
(বাঁদিকে) পাতি সরালি ছানারা। (ডান দিকে) বাসায় পাতি সরালি। ছবি: সংগৃহীত।
কয়েকটি কারণে মনটা আজ ভীষণ খারাপ। টোটো থেকে নেমে নানা কথা চিন্তা করতে করতে বাড়ির দিকে হাঁটছিলাম। খেয়াল করিনি কখন বাড়ির গেটে পৌঁছে গিয়েছি। গেট খুলতে খুলতে অন্যমনস্কভাবে চোখ চলে গেল আমার বাড়ির ঠিক উল্টোদিকে ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা বাগানবাড়িটির মধ্যে ডোবার দিকে। ডোবার মাঝে একটা বড় থার্মোকলের টুকরো অনেকদিন থেকেই ভাসতে দেখেছি। সেই থার্মোকলের উপরে কী একটা পাখি যেন বসে আছে? এই ডোবাতে প্রতিদিন ডাহুক আর জলপিপিদের ঘোরাফেরা করতে দেখি। কিন্তু এটি তো ডাহুক বা জলপিপি নয়? পাখির মতো দেখতে অন্য কিছু নয় তো? গেট খুলতে গিয়েও খুললাম না। চার-পাঁচ পা এগিয়ে গেলাম বাগানবাড়ির পাঁচিলের দিকে। ভালো করে দেখে মনে হল হাঁস। জীবন্ত নাকি খেলনা? মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে রইলাম। একেবারে নট্ নড়নচড়ন। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বাম পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পকেট থেকে মোবাইল বের করে কয়েকটা ছবি তুললাম। মোবাইল হাতে নিতেই দেখি মাথাটা ঘুরিয়ে আমাকে একবার দেখল। নিশ্চিন্ত হলাম যে এটি অন্তত খেলনা নয়। ভালো করে লক্ষ্য করে বুঝলাম এ হল পাতি সরালি বা গেছো হাঁস।
ছোটবেলায় এদের প্রচুর দেখেছি আমাদের বড় পুকুরে। মাঠের মাঝে থাকা আরও অনেক পুকুরে ওদের অনেকবার দেখেছি। কিন্তু গত তিন-চার দশকে আমার নজরে কখনও আসেনি। প্রায় ভুলতে বসা এই বুনো হাঁসের প্রজাতিটিকে যে এভাবে এতদিন পরে দেখতে পাব কল্পনা করতে পারিনি। বিষাদগ্রস্ত মনটাকে কিঞ্চিৎ আশান্বিত করল পাতি সরালিটি। এবার দ্রুত ঢুকলাম বাড়িতে। ঝটপট বাইনোকুলারটা বার করে চোখে লাগালাম। হ্যাঁ কোনও সন্দেহ নেই এটি পাতি সরালি। ফের মোবাইল নিয়ে গেলাম পুকুরের কাছে। একটু ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে আরও কয়েকটা ছবি তুললাম ও ভিডিও করলাম। পাতি সরালিটার যেন কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। এতক্ষণ ঠায় এক পা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল। কয়েকটা ছবি তোলার পর সে আড়মোড়া ভেঙে তুলে রাখা ডান পা’টি একটু টান করে একটু নামালো। ঠিক সেই সময় আমার প্রতিবেশী তার স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে আমার সাথে দু-একটি কথা বলে যেই স্কুটিতে স্টার্ট দিল মনে হয় ওই শব্দে ভয় পেয়ে সেই ছোটবেলায় দেখা চেনা ভঙ্গিতে ডানায় শব্দ তুলে উড়ে গেল পুকুরের উল্টো পাড়ে নারকেল গাছে।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১১১: বিপদ যখন আসে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯৪: ‘মহেশ্বরের অনন্ত ধৈর্য’
