
(বাঁদিকে) খাবার সংগ্রহরত চড়ুই। (ডান দিকে) স্ত্রী চড়ুই। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুল জীবনে আমরা প্রত্যেকেই পড়েছি বাবুই ও চড়াইয়ের কথোপকথনে চড়াইয়ের অহংকার — “আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে / তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।” কিন্তু চড়াইয়ের মহাসুখ এখন পর্যবসিত হয়েছে মহা দুঃখে। শৈশব থেকে আমাদের সুন্দরবন অঞ্চলের বসতি এলাকায় সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে চড়াই পাখি দেখে এসেছি। আমাদের মাটির বাড়ির টালির চালের ফোকরে চড়াই পাখির বাসা ছিল। উঠোনের রোদে ধান বা চাল মেলে দিলে ঝাঁক বেঁধে হাজির হত। মাঠে ধান পাকলে এবং ধান কেটে মাঠের উপর বিছিয়ে রাখলে হাজির হয়ে যেত চড়ুই এর দল। তাদের সমবেত কিচমিচ শব্দে ঝালাপালা হত কান। কিন্তু গত তিন দশক ধরে ওদের সংখ্যা কমতে কমতে এখন কদাচিৎ ওদের দেখতে পাই, তাও আবার গঞ্জ ও শহর এলাকায়। তবে এই চিত্র কেবল সুন্দরবন অঞ্চলের নয়, প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষের। অত্যন্ত দ্রুত হারে কমে যাচ্ছে চড়াই পাখির সংখ্যা। গ্রীষ্মের অলস দুপুরে উঠোনে কিংবা ঘরের চালে চড়াই পাখিদের সমবেত কিচির মিচির আর শোনা যায় না।
চড়াই পাখি খুবই ছোটখাটো পাখি। লেজ-সহ লম্বায় হয় মাত্র ৬ ইঞ্চি। আর ওজন ২৪ থেকে ৩৯ গ্রাম। চড়াই এর যৌন দ্বিরূপতা দেখা যায়, অর্থাৎ স্ত্রী ও পুরুষ দেখে চেনা যায়। অপরিণত আর স্ত্রী চড়াই অনেকটা একই রকম দেখতে। এদের পিঠ বাদামি ও ধূসর রঙের। এদের ভ্রু আর চাঁদির মাঝখানে একটা সাদা সরু দাগ থাকে আর চোখের ঠিক পেছনে একটা ছোট সাদা ছোপ থাকে। পিঠের উপরের অংশে কালো এবং ফিকে বাদামি অনেকগুলো দাগ থাকে। ডানার রঙও বাদামি, আর তার ওপর লালচে দাগ। লেজের রং হয় গাঢ় বাদামি কিন্তু প্রান্তের দিকটা হয় ফিকে। লেজের নিচের দিকের পালকের রং হয় হালকা ধূসর। পুরুষ পাখির দেহে উজ্জ্বল কালো, বাদামি ও ধূসর দাগ দেখা যায়। পিঠ জুড়ে বাদামি ও ধূসর রঙের ওপর কালো কালো ছোট দাগ রয়েছে। ডানার পালকের রং গাঢ় বাদামি ও তার উপর কয়েকটা কালো রেখা দেখা যায়। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে ডানার ওপর দুটি আড়াআড়ি লম্বা সাদা টান থাকে। পুরুষের কোমরের কাছে রঙ হয় ধূসর।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৮২: সুন্দরবনের পাখি—টিয়া

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০৫: রবীন্দ্রনাথ ভয় পেতেন মহর্ষিদেবকে
পুরুষের লেজ হয় গাঢ় কালচে রঙের আর প্রান্তের দিক হয় ফ্যাকাশে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় চড়াইয়ের চঞ্চু হয় ছোট ও মোটা, অনেকটা শঙ্কুর মতো। লম্বায় হয় ১ ইঞ্চি থেকে ১.৫ ইঞ্চি। চঞ্চুর রঙ হয় কালো। চঞ্চুর গোড়া থেকে একটা কালো দাগ চোখকে বেষ্টন করে ঘাড় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। আবার নিচের চঞ্চুর গোড়া থেকে কালো টান গলা হয়ে বুক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এই দাগটা দেখলে মনে হবে যেন কালো কালিতে দেওয়া বুড়ো আঙ্গুলের টিপছাপ। পুরুষ চড়াইয়ের দু’দিকের গাল বুক ও পেটের রঙ হয় সাদা। স্ত্রীর ক্ষেত্রে হয় ফ্যাকাশে সাদা। প্রজননকালে পুরুষের চঞ্চুর রঙ কালো হলেও অ-প্রজননকালে ফ্যাকাশে কালো বা তার ওপর হলদেটে ছোপ দেখা যায়। পা দুটো হয় মেটে রঙের। তবে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই মাথার চাঁদির রং হয় ধূসর এবং চাঁদির দু’পাশে বাদামি রঙের ছোপ দেখা যায়। সাধারণভাবে স্ত্রী চড়াই পাখি পুরুষের তুলনায় সামান্য ছোট হয়।