ বেঁচে থাকবেন।”