![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Assam-1.jpg)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য।
ত্রিপুরার রাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য তাঁর পূর্বপুরুষদের মতোই ছিলেন শিক্ষা ও সংস্কৃতির গভীর অনুরাগী। রাজ্যে শিক্ষা বিস্তারে তিনি যেমন বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তেমনই সাহিত্য সংস্কৃতিরও উদার পৃষ্ঠপোষকতা করে গিয়েছেন এই রাজা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘ভারত ভাস্কর’ উপাধি দিয়েছিলেন তিনি।
কলকাতায় রবীন্দ্র মেলার উদ্বোধন করেছেন বীরবিক্রম। কবির অনুরোধে শান্তিনিকেতন সফরও করেছেন তিনি। সাহিত্য-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকের পাশাপাশি রাজা নিজেও একজন গীতিকার ছিলেন। গদ্য রচনাতেও তাঁর প্রতিভার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Assam.jpg)
ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৪১: রবীন্দ্রনাথ ও ব্রজেন্দ্র কিশোর
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Sundarban_EP79_Cover.jpg)
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৭৯: সুন্দরবনের পাখি: টুনটুনি
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দ। যুবরাজ বীরবিক্রমের বয়স মাত্র পনেরো। পড়াশোনা করছেন শিলং। হঠাৎ একদিন মৃত্যু ঘটল পিতা মহারাজ বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্যের। পিতার মৃত্যুর পর রাজ্যাধিকারী হলেন যুবরাজ বীরবিক্রম। কিন্তু রাজা নাবালক। তাই ভারত সরকারের নির্দেশে বীরবিক্রমের পক্ষে শাসন পরিচালনার জন্য একটি শাসন পরিষদ গঠিত হয়েছিল। রাজ্য পরিচালনার বিষয়ে সর্বাত্মক ক্ষমতা ছিল এই পরিষদের। কিন্তু যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইংরেজ পলিটিক্যাল এজেন্টের পরামর্শ ছিল অপরিহার্য।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Debendranath-Tagore-Cover.jpg)
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০৩: দেবেন্দ্রনাথ হয়েছিলেন ‘কল্পতরু’
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Pisach-Pahar_EP94.jpg)
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯৪: পরবর্তী পদক্ষেপ
১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে বিশ বছর বয়সে রাজ্যভার গ্ৰহণ করেন বীরবিক্রম। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর রাজ্যাভিষেক ঘটে। রাজ্যভার গ্রহণের পর রাজা রাজ্যের উন্নয়ন ও প্রশাসনিক সংস্কারে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বীরবিক্রম ছিলেন এক কর্ম তৎপর আধুনিক মনস্ক নৃপতি। দেশ বিদেশ সফর করে তিনি নানা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে রাজ্যের উন্নয়নে তা কাজে লাগাতে সচেষ্ট ছিলেন। নিজ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বিভিন্ন শহর যেমন তিনি সফর করেছেন, তেমনই পারিষদবর্গ নিয়ে রাজা তিনবার বিদেশ সফরেও গিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Horse.jpg)
গল্পবৃক্ষ, পর্ব-৯: আসছে আমার পাগলা ঘোড়া
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/08/Kyebla.jpg)
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩৭: লোকে যারে বড় বলে
তবে শুধু দেশ বিদেশ সফরই নয়,বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্কার সহ রাজ্যে বহুমুখী উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজা।তিনি রাজ্যে নানা নির্মাণ কাজ করিয়েছেন,শিক্ষার সম্প্রসারণ সহ যোগাযোগ-শিল্প-কৃষির উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছেন। ব্রিটিশ বাংলার রেলপথের সঙ্গেও ত্রিপুরাকে জুড়ে দিতে চেয়েছিলেন রাজা।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/11/Alaska.jpg)
রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৪৬: আলাস্কার আকাশে অহরহ ব্যক্তিগত বিমান ওঠানামা করে
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/12/Assam.jpg)
ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৪১: রবীন্দ্রনাথ ও ব্রজেন্দ্র কিশোর
জুমিয়াদের জন্য তিনি সমতলে বিস্তীর্ণ ভূমি সংরক্ষণের আওতায় এনেছেন। আবার পূর্ববঙ্গ থেকে আসা দাঙ্গা দুর্গত বাঙালি শরণার্থীদেরও তিনি পরম মমতায় তাঁর রাজ্যে আশ্রয় দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বীরবিক্রম ছিলেন অনন্য। ছিলেন এক দূরদর্শী রাজা। মৃত্যুর অল্প কিছুদিন আগে ত্রিপুরার ভারতভুক্তির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন তিনি।—চলবে।
* ত্রিপুরা তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে পান্নালাল রায় এক সুপরিচিত নাম। ১৯৫৪ সালে ত্রিপুরার কৈলাসহরে জন্ম। প্রায় চার দশক যাবত তিনি নিয়মিত লেখালেখি করছেন। আগরতলা ও কলকাতার বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে ইতিমধ্যে তার ৪০টিরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ত্রিপুরা-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের ইতিহাস ভিত্তিক তার বিভিন্ন গ্রন্থ মননশীল পাঠকদের সপ্রশংস দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়ও সে-সব উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে। রাজন্য ত্রিপুরার ইতিহাস, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সম্পর্ক, লোকসংস্কৃতি বিষয়ক রচনা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সঞ্জাত ব্যতিক্রমী রচনা আবার কখনও স্থানীয় রাজনৈতিক ইতিহাস ইত্যাদি তাঁর গ্রন্থ সমূহের বিষয়বস্তু। সহজ সরল গদ্যে জটিল বিষয়ের উপস্থাপনই তাঁর কলমের বৈশিষ্ট্য।