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৯৭: পাঞ্চালীকে আশীর্বাদ করে আলিঙ্গনাবদ্ধ করলেন গান্ধারী

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৮০: শ্রীশ্রীমার অনুগ্রহ
চড়াই পাখি বিভিন্ন রকমের শস্য তো খায় অবশ্যই, তা ছাড়াও বিভিন্ন পোকামাকড়, ফুলের মধু, ছোটখাট পাকা ফল, এমনকি রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া আবর্জনা থেকেও এটা-সেটা বেছে খায়। হ্যাঁ, একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছি, ছোটোবেলা দেখতাম রেশন আর মুদি দোকানে চড়াই পাখিদের সংখ্যা সব সময় বেশি দেখা যায়। এই দুই দোকানের আশপাশ চড়াই পাখির কিচিমিচিতে সবসময় সরগরম হয়ে থাকত। অবশ্য এখন আর এদের দেখতে পাই না। এদের আওয়াজও একরকম নয়। বেশিরভাগ সময় ‘চড়বড় চড়বর’ … ‘চিক চিক’ … ‘চিরিপ চিরিপ’ … ‘চিশিক চিশিক’ …. ইত্যাদি নানা রকমের আওয়াজ করে। তবে প্রজননকালে ডাকের তীক্ষ্ণতা বেশি হয় আর ডাকটাও সামান্য পাল্টে যায়। এই সময় অঙ্গভঙ্গিও একটু ভিন্ন রকম হয়—যেমন গায়ের পালক ফোলানো, ডানা দুটো ওপর-নিচ করা বা লেজ ঝাঁকানো ইত্যাদি।

(বাঁদিকে) বাসায় চড়ুইয়ের ডিম। (ডান দিকে) পুরুষ চড়ুই। ছবি: সংগৃহীত।
এদের কোনও নির্দিষ্ট প্রজনন ঋতু নেই। যে-কোনও সময়েই এরা ডিম পাড়ে। বছরে একাধিকবার ডিম পাড়তে দেখা যায়। তবে বেশিরভাগ সময় এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ডিম পাড়ে। স্ত্রী আর পুরুষ চড়াই একবারই জোড় বাঁধে। এদের মধ্যে বহুগামীতা খুব কম দেখা যায়। যেসব চড়াই সঙ্গী খুঁজে পায় না তারা যে সব জোড় বাসা তৈরি করে ও বাচ্চাদের লালন পালন করে তাদের সাহায্য করে। বাসা তৈরিতে মূলত পুরুষ চড়াইরাই মুখ্য ভূমিকা নেয়। স্ত্রী চড়াইরা সামান্য সাহায্য করে। এদের বাসা দেখতে সুন্দর না হলেও জেলেদের কোমরে বাঁধা খাঁচার মতো দেখতে বাসা তিনটে স্তর যুক্ত হয়। বাইরের স্তরে থাকে গাছের শুকনো শিকড় ও সরু ডালপালা। মাঝের স্তরে থাকে শুকনো ঘাস-পাতা। আর ভেতরের স্তরে থাকে পালক, কাগজ, তুলো, ছেঁড়া ন্যাকড়া ইত্যাদি। স্ত্রী চড়ুই এক এক বারে ৪-৬টি ডিম পাড়ে।
আরও পড়ুন:

ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৪৫: শিক্ষা-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষতায় বীরবিক্রম

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯৭: ভাগ নুনিয়া, ভাগ
ডিমের রং সাদা বা নীলচে সাদা বা হালকা সবুজ। ডিমের ওপর হালকা ধূসর ছিট থাকে। ২০ থেকে ২২ মিলিমিটার লম্বা হয় এক একটি ডিম। স্ত্রী চড়াই যখন ডিমে তা দেয় পুরুষ তখন আশেপাশে থেকে পাহারা দেয়। ১১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চারা বেরিয়ে আসে। বাচ্চাদের খাওয়ানোর দায়িত্ব বাবা-মা উভয়ই নেয়। বাচ্চারা ১৪ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে উড়তে শিখে যায়। এদের বাচ্চাদের মৃত্যুহার কিন্তু যথেষ্ট বেশি কারণ চড়াইয়ের বাচ্চা বিড়াল, সাপ বা বিভিন্ন শিকারি পাখির খাদ্যে পরিণত হয়।