পাতি সরালি আসলে এক ধরনের বন্য হাঁস। প্রায় সারা ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়। ইংরেজিতে এর নাম ‘Indian Whistling Duck’ বা ‘Lesser Whistling Teal’। বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘Dendrocygna javanica’। আকারে গৃহপালিত হাঁসের থেকে অনেকটা ছোট হলেও দেখতে গৃহপালিত হাঁসের মতোই। লম্বায় হয় প্রায় ৪২ সেন্টিমিটার। এদের পিঠের দিকে ডানার পালক দেখলে মনে হবে যেন মাছের আঁশ। প্রতিটি পালকের রঙ গাঢ় বাদামি কিন্তু প্রান্ত ইট-রঙা। ডানার পিছন দিকের পালকের রঙ গাঢ় ধূসর বা কালচে। লেজের উপরের দিকের রঙ লালচে বাদামি। মাথা, গলা, বুক অংশের রঙ লালচে সাদা বা পাঁশুটে সাদা হলেও পেটের পালকের রঙ কমলা বা ইটের মতো লাল। মাথার চাঁদির রঙ অনেকটা গাঢ়। চঞ্চুর রঙ কালো আর উপরের চঞ্চুর অগ্রভাগ নিচের দিকে সামান্য বাঁকা। জলের মধ্যে ডুবে খাবার ধরার জন্য এমন চঞ্চু বলেই মনে হয়। পায়ের রঙও কালো। গৃহপালিত হাঁসের মতোই সামনের তিনটে আঙুল পাতলা চামড়ার সাহায্যে জুড়ে লিপ্তপদে পরিণত হয়েছে। লিপ্তপদ সাঁতার কাটার উপযোগী হলেও এরা এই পায়ের সাহায্যে গাছের শাখায় দিব্যি বসতে পারে কিংবা হেলে দুলে মাটির উপর হাঁটতেও পারে। কুচকুচে কালো দুটো চোখ ঘিরে রয়েছে হলুদ রঙের সরু বর্ডার।
স্ত্রী কিংবা পুরুষ পাতি সরালি বহিরাকৃতিগতভাবে একই রকম দেখতে। ডানা দুটোকে একসাথে দ্রুত ঝাপটা দিয়ে উড়লেও ওড়ার গতি অনেকটাই মন্থর। আর যখন এরা উড়ে যায় তখন মাথার অবস্থান থাকে দেহের তুলনায় সামান্য নিচে। দলবদ্ধভাবে এরা যখন জলের ওপর ভাসে তখন সে দৃশ্য হয় খুব সুন্দর। আলিপুর চিড়িয়াখানার মধ্যে থাকা জলাশয়ে এদেরকে বহুবার দলবদ্ধভাবে ভাসতে দেখেছি। এরা কিন্তু জলে খুব দ্রুত সাঁতার কাটতে ওস্তাদ। আবার জলের নিচে ৬ থেকে ৮ ফুট ডুব দিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে পটু। প্রতিবার ডুব দিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড জলের মধ্যে থাকতে পারে। খাবারের তালিকায় মুখ্যত শামুক, ঝিনুক, মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি থাকলেও নানা জলজ পোকামাকড় এমন কি জলজ উদ্ভিদ খেতেও দেখা গিয়েছে।
স্ত্রী কিংবা পুরুষ পাতি সরালি বহিরাকৃতিগতভাবে একই রকম দেখতে। ডানা দুটোকে একসাথে দ্রুত ঝাপটা দিয়ে উড়লেও ওড়ার গতি অনেকটাই মন্থর। আর যখন এরা উড়ে যায় তখন মাথার অবস্থান থাকে দেহের তুলনায় সামান্য নিচে। দলবদ্ধভাবে এরা যখন জলের ওপর ভাসে তখন সে দৃশ্য হয় খুব সুন্দর। আলিপুর চিড়িয়াখানার মধ্যে থাকা জলাশয়ে এদেরকে বহুবার দলবদ্ধভাবে ভাসতে দেখেছি। এরা কিন্তু জলে খুব দ্রুত সাঁতার কাটতে ওস্তাদ। আবার জলের নিচে ৬ থেকে ৮ ফুট ডুব দিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে পটু। প্রতিবার ডুব দিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড জলের মধ্যে থাকতে পারে। খাবারের তালিকায় মুখ্যত শামুক, ঝিনুক, মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি থাকলেও নানা জলজ পোকামাকড় এমন কি জলজ উদ্ভিদ খেতেও দেখা গিয়েছে।

(বাঁদিকে) উড়ন্ত পাতি সরালির দল। ছবি: সংগৃহীত। (ডান দিকে) আমার বাড়ির সামনে ডোবায় বিশ্রামরত পাতিসরালি। ছবি: লেখক।
পাতি সরালি জলাশয়ের আশেপাশে বাসা বাঁধে। জলাশয়ের পাশে তাই ঝোপঝাড় থাকা খুব জরুরি। শুকনো লতাপাতা, ঘাস ইত্যাদি দিয়ে ঝোপঝাড়ের মধ্যে বাসা বানায়। তবে অল্প উচ্চতায় জলাশয়ের পাশে থাকা কোনও বৃক্ষের কোটরে কিংবা কাক, চিল ইত্যাদির পরিত্যক্ত বাসায় এদের ডিম পাড়তে দেখা গেছে। নারকেল গাছেও বাসা করতে দেখা যায়। আমাদের গ্রামের বাড়ির বড় পুকুরের পাড়ে থাকা নারকেল গাছে পাতি সরালির বাসা ছিল। অবশ্য আজ যে পাতি সরালিটিকে দেখলাম সেটি সম্ভবত পুকুরের পাড়ে থাকা ঘন ঝোপের মধ্যেই বাসা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯৬: পরাগপাখি

