
ছবি: প্রতীকী।
মিত্রসম্প্ৰাপ্তি
উন্নতিকামী যে কোনও পুরুষের মধ্যে উত্সাহ গুণ থাকাটা সর্বদা আবশ্যক। যেক্ষেত্রে আলস্য ত্যাগ করে উত্সাহের সঙ্গে কোনও কার্য করা হয় এবং ন্যায়নীতির সঙ্গে মানুষের পৌরুষও যেখানে মিলে থাকে, লক্ষ্মীশ্রী সেখানেই অচঞ্চল হয়ে অবস্থান করে। ব্যবসায় উন্নতি করতে গেলে যেকোনও ব্যবসায়ীর মানসিকতাটা ঠিক এইরকমই হওয়াটা বাঞ্ছনীয়। সব কিছুই হল ভাগ্যের খেলা। এইসব ভেবে মানুষের কখনই নিজের উদ্যোগ ত্যাগ করা উচিত নয়। তিল থেকেও উদ্যোগ ছাড়া তেল বেরোয় না, তার জন্যেও পরিশ্রম করতে হয়। সুতরাং পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। উত্সাহের সঙ্গে ধৈর্য ধরে কোনও জিনিষ নিয়ে লেগে থাকে সিদ্ধি আসবেই। কিন্তু মন্দবুদ্ধি যে ব্যক্তি সামান্যতেই সন্তুষ্ট হয়ে যায়, সেইরকম ভাগ্যহীন পুরুষের কাছে সম্পদ এলেও তা বিনষ্ট হয়ে যায়।
শৃগালী বলল, আর তুমি যে সন্দেহটা করছ, ঐ মাংসখণ্ড দুটো আদৌ পড়বে কি পড়বে না? এ নিয়ে পণ্ডিতেরা কি বলে জানো? তাঁরা বলেন, সমাজে মানুষ কোনো বড় পদ লাভ করলেও কিন্তু প্রশংসিত হয় না; সে প্রশংসিত হয় যদি সে দৃঢ় চরিত্র হয়। নিজ কর্তব্যে যে দৃঢ় ও নিশ্চিত থাকে সেই উন্নতি করে। দৃষ্টান্ত দিতে গেলে বলতে হয়, চাতকপাখিকেই দেখো। তার তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে বৃষ্টির জল পড়বেই এই বিশ্বাস তার এতোটাই দৃঢ় যে স্বয়ং দেবরাজ ইন্দ্রও পর্যন্ত বাধ্য হন জলধারা বর্ষণ করতে।

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৬৯: টাকা-পয়সা থাকলে চোর-ডাকাতকেও লোকে সম্মান দেখায়

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০৫: রবীন্দ্রনাথ ভয় পেতেন মহর্ষিদেবকে
অগত্যা সেই শেয়াল-দম্পতি তখন ওই ইঁদুর ধরার জায়গাটা ছেড়ে সেই মাংসখণ্ড দু’টোর লোভে ষাঁড় তীক্ষ্ণবিষাণের পিছন পিছন ঘুড়তে শুরু করল। পণ্ডিতরা ঠিকই বলেন—
স্ত্রীবাক্যাঙ্কুশবিক্ষুণ্ণো যাবন্নোদ্ধ্রিযতে বলাৎ।। (মিত্রসম্প্রাপ্তি, ১৪৮)

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৭৮: মা সারদার ‘পরকে আপন করা’

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯৭: ভাগ নুনিয়া, ভাগ
সেই শেয়াল-দম্পতি তখন থেকে তীক্ষ্ণবিষাণ ষাঁড়ের পিছন পিছন ঘুরতে শুরু করল। এইভাবে অনেকদিন কেটে গেলো, কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই সেই মাংসখণ্ডদুটো তার শরীর থেকে খসে পড়লো না। এইভাবে বছর পনেরো কেটে যাওয়ার পর সেই শেয়াল একদিন তার স্ত্রীকে ওই কথাগুলো বলেছিল যে এই মাংসখণ্ডদুটো পড়বে কি পড়বে না এই ভাবতে ভাবতে পনেরো বছর কেটে গেলো, কিন্তু তার পরেও এগুলো পড়লো না। তাই নিজের আগের জায়গাতেই ফিরে যাওয়া ভালো।
৬ষ্ঠ কাহিনি সমাপ্ত

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৯৬: রাজনৈতিক পরিসরে অখ্যাতি ও সন্দেহর আবিলতা থেকে কি মুক্তি সম্ভব?

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৮১: সুন্দরবনের পাখি—বেনে বউ

শ্যাম বেনেগল সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে পারতেন

গল্পবৃক্ষ, পর্ব-১২: দর্দরজাতক
গুপ্তধনের স্ত্রী এবং পুত্র সেই সোমিলককে নানা ভাবে তাঁদের গৃহে প্রবেশ করতে নিষেধ করলেও কারো কথা না শুনেই সেই সোমিলক প্রায় জোর করেই তাঁদের বাড়ির মধ্যে ঢুকে বসে পড়ল। রাত্রে খাবারের সময়েও নিতান্তই অনাদরের সঙ্গে সেই সোমিলককেও গুপ্তধনের স্ত্রী কিছু খাবার দিলেন। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সোমিলক সেখানে যখন রাত্রে ঘুমালো তখন স্বপ্নে দেখলো সেই দুই পুরুষ তারা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছে। তাদের মধ্যে প্রথমজন বলল, হে কর্তা! সোমিলককে ভোজন দেওয়ার জন্য তুমি আজ গুপ্তধনের প্রতিদিনের খরচের অতিরিক্ত অর্থের খরচ কেন করিয়ে দিলে? তখন দ্বিতীয়জন বললেন, হে কর্ম! এতে আমার কোনও দোষ নেই। আমি তো মানুষকে লাভ করাই। এইটাই আমার কর্ম। কিন্তু তার পরিণাম কি হবে সেটা তো তোমার বশে।
এরপর পরদিন সকালে যখন সোমিলকের ঘুম ভাঙল তখন দেখলো যে গুপ্তধনের বিষূচিকা অর্থাৎ কলেরা হয়েছে এবং সে দুঃখিত হয়ে পড়ে আছে। পরেরদিন সেই কলেরা রোগের কারণে তাকে উপবাসও করতে হল। ফলে সোমিলকের জন্য আর অতিরিক্ত ভোজনের দরকার হলো না; গুপ্তধনকে উপবাস করতে হয়েছিল বলে গুপ্তধনের জন্য নির্দিষ্ট খাবারটি সোমিলকের ভাগ্যে জুটলো। এরপর সকাল সকালই পরদিন সে সোমিলক গুপ্তধনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে উপভূক্তধনের বাড়িতে এসে উপস্থিত হল।—চলবে।