শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

বসন্ত রঙের মরশুম তো বটেই, পাশাপাশি কিন্তু বসন্ত পরীক্ষার মরশুমও বটে। আমাদের শিক্ষার্থী বন্ধুদের জীবনের অন্যতম বড় পরীক্ষাগুলি আরম্ভ হয়ে যায় ফেব্রুয়ারির শেষ থেকেই। মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলির চাপে জেরবার? কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছ না শেষমুহূর্তে কীভাবে মনঃসংযোগ বাড়াবে? চিন্তা নেই, তোমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলিতে বাজিমাত করার জন্য কিছু সহজ পন্থা বাতলে দিতে আজ আমি চলে এসেছি তোমাদের কাছে। তাহলে আর দেরি কেন? শুনে নেওয়া যাক পরীক্ষার আগে মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য সহজ কিছু টিপস।

নিয়মমাফিক নিয়ম মেনে
ছাত্রজীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নিয়মানুবর্তিতা। নিয়ম মেনে পড়াশোনার কোনও বিকল্প কিছু হতেই পারে না। তাই প্রতিদিনের জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন বানিয়ে নাও। দিনের কোন সময়ে কোন বিষয়টা পড়বে। যেমন সকালে কোন বিষয় পড়বে, দুপুরে কোন বিষয় পড়বে, সন্ধ্যায় কোন বিষয় পড়বে, রাত্রে কোন বিষয় পড়বে—সেই অনুযায়ী পড়া চালিয়ে যাও। এভাবে প্রতিদিন নিয়মমাফিক নির্দিষ্ট একটি রুটিন মেনে পড়লে সুফল কিন্তু মিলবেই।

সময়ের ওভারডোজ যেন না হয়
তোমার কি একটানা তিন-চার ঘণ্টা ধরে পড়ার অভ্যেস রয়েছে? তাহলে জেনে রাখো আমাদের মনঃসংযোগের গ্রাফ কিন্তু এক ঘণ্টার পর থেকেই আস্তে আস্তে নিম্নগামী হতে থাকে, তাই একটানা অনেকক্ষণ পড়লে কিন্তু সুফল তেমন মিলবে না। বরং কিছুটা পড়ার পর একটা ব্রেক নাও। একটু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করো, হালকা করে টিভি দেখো, বাবা, মা, ভাই-বোনের সঙ্গে একটু গল্প করে ফ্রেশ হয়ে জল খেয়ে আবার পড়তে বসো। দেখবে অনেক বেশি মনঃসংযোগ করতে পারছ।

অভ্যাস, স্মরণ এবং পুনস্মরণ
প্রাচীন ভারতে শিক্ষা ছিল শ্রুতিনির্ভর। শুনে শুনে মনে রাখাই ছিল রীতি। তোমাদের শুনে পড়া মনে রাখার প্রয়োজন হয় না ঠিকই, কিন্তু পড়া আত্মস্থ করার জন্য বারবার রিভাইস করা আবশ্যক। বারবার রিভাইস করো এবং যখন বই চোখের সামনে খোলা নেই তখনও মনে মনে আওড়াও, সারাদিনে কী কী পড়লে। কিছু মনে না পড়লে চট করে বই খুলে দেখে নাও। এই অভ্যাস পরীক্ষার হলে লেখার গতি এবং আত্মশক্তি উভয়ের বৃদ্ধিতেই সাহায্য করবে।
শরীরচর্চায় শানিত হবে মগজাস্ত্র
প্রতিদিন হালকা স্ট্রেচিং ও প্রাণায়াম করা অভ্যাস করো। এতে ফুসফুস ও মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে এবং মনঃসংযোগ বাড়াতেও সাহায্য করবে।

নিজেকে দাও পুরস্কার
একসপ্তাহ টানা পড়াশোনা করেছ, রুটিনের প্রত্যেকটি ধাপ পরিপূর্ণ করেছ, এই লক্ষ্যপূরণের জন্য নিজেই একটু নিজের পিঠ চাপড়ে দাও। সপ্তাহের শেষে একটা ব্রেক নাও। পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাও বা ঘুরতে যাও। নিজেই নিজেকে এই ছুটিটা উপহার দাও। এতে পড়ার এনার্জি আরও বৃদ্ধি পাবে।

আমরা করব জয় নিশ্চয়
সিলেবাসের পরিধি দেখে হতাশ হয়ে পড়লে কিন্তু চলবে না, বরং সিলেবাস শেষ করাটাকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করো। হতাশ হয়ে পড়লেই কিন্তু পড়ার প্রতি আগ্রহ কমবে। নিজেই নিজেকে বলো ‘আমি পারবই, আমিই পারব’। দেখবে যেটা করা ভীষণ কঠিন বলে মনে হচ্ছিল সেটাই কখন তুমি করে ফেলেছ নিজেই টের পাবে না।

এই ছোট্ট ছোট্ট কিছু টিপস তোমাদের জন্য রইল, যা পরীক্ষার ঠিক আগের মুহূর্তেও তোমাদের মগজকে জোগাতে পারে শক্তি, মনে জোগাতে পারে সাহস। আগামী দিনগুলো আরও সুন্দর ও সম্ভাবনাময় হয়ে উঠুক তোমাদের এই মঙ্গলকামনা ও শুভেচ্ছাই রাখা রইল আমার সমস্ত ছোট্ট পরীক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য।

যোগাযোগ: ৯৪৩৩২৯১৮৭৭

Skip to content