বাকলের রং বেগুনি তবে কাগজের মতো পাতলা বাকল। ডিম্বাকার পাতাগুলো দেখলে মনে হবে যেন দই খাওয়ার কাঠের চামচ। পাতাগুলো বেশ মোটা ও রসালো। গাছ থেকে নিচের দিকে ঝুলন্ত শাখায় পাতাগুলোও নিচের দিকে মাথা করে ঝুলে থাকে। দুধিলতার ফুল জন্মায় পাতার কক্ষ থেকে। ফুলের পাঁচটা পাপড়ি থাকে, আর সাদা রঙের পাপড়িগুলোর মাঝে থাকে বেগুনি রঙের ছিটে। ফলে ফুলগুলো দেখতে খুব সুন্দর হয়। আর ফুলের পাপড়ির গায়ে থাকে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রোম।
আরও পড়ুন:
দুধি লতা ফল হয় ডিম্বাকার আর দু’’প্রান্ত খুব চাপা। ফলের গায়ে যেন লম্বালম্বি অনেক উঁচু নিচু ডোরা দাগ থাকে। ফল পাকলে ফেটে যায়। ফলের মধ্যে অনেক বীজ থাকে। দুটো ফল একটা বৃন্ত থেকে জন্মায়, ফলে পরিণত ফল দুটিকে দেখতে শিং-এর মতো দেখায়। সুন্দরবনের নদী, খাঁড়ি, খাল ইত্যাদির দু’পাশে ও জঙ্গলের মেঝেতে দুধি লতা প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। কখনও কখনও এই লতা ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়।
আরও পড়ুন:
আরও পড়ুন:
আরও পড়ুন:
পাতার বৃন্ত চার থেকে সাত মিলিমিটার লম্বা এবং বাঁকা। পাতার কিনারা ধরে হালকা লাল রংয়ের দাগ বা ছিটে মাঝে মাঝে দেখা যায়। পাতার কক্ষ থেকে পাঁচ-ছ’টি ফুল থোকা হয়ে ফোটে। ফুলগুলির বৃন্ত বেশ লম্বা – ১.২ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ফুলের রং বেগুনি। পাপড়ি গুলো গোড়ার দিকে জুড়ে থাকলেও আগার দিকে মুক্ত। ফুলের পাপড়ি ও বৃন্তের সংযোগস্থল অনেকটা মোটা হয়। জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ফুল ফোটে। তিন থেকে চার সেন্টিমিটার লম্বা ফলগুলো সরু ও লম্বাটে হয়। ফলের আগার দিকটা হয় সূচালো। পেকে গেলে ফল ফেটে যায়। ফলের মধ্যে বাতাসে ভেসে যাওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন অনেকগুলি বীজ থাকে। পঞ্চরতি লতার লবণ সহন ক্ষমতা বেশি নয়, তাই যে অঞ্চলে জোয়ার ভাটা কম খেলে সেখানেই এদের বসবাস।
* সৌম্যকান্তি জানা। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র। নিবাস কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। পেশা শিক্ষকতা। নেশা লেখালেখি ও সংস্কৃতি চর্চা। জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের জন্য ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল ২০১৬ সালে ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড’ এবং শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান লেখক হিসেবে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ ২০১৭ সালে ‘অমলেশচন্দ্র তালুকদার স্মৃতি সম্মান’ প্রদান করে সম্মানিত করেছে।