বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

জাপানে রেকর্ডসংখ্যক তরুণ-তরুণী জানিয়েছেন, তাঁরা বিয়ে করবেন না। জাপানের জাতীয় জনসংখ্যা ও সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার ২০২১ সালের সমীক্ষা বলছে, ১৭.৩ শতাংশ তরুণ ও ১৪.৬ শতাংশ তরুণী জানিয়েছেন, তাঁরা জীবনে বিয়ে করবেন না। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ৩৪-এর মধ্যে। ১৯৮২ সাল থেকে প্রতিবছর এ রকম একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। ২০২২ সালের সমীক্ষাটিতে বিয়েতে অনীহা প্রকাশকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ। মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ বিয়ে করাতে দ্বিমত পোষণ করেছেন। এমন প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাপান সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশ্লেষকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যাবে, অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এ বিষয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
১৯৮২ সালে যখন প্রথমবারের মতো এ সমীক্ষা করা হয়েছিল, তখন ২.৩ শতাংশ পুরুষ ও ৪.১ শতাংশ তরুণী জানিয়েছিলেন, তাঁরা কখনও বিয়ে করবেন না। সে সংখ্যা এখন বেড়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। জাপানে ক্রমশ জনশক্তি কমছে। আর সার্বিক অর্থনীতিতে সরাসরি এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তরুণদের একটা বড় অংশের বিয়ে নিয়ে কেন কোনো আগ্রহ নেই? কারণ দেখিয়ে বলা হয়েছে, তরুণ-তরুণীরা বিয়ে করে সংসার করার চেয়ে নিজেদের পেশাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁরা নিজেদের ‘সিঙ্গেল’ জীবন উপভোগ করতে চান। নিজেদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় কোনো ছাড় দিতে চান না। আর পেশায় উন্নতি করতে চান।
আরও পড়ুন:

নিয়মিত ওটস খেলে শরীরে এই সাত পরিবর্তন ঘটবে জানতেন?

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-২৬: শান্তিপূর্ণ বাতাবরণে ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতায় অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে রঙিন মাছ

বিয়েতে তরুণদের আগ্রহী করে তুলতে জাপান সরকার ইতিমধ্যে সপ্তাহে তিন দিন কাজ আর চার দিন ছুটি নিতে উৎসাহিত করছে। নারী, বিশেষ করে মায়েদের কাজের সময় কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। সন্তান নিলে সরকারিভাবে প্রণোদনাও দেওয়া হচ্ছে। জাপানের নাগোয়ার বেসরকারি চুকো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিগেকি মাটসুডা বলেন, জাপান সরকার পরিস্থিতিটা ভারসাম্যপূর্ণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। একজন তরুণ বা তরুণী যেন পরিবার, সন্তান, সংসার নিয়েও পেশাগতভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব নীতিতেই উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এরপরও যদি তরুণ-তরুণেরা বিয়েতে আগ্রহী না হন, সরকার তখন নীতি বদলাতে বাধ্য হবে। কেন না, অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় জনশক্তির বিকল্প নেই।
কেবল বিয়ে নয়, জাপানি তরুণ-তরুণীদের একটা বড় অংশ প্রেম, বা বিয়ে না করে এক ছাদের নিচে থাকা অথবা একা মা বা বাবা হতেও আগ্রহী নন। এ কারণে জাপানে এমন সব মোবাইল অ্যাপ জনপ্রিয়, যেখানে ‘প্রেমিক’বা ‘প্রেমিকা’ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া পাওয়া যায়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেখানে খণ্ডকালীন চাকরি করেন। প্রেমিক বা প্রেমিকা হিসেবে অর্থের বিনিময়ে সেবা দেন।

Skip to content