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫৪: গ্রীষ্মকালে আলাস্কা সত্যিই অচেনা এক দেশ
পাতি সরালির ডানায় প্রান্তের বড় পালক গুলো বিশেষ আকারের হয়। এই ধরনের পালক গুলোর জন্যই যখন পাতি সরালি ওড়ে তখন ডানা থেকে বাঁশির মতো একপ্রকার তীব্র শিসধ্বনি ‘শিশিক- শিশিক’ সৃষ্টি হয়। আবার এরা যখন জলের ওপর ভাসতে ভাসতে নিজেদের শরীর সাফসুতরো করে তখন মাথা ডুবিয়ে পিঠে জল ছেটানোর সঙ্গে সঙ্গে দুটো ডানা ঝাপটা দেয়। আর তখন এই পালকের জন্যই ডানা থেকে দরজায় দ্রুত কড়া নাড়ার মতো একপ্রকার শব্দ তৈরি হয়। আর মুখে এরা খুব বেশি শব্দ না করলেও দলবদ্ধভাবে থাকার সময় মাঝে মাঝে ‘সিউ-ই সিউ-ই’ করে ডাকে। যখন জলে সাঁতার কাটে এবং জলের ভাসমান কোনও বস্তুর ওপর উঠে কিংবা ডাঙ্গায় বিশ্রাম নেয় তখন এরা সদা সতর্ক থাকে। থেকে থেকেই ডাঁয়ে বাঁয়ে মাথা ঘুরিয়ে বিপদ আছে কিনা আন্দাজ করার চেষ্টা করে। দিনের বেলায় এদের বেশিরভাগ সময় বিশ্রামরত অবস্থায় দেখা গেলেও খাবার সংগ্রহ করা শুরু করে সন্ধ্যে হলে। পাতি সরালি মূলত নিশাচর হাঁস। তবে আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু পুরোপুরি তা বলছে না। আমি আজ একে দেখলাম বিকেল চারটে নাগাদ। তখন রীতমতো চড়া রোদ। যদিও ডোবার চারিদিকে প্রচুর গাছ ও ঝোপ থাকায় ডোবায় সরাসরি রোদ পড়ে না। তাছাড়া আমি যেহেতু বিশ্রাম নিতে দেখেছি তাহলে সে নিশ্চয়ই আরও কিছুক্ষণ আগে থেকে খাবার-দাবার সংগ্রহের কাজ করেছে।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১১০: বনবাসী রামের নিরাসক্ত ভাবমূর্তির অন্তরালে, ভাবি রামরাজ্যের স্রষ্টা দক্ষ প্রশাসক রাম

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫৪: গ্রীষ্মকালে আলাস্কা সত্যিই অচেনা এক দেশ
পাতি সরালির প্রজনন ঋতু সাধারণত বর্ষাকাল। এই সময় পুরুষ পাতি সরালি স্ত্রী হাঁসকে ঘিরে চক্রাকারে সাঁতার কাটতে কাটতে বারবার জলে চঞ্চু ডোবায় ও তোলে। স্ত্রী পাতি সরালি এক এক বারে ৭ থেকে ১২টি ডিম পাড়ে। তারপর স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ে মিলে ডিমে তা দেয়। তবে নাকি কখনও কখনও ১৭ টা পর্যন্ত ডিম দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের ধারণা অন্য কোনও পাতি সরালি এসে ডিম পেড়ে গিয়েছে। ২২ থেকে ২৪ দিন তা দেওয়ার পর ডিম ফুটে বাচ্চারা বেরিয়ে আসে। সমস্ত বুনো হাঁসের বৈশিষ্ট্যের মত মা ও বাবা পাতি সরালি বাচ্চাদের খাবার খাইয়ে দেয় না। তবে বাচ্চারা বাবা-মায়ের তত্ত্বাবধানে থেকে প্রথম থেকেই জলে সাঁতার কেটে খাবার সংগ্রহ করে। আবার কখনও কখনও অসাধারণ এক দৃশ্য দেখা যায়— বাবা বা মা পাতি সরালির পিঠে চেপে বাচ্চা জলাশয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পাতি সরালি বদ্ধ অবস্থায় ৯ বছর পর্যন্ত বাঁচতে দেখা গিয়েছে।

(বাঁদিকে) পাতি সরালি। (ডান দিকে) জলাশয়ে অবতরণরত পাতি সরালির ঝাঁক। ছবি: সংগৃহীত।
