ছবি: প্রতীকী।
বঙ্গোসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিস্থিতি! এই মুহূর্তে সাগরের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। যদি এই ক্রমশ ঘূর্ণাবর্ত শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয় এবং সেই নিম্নচাপ আরও শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়, তা হলে তার নাম হবে ‘রেমাল’। ভবিষ্যতের এই ঘূর্ণিঝড়ের নামটি দিয়েছে ওমান। আরবি ভাষায় ‘রেমাল’ এর অর্থ বালি।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া দফতর (ওয়ার্ল্ড মেটিয়োরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট) আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগর, অর্থাৎ উত্তর ভারত মহাসাগরে তৈরি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য একটি তালিকা তৈরি করে। মৌসম ভবনের পক্ষ থেকে ২০২০ সালে ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। এই মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তা হলে সেই তালিকা অনুযায়ী এর নাম দেওয়া হবে‘রেমাল’। যদিও হাওয়া দফতর সরকারিভাবে ‘রেমাল’ নামটিকে ঘোষণা করেনি। যদি ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি তৈরি হলে, তবেই আবহাওয়া দফতর এই ‘রেমাল’ নামটি ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৯: বাইনাচ-গানেরও কদর ছিল ঠাকুরবাড়িতে
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৩: বাবু ডাক্তার ও ‘ডাক্তারবাবু’
হাওয়া দফতর মঙ্গলবার জানিয়েছে, এই মুহূর্তে পূর্ব বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১.৫ থেকে ৫.৮ কিলোমিটার উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত বর্তমানে অবস্থান করছে। আবার একটি একটি অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে হরিয়ানা থেকে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে পূর্ব বাংলাদেশ পর্যন্ত। এই অক্ষরেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১.৫ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করছে। পাশাপাশি এই মুহূর্ত দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩.১ কিলোমিটার উপর পর্যন্ত আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৩: মহাভারতে উল্লিখিত মিথ্যাশ্রয়ের প্রাসঙ্গিকতা কী আজও আছে?
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৬: শ্রীমায়ের দুই ভ্রাতৃবধূর কথা
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এর জেরে বুধবার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ বলয় তৈরি হতে পারে। পরে সেটি ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে শুক্রবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, আরও শক্তি বাড়িয়ে সেই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার মতো অনুকূল পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ ধেয়ে আসবেই, এমনটাও আবহাওয়া দফতর নিশ্চিত করে জানায়নি। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ তৈরি হলেও তা বাংলার উপকূলের দিকেই এগিয়ে আসবে কি না, সে সম্পর্কেও হাওয়া দফতর বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
আরও পড়ুন:
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪৯: ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—ওড়া, কেওড়া, চাক কেওড়া ও কৃপাল
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৩: তরু দত্ত— এক আনন্দ বিষাদের তরুলতা
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব ক’টি জেলায়। যদি শেষমেশ নিম্নচাপ তৈরি হয়, তা হলে আগামী শুক্রবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। কাগামী শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপর— এই তিন জেলাতেই ৭ থেকে ১১ সেন্টমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও। ঝোড়ো হাওয়ার গতবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। এদিকে, আগাম সতর্কতা হিসেবে আবহাওয়া দফতর আগামী শুক্রবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে।