![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Sundarban-47.jpg)
(বাঁদিকে) গর্জন গাছের জঙ্গল। ফল-সহ গর্জন গাছ। ছবি: সংগৃহীত।
বাইন
সুন্দরবন হাজার সমস্যায় জর্জরিত হলেও এদের কোনও সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হয় না। অর্ধ-শতক আগে যেমন পুষ্প-পত্রশোভিত বাইন গাছের সারি দেখেছি, আজও তেমনই দেখছি। এরা অতিরিক্ত, মাঝারি বা কম লবণাক্ত সব রকম পরিবেশেই চমৎকার মানিয়ে নিতে পারে। তাই যে সব খালে আগে জোয়ার-ভাটা খেলত কিন্তু এখন বদ্ধ নালাতে পর্যবসিত হয়ে গেছে সেখানে আজও বাইন গাছ রয়েছে এবং নতুন গাছ জন্মাচ্ছে। পলি জমে কোনও চর তৈরি হলে বা নদী ও খাঁড়ির দু’পাশে ধানি ঘাসের পর দ্বিতীয় প্রজাতি হিসেবে এরাই হাজির হয়। অর্থাৎ বাইন হল সুন্দরবনের জন্মলগ্নের প্রজাতি। এরা বৃক্ষ হওয়ায় সুন্দরবনের অগ্রজ বৃক্ষ প্রজাতি (Pioneer treee species) হিসেবে বাইনকে বিজ্ঞানীরা স্বীকৃতি দিয়েছেন।
কোথাও কোথাও ধানি ঘাসের সঙ্গে বা আগেও বাইন গাছ জন্মে যায়। সারা বছর বাইন গাছ সবুজ পাতায় ভরা থাকে। মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে গাছ ভরে যায় বাসন্তী রঙের ফুলে। আম গাছে যেমন মুকুল আসে অনেকটা তেমনই মুকুল হয়। তখন শত-সহস্র মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে ওঠে বাইন-পাড়া। সুন্দরবনের মধুর অন্যতম প্রধান উৎস হল বাইন গাছ। বাইন ফুল থেকে প্রাপ্ত মধু তীব্র মিষ্টি নয়, আর সামান্য ঝাঁকালে ফেনা তৈরি হয়।
কালো বাইন (Avicennia alba)
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/04/Sundarban-46.jpg)
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪৬: সুন্দরবনের লৌকিক চিকিৎসায় ম্যানগ্রোভ—হরগোজা ও কেয়া
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/09/Health.jpeg)
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৮: চল্লিশ পার হলেই নিরামিষ?
লৌকিক চিকিৎসা
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Sundarban-47A.jpg)
(বাঁদিকে) পেয়ারা বাইন গাছ। (ডানদিকে) ফুলের কুঁড়ি-সহ পেয়ারা বাইনের শাখা। ছবি: লেখক।
জাত বাইন (Avicennia marina)
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/04/Girindramohini-Dasi-2024.jpg)
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২১: গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী—এক শক্তির গল্প
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Mahakavya-60.jpg)
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬১: মহাভারতের রাক্ষসরা কী আজও বর্তমান? প্রসঙ্গ— বকরাক্ষসবধ
লৌকিক চিকিৎসা
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Sundarban-47B.jpg)
(বাঁদিকে) জাত বাইন। (ডানদিকে) জাত বাইনের ফুল-সহ শাখা। ছবি: সংগৃহীত।
পেয়ারা বাইন (Avicennia officinalis)
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/04/Jyotirindranath-Tagore.jpg)
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৬: যন্ত্রণাদগ্ধ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ রাঁচিতে পেয়েছিলেন সান্ত্বনার প্রলেপ
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Pisach-Pahar-64F.jpg)
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৬৪: জঙ্গল বিপদে আছে…
লৌকিক চিকিৎসা
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2024/05/Sundarban-47c.jpg)
(বাঁদিকে) পুষ্পমঞ্জরীসহ কালো বাইনের শাখা। (ডানদিকে) কালো বাইন। ছবি: সংগৃহীত।
গর্জন (Bruguiera cylindrica)
ঝড়ে বা স্রোতের আঘাতে যাতে গাছ উপড়ে না যায়, তাই এমন ব্যবস্থা। গর্জন গাছের শ্বাসমূলগুলো হয় নলাকার এবং ৩০-৪০ সেমি লম্বা। বাকল ফাটলযুক্ত এবং ধূসর রঙের। ফুলের পাপড়ি সংখ্যায় আটটি এবং রং সাদা। ফুলের বৃতির রঙ ফ্যাকাশে সবুজ। বৃতিতে আটটি বৃত্যংশ থাকে যেগুলো গোড়ার দিকে যুক্ত ও আগার দিকে মুক্ত। জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম হয়, অর্থাৎ ফল গাছে থাকতেই বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয়। ২০-২৫ সেমি লম্বা বাঁকা সবুজ রঙের অঙ্কুর (বীজপত্রাবকাণ্ড) গাছে থাকা ফল থেকে বেরিয়ে এসে গাছেই ঝুলতে থাকে। দেখে মনে হবে গাছ থেকে অনের শসা ঝুলে আছে! গর্জন গাছের জঙ্গলের দৃশ্য এই সময় খুবই মনোরম। গর্জন কাঠ খুব শক্তপোক্ত হওয়ায় আসবার ও নৌকো তৈরি করার কাজে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানী হিসেবে এই কাঠের চাহিদাও বেশি। এর বাকলের অদ্ভুত এক গন্ধ আছে। শোনা যায়, বাকলের গন্ধে নাকি মাছেরা পালায়।