যে চড়াই পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই ছড়িয়ে পড়েছিল তারা কীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী জুড়ে নানা এলাকা থেকে? কেন এত দ্রুত প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টির ভবিষ্যৎ হয়ে গেল এতটা বিপন্ন? চড়াই যে কমছে তা বিজ্ঞানীদের নজরে আসে প্রথম ১৯৯০ সালে। নেচার ফর এভার সোসাইটির তত্ত্বাবধানে একটি নাগরিক বিজ্ঞান কর্মসূচি নেওয়া হয়। যার পোশাকি নাম ‘Common Birds Monitoring of India’ (CBMI)। এই কর্মসূচিতে ২০১২ সালে দেশজুড়ে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তা থেকে জানা গেছে যে ভারতবর্ষে মধ্য, পূর্ব ও পূর্ব-মধ্য অংশে চড়াই পাখির সংখ্যা ব্যাপক হারে কমেছে। এই এলাকায় এদের বাসার সংখ্যাও কমেছে। আর ভারতের পূর্ব অংশে তো আমাদের সুন্দরবনও রয়েছে।
যে চড়াই পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই ছড়িয়ে পড়েছিল তারা কীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী জুড়ে নানা এলাকা থেকে? কেন এত দ্রুত প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টির ভবিষ্যৎ হয়ে গেল এতটা বিপন্ন? চড়াই যে কমছে তা বিজ্ঞানীদের নজরে আসে প্রথম ১৯৯০ সালে। নেচার ফর এভার সোসাইটির তত্ত্বাবধানে একটি নাগরিক বিজ্ঞান কর্মসূচি নেওয়া হয়। যার পোশাকি নাম ‘Common Birds Monitoring of India’ (CBMI)। এই কর্মসূচিতে ২০১২ সালে দেশজুড়ে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তা থেকে জানা গেছে যে ভারতবর্ষে মধ্য, পূর্ব ও পূর্ব-মধ্য অংশে চড়াই পাখির সংখ্যা ব্যাপক হারে কমেছে। এই এলাকায় এদের বাসার সংখ্যাও কমেছে। আর ভারতের পূর্ব অংশে তো আমাদের সুন্দরবনও রয়েছে।
আরও পড়ুন:

শ্যাম বেনেগল সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে পারতেন

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৭০: অনিশ্চিত ফলের পিছনে না ছুটে নিশ্চিত ফল-প্রদায়ক কাজের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত
কেন চড়াই কমে যাচ্ছে তার বেশ কিছু কারণ পক্ষীবিজ্ঞানী ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন। যেমন—
● এক: পুরনো আমলের ঘরবাড়ি ছিল চড়াইদের আদর্শ বাসস্থান। পুরনো বাড়িগুলোতে ভেন্টিলেটর, ফোকর, ঘুলঘুলি ইত্যাদি থাকত। টালির বাড়িও অনেক দেখা যেত। টালির ফাঁকে কিংবা পুরনো আমলের পাকা বাড়ির ভেন্টিলেটর, ফোকর, ফাটল ইত্যাদিতে ওরা নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে বাসা বানাত ও সন্তান প্রতিপালন করত। কিন্তু এখন আধুনিক মডেলের পাকা বাড়িতে ঘুলঘুলি, ফাটল বা ফোকর থাকে না। টালির বাড়িও কমেছে। পুরনো দিনের বাড়ি ভেঙে তৈরি হচ্ছে বহুতল বাড়ি কিংবা শপিংমল বা মাল্টিপ্লেক্স। এখন বাড়ির জানালা হয় কাচের বা ফাইবারের। ফলে ঘরের ভেতর চড়াইদের অনধিকার প্রবেশের আর সুযোগ নেই। তাছাড়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাড়িগুলোতে চড়াইদের প্রবেশ করা যেমন দুঃসাধ্য উষ্ণতার পরিবর্তন জনিত কারণে আশেপাশে বসবাস করাও কঠিন। প্রযুক্তির বিড়ম্বনা তাই ওদের বাসস্থান কেড়ে নিয়েছে।