পাতি সরালি পুরোপুরি পরিযায়ী পাখি না হলেও স্থানীয়ভাবে পরিযায়ী পাখি বলা যায়। এরা গ্রীষ্মকালে ছোটো জলাশয় বা ধানের ক্ষেতে একক বা ছোটো দল হিসেবে চলে এলেও শীতের সময় নদী, হ্রদ বা বিলে ঝাঁক বেঁধে আশ্রয় নেয়। জানা গেছে গত শতাব্দীর ৩০-এর দশকে আলিপুর চিড়িয়াখানার জলাশয়ে কয়েকটি পোষা পাতি সরালি ছাড়া হয়েছিল। আর পরে তাদের সূত্রেই ঝাঁক ঝাঁক বুনো পাতি সরালি ফি বছর শীতে ওই জলাশয়ে হাজির হত।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৯: সে এক স্বপ্নের ‘চাওয়া পাওয়া’

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৭৬: পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যাঁর জীবনের আকাশে কখনও শত্রুতার মেঘ জমেনি
দিকে দিকে যেভাবে জলাভূমি বুজিয়ে বাড়ি, হোটেল, দোকান, বাজার তৈরি হচ্ছে তাতে পাতি সরালিরা থাকবে কোথায়? ধানক্ষেতেও যেভাবে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে তাতে সেখানেও ওদের খাবার মিলছে না। জলাশয়ের পাশে ঝোপঝাড় না থাকলে ওরা বাসা বাঁধবেই বা কোথায়? আর তাই কি ওরা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে? যদিও আইইউসিএন ‘IUCN’ জানাচ্ছে যে ওদের বিপন্নতা নিয়ে কোনও তথ্য নেই তবুও আমি নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বলতে পারি সুন্দরবনের বসতি এলাকায় পাতি সরালিরা বিপন্ন।

(বাঁদিকে) জলাভূমিতে পাতিসরালি। (ডান দিকে) উড়ন্ত পাতি সরালি। ছবি: সংগৃহীত।
শেষে একটা কথা সংযোজন করি। এ হল তিন-চার দশক পর পাতি সরালিকে দেখার ঠিক একদিন পরের কথা। সকালে ঘুম থেকে উঠে গেটের তালা খুলতে গিয়ে স্বভাবগতভাবে চোখ গেল ওই ডোবার দিকে। দেখি, একটা পাতি সরালি আপনমনে গুঁড়িপানার মধ্যে চঞ্চু ডুবিয়ে খাবার খুঁজছে। দু’দিন আগে দেখা সেই পাতি সরালিটি কিনা বোঝার উপায় নেই কিন্তু ডোবায় ওই একটাই ছিল। মন বলছিল ও সেটাই। তখন সকাল সওয়া সাতটা। তাহলে পাতি সরালি সকালেও খাবারের খোঁজে বেরোয় জানা গেল। দৌড়ে বাড়ির মধ্যে গিয়ে মোবাইলটা নিয়ে এলাম ছবি তোলার জন্য। কিছু ছবি তুললামও। বেশ কিছুক্ষণ ওর খাবার সংগ্রহ লক্ষ্য করে বাড়ির মধ্যে চলে এলাম। আটটা নাগাল ফের ডোবার কাছে গিয়ে দেখি সে চলে গিয়েছে। আমার বাড়ির সামনে ওই ডোবাসহ জায়গার মালিক কলকাতায় থাকেন বলে পাঁচিল ঘেরা প্রায় ১০ কাঠা ওই বাগানবাড়ি ঝোপ জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। তাই ওখানে নানা পাখির আনাগোনা। কিন্তু কাকদ্বীপের মতো আধা শহরের মাঝে এমন পোড়ো বাগানবাড়ি কতদিন আর এ ভাবে থাকবে? বিক্রি হবেই। আর তখন? কথাটা ভেবেই মনটা আবার বিষন্ন হয়ে গেল।—চলবে।
* সৌম্যকান্তি জানা। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র। নিবাস কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। পেশা শিক্ষকতা। নেশা লেখালেখি ও সংস্কৃতি চর্চা। জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের জন্য ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল ২০১৬ সালে ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড’ এবং শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান লেখক হিসেবে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ ২০১৭ সালে ‘অমলেশচন্দ্র তালুকদার স্মৃতি সম্মান’ প্রদান করে সম্মানিত করেছে।