ছবি প্রতীকী
তাই এই সময়ে প্রায় সব বাড়ির সাধারণ সমস্যা হয়ে ওঠা পরিবারের খুদে সদস্যদের স্মার্টফোনে আসক্তি থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব৷ তার উত্তর খুঁজতেই আজ এই বিষয়টিকে আলোচনার জন্য বেছে নিয়েছি৷ বিজ্ঞান যেমন একদিকে আমাদের কাছে আশীর্বাদ, তেমনি অভিশাপও৷ ঠিক তেমনি স্মার্টফোনও আমাদের কাছে যেমন আশীর্বাদস্বরূপ, তেমনি অভিশাপেরও একটি রূপ৷ আমাদের জানতে হবে কীভাবে গ্যাজেটসটিকে আমরা ব্যবহার করব।
কী করে বুঝবেন সন্তান স্মার্টফোনে আসক্ত?
এছাড়াও আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না, ও আপনার অগোচরে স্মার্টফোনে বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করছে। কিন্তু একটু নজর করলেই আপনি লক্ষ করবেন, সে হয়তো খেতে বসেও বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করে চলেছে। বাবা-মা বারণ করলে সে বিরক্তি প্রকাশ করছে। অথবা আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রকাশ করছে। খুদের এই অস্বাভাবিক আচরণও স্মার্টফোনে আসক্তির জন্য হচ্ছে।
কী কী কারণে বাচ্চাদের মধ্যে এই স্মার্টফোনে আসক্তি দেখা যায়, তার অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণ আগেই আলোচনা করেছি। এছাড়াও কিছু কিছু বাচ্চার মধ্যে জন্মগত সমস্যা থাকে। যার জন্য তাদের মধ্যে অমনোযোগিতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেসব ছেলেমেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তির সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবার কারও কারও মধ্যে ‘অবসেসিভ কম্পালসিভ বিহেভিয়ার’ দেখা যায়। যাদের মধ্যে এই সমস্যা রয়েছে তাদের অন্যদের তুলনায় বেশি স্মার্টফোনে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কখনও কখনও এও দেখা যায়, ‘ডিপ্রেশন’ থেকেও বেরিয়ে আসার কারণে স্মার্টফোনে আসক্তি হয়। অর্থাৎ ‘ডিপ্রেশন’ থেকে বেরিয়ে আসতে গিয়ে সে স্মার্টফোন দেখে অনেক সময়ই আনন্দ পায়। এখানেই শেষ নয়, পরিবারে অন্য কোনও সদস্যও যদি ”অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার’-এর মতো সমস্যায় ভোগেন, তাহলে পরিবারে ছোটদের মধ্যেও এই প্রবণতা দেখা যেতে পারে।
তাহলে এর থেকে মুক্তির উপায়?
খুব প্রয়োজন হলে বাচ্চাদের সেই সব স্মার্টফোনই দেবেন যাতে গেম অ্যাপ থাকবে না। কারণ ছোটবেলাতে মস্তিষ্কের বৃদ্ধির সময় যদি সে গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে তবে তাকে পরবর্তী জীবনে সামলানো অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। তাই প্রথম থেকেই স্মার্টফোন এমনভাবে লক করে রাখুন যাতে সে কোনওরকম অ্যাপস ডাউনলোড করতে না পারে। অবশ্যই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, বাচ্চার চার-পাঁচ বছর বয়স থেকেই স্মার্টফোনে নিয়ন্ত্রিত করতেই হবে। কিছুটা সময় তাকে মোবাইল দেবেন ঠিকই কিন্তু বাকি সময়টা স্মার্টফোন আপনার কাছেই রাখবেন।
আরেকটি বিষয় হল, বাড়িতে একাধিক স্মার্টফোন রাখবেন না। দু-তিনটির বেশি স্মার্টফোন যদি বাড়িতে থাকে তাহলে বাচ্চার কিন্তু আসক্তি হওয়া স্বাভাবিক। এগুলো ছোট ছোট বিষয় হলেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রথম থেকেই আপনাদের সতর্ক হতে হবে, বাচ্চাকে কখন স্মার্টফোন দেবেন, আর কখন দেবেন না।
আসক্ত হলে কী কী করণীয়
এর পরেও যদি সমস্যাটি না মেটে তাহলে বুঝতে হবে বাচ্চার একটা মানসিক সমস্যা বা স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়েছে। যদি এমন পরিস্থিতি কারও ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাহলে বিষয়টিকে অবহেলা না করে একজন মনোবিদের পরামর্শ নিন৷
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
যোগাযোগ: ৯৪৩৩২৯১৮৭৭