● দুই: কৃষিকাজে ব্যাপকহারে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার চড়াইদের ধ্বংস ত্বরান্বিত করছে। কীটনাশকের প্রভাবে নরম ত্বক বিশিষ্ট কীটপতঙ্গ ব্যাপক পরিমাণে ধ্বংস হচ্ছে। আর এই ধরনের কীটপতঙ্গ চড়াইদের অন্যতম খাদ্য। চড়াই শাবকদের জন্য মা চড়াই এই ধরনের কীটপতঙ্গ ধরে আনে। ফলে শৈশব থেকে চড়াইরা খাদ্যাভাবের সাথে সাথে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। আবার চড়াইয়ের প্রিয় দানাশস্যে কীটনাশক থাকায় এই খাদ্যের মাধ্যমেও বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
● তিন: আরও একটি কারণে খাদ্যাভাবের শিকার হচ্ছে চড়াইরা। আগে মাঠে প্রচুর দানাশস্য বোনা হত। খামারে বা উঠোনে শুকোতে দেওয়া হত। সেই সব দানা থেকে চড়াইরা তাদের খিদে মেটাত। এখন কৃষিকাজ কমেছে। দানাশস্যকে পাখিদের থেকে রক্ষা করার জন্য নানা পদ্ধতি উদ্ভাবিত হচ্ছে। দানা শস্যের দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ হয়ে যাচ্ছে। ফলে চড়াইরা এখন আর প্রয়োজনমতো দানাশস্য খেতে পাচ্ছে না।
● চার: যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা মোবাইলের টাওয়ার চড়াইদের অবলুপ্তির অন্যতম কারণ বলে বহু বিজ্ঞানী দাবি করেছেন। ৯০০ থেকে ১৮০০ মেগাহার্টজ কম্পাঙ্কের তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ নির্গত হয় মোবাইলের টাওয়ার থেকে। এই তরঙ্গ পাখির শরীরে ঢুকে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে বলে বিজ্ঞানীদের দাবি। ফলে তাদের ওড়ার ক্ষমতা কমে যায়। তারা খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে না।

(বাঁদিকে) বাসায় চড়ুই শাবক। (ডান দিকে) চড়ুইয়ের বাসা। ছবি: সংগৃহীত।
সমীক্ষকরা দেখেছেন, যেসব পাখি মোবাইল টাওয়ারের কাছে বাসা বানায় তারা এক সপ্তাহের মধ্যেই বাসা ছেড়ে পালায়। এক বিশেষ সমীক্ষায় দেখা গেছে চড়াইয়ের ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোতে যেখানে ১০ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে টাওয়ারের কাছাকাছি থাকা বাসায় ৩০ দিন পরেও ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোয় না। এছাড়াও তৃণভূমির পরিমাণ হ্রাস এবং পৃথিবীর আবহমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধিও চড়াই পাখির অবলুপ্তিকে ত্বরান্বিত করছে।
চড়াই পাখির অবলুপ্তি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষী সংগঠন, পরিবেশ সংগঠন ও প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। নেচার ফর এভার সোসাইটি, বুরহানি ফাউন্ডেশন (ইন্ডিয়া)-র সঙ্গে যৌথভাবে SOS (Save Our Sparrow) নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ১৯৯২ সালে দিল্লির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত চড়াই পাখিকে মর্যাদা দিয়ে দিল্লির রাজ্য পাখি হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ভারতের ডাকবিভাগ চড়াই পাখির ছবি সমন্বিত ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে। প্রতি বছর ২০ মার্চ রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণা অনুযায়ী পালিত হচ্ছে বিশ্ব চড়াই দিবস (World Sparrow Day)।
কয়েক বছর আগে চড়াই পাখিদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমার বাড়ির বাইরে দেয়ালে কয়েকটি কৃত্রিম বাসা স্থাপন করি। বাসাগুলি চড়াই পাখির বসবাসের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু দুঃখের কথা আজও একটি চড়ুই পাখি ওই বাসায় আশ্রয় নেয়নি। সত্যি কথা বলতে কি, সুন্দরবনের বসতি এলাকার বিচ্ছিন্ন কিছু জায়গায় নজরে এলেও আমার নিজের এলাকায় গত তিন দশকে একটি চড়াই পাখিও নজরে পড়েনি। কোনও এলাকা থেকে যদি চড়াই পাখি সত্যিই বিলুপ্ত হয়ে যায় তাহলে বাসা থাকা বা না থাকার উপরে কী নির্ভর করে! আর তাই আজও বাসাগুলো আমা বাড়ির দেয়ালে অপেক্ষা করে আছে চড়াইদের প্রতীক্ষায়।—চলবে।
চড়াই পাখির অবলুপ্তি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষী সংগঠন, পরিবেশ সংগঠন ও প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। নেচার ফর এভার সোসাইটি, বুরহানি ফাউন্ডেশন (ইন্ডিয়া)-র সঙ্গে যৌথভাবে SOS (Save Our Sparrow) নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ১৯৯২ সালে দিল্লির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত চড়াই পাখিকে মর্যাদা দিয়ে দিল্লির রাজ্য পাখি হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১০ সালের ২০ মার্চ ভারতের ডাকবিভাগ চড়াই পাখির ছবি সমন্বিত ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে। প্রতি বছর ২০ মার্চ রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষণা অনুযায়ী পালিত হচ্ছে বিশ্ব চড়াই দিবস (World Sparrow Day)।
কয়েক বছর আগে চড়াই পাখিদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমার বাড়ির বাইরে দেয়ালে কয়েকটি কৃত্রিম বাসা স্থাপন করি। বাসাগুলি চড়াই পাখির বসবাসের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু দুঃখের কথা আজও একটি চড়ুই পাখি ওই বাসায় আশ্রয় নেয়নি। সত্যি কথা বলতে কি, সুন্দরবনের বসতি এলাকার বিচ্ছিন্ন কিছু জায়গায় নজরে এলেও আমার নিজের এলাকায় গত তিন দশকে একটি চড়াই পাখিও নজরে পড়েনি। কোনও এলাকা থেকে যদি চড়াই পাখি সত্যিই বিলুপ্ত হয়ে যায় তাহলে বাসা থাকা বা না থাকার উপরে কী নির্ভর করে! আর তাই আজও বাসাগুলো আমা বাড়ির দেয়ালে অপেক্ষা করে আছে চড়াইদের প্রতীক্ষায়।—চলবে।
* সৌম্যকান্তি জানা। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র। নিবাস কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। পেশা শিক্ষকতা। নেশা লেখালেখি ও সংস্কৃতি চর্চা। জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের জন্য ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল ২০১৬ সালে ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড’ এবং শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান লেখক হিসেবে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ ২০১৭ সালে ‘অমলেশচন্দ্র তালুকদার স্মৃতি সম্মান’ প্রদান করে সম্মানিত করেছে।