(বাঁদিকে) মধুর খোঁজে টুনটুনি। (মাঝখানে) টুনটুনির বাসা। (ডান দিকে) বিশ্রামরত টুনটুনি। ছবি: সংগৃহীত।
২০১৫ সালের আগস্ট মাস।নতুন বাড়ি তৈরি করে গ্রাম থেকে হয়েছি শহরবাসী। গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানের রাতে প্রথম রাত কাটালাম নতুন বাড়িতে। শুয়েছিলাম দোতলার একটা ঘরে। আমার বাড়ির দু’পাশেই নীচু জলা জায়গা। বর্ষাকালে সামান্য জল জমে থাকলেও অন্য সময় জল থাকে না, তবে মাটি ভেজা থাকে। সেখানে ভর্তি কচুরিপানা। দেখলে মনে হবে যেন কচুরিপানা ভরা পুকুরের ওপর ভাসছে বাড়িখানা। আর আশপাশের বাড়িতেও প্রচুর গাছপালা। শহর হলেও আমার বাড়ির পরিবেশ অনেকটা গ্রামের মতো। এই কারণে বাড়ি বানানোর জন্য এই এলাকাটা নির্বাচন করি। যাইহোক, সকালের সূর্যের ঝকঝকে আলো জানালা দিয়ে চোখে পড়তেই ঘুম ভাঙল। কিন্তু গতদিনের পরিশ্রমের ধকলে চোখ খুলতে ইচ্ছে করছিল না। জানালাটা খোলাই ছিল। কানে এল ‘টু-ইট টু-ইট টু-ইট’ আওয়াজ। একটা নয়, এরকম অনেক আওয়াজ আশপাশ থেকে আসছিল। কী পাখি? পাখির এমন ডাক তো শুনিনি আগে! আমাদের গ্রামের বাড়িতে থাকতেও কোনওদিন এই ডাক শুনিনি। জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে নীচে দেখার চেষ্টা করলাম। কিছু দেখা গেল না। তারপর নানা ব্যস্ততায় দিন গেল কেটে।
পরের দিন সকালেও যখন ঘুম ভাঙল তখনও সেই ‘টু-ইট টু-ইট’ ডাক কানে এল। বুঝলাম কচুরিপানার ঝোপের মধ্যে থেকেই শব্দ আসছে। উঠে বসলাম। দেখতেই হবে। ভালো করে চেয়ে রইলাম কচুরিপানার ঝোপে। হঠাৎ নজরে এল একটা ছোট্টো পাখি কচুরিপানার মধ্যে লাফাচ্ছে। পাশে দেখি আরও একটা। চড়ুইয়ের থেকেও ছোটো সাইজ। পাখি দুটোর মাথা আর পিঠ দেখা যাচ্ছিল। মাথার রঙ মরচে-লাল, আর পিঠের রঙ হলদে-সবুজ। লেজটা খাড়া করে ক্রমাগত ডেকে চলছিল আর লাফাচ্ছিল। দেখলাম, প্রত্যেকবার ডাকার সময় মাথা আর লেজ খাড়া করছে। এ পাখি তো আমি গ্রামে থাকতে কখনও দেখিনি। তবে এ পাখির ছবি মনে হয় আমি দেখেছি। স্মৃতিটাকে একটু ঝালিয়ে নিলাম। টুনটুনিই হবে। দ্রুতপায়ে উঠে এসে বই খুলে মিলিয়ে নিলাম। আমার আর সন্দেহ রইল না।
টুনটুনির নাম শোনেনি এমন বাঙালি একটাও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। সৌজন্য উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরি। ছোটোবেলা সবার মুখে মুখে ফিরত ‘রাজার ঘরে যে ধন আছে/ টুনির ঘরেও সে ধন আছে!’ কিংবা ‘কে ভাই? টুনিভাই? এস ভাই! বস ভাই! খাট পেতে দি, ভাত বেড়ে দি, খাবে ভাই?’ সেই টুনটুনি পাখি দেখার আশ ছোটো থেকেই মনের মধ্যে জমা ছিল। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আমাদের গ্রামে কোনওদিন টুনটুনি পাখি দেখিনি। সুন্দরবন অঞ্চলের স্থায়ী পাখি হওয়া সত্ত্বেও কেন ওদের গ্রামে দেখিনি, কিন্তু শহরের ঝোপে দেখতে পেলাম তা আমার কাছে বেশ রহস্যজনক ব্যাপার। সে রহস্যের কিনারা করার চেষ্টা করার আগে টুনটুনি পাখির সাথে একটু আলাপ করে নেওয়া যাক।
টুনটুনির নাম শোনেনি এমন বাঙালি একটাও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। সৌজন্য উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরি। ছোটোবেলা সবার মুখে মুখে ফিরত ‘রাজার ঘরে যে ধন আছে/ টুনির ঘরেও সে ধন আছে!’ কিংবা ‘কে ভাই? টুনিভাই? এস ভাই! বস ভাই! খাট পেতে দি, ভাত বেড়ে দি, খাবে ভাই?’ সেই টুনটুনি পাখি দেখার আশ ছোটো থেকেই মনের মধ্যে জমা ছিল। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আমাদের গ্রামে কোনওদিন টুনটুনি পাখি দেখিনি। সুন্দরবন অঞ্চলের স্থায়ী পাখি হওয়া সত্ত্বেও কেন ওদের গ্রামে দেখিনি, কিন্তু শহরের ঝোপে দেখতে পেলাম তা আমার কাছে বেশ রহস্যজনক ব্যাপার। সে রহস্যের কিনারা করার চেষ্টা করার আগে টুনটুনি পাখির সাথে একটু আলাপ করে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন:
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৭৮: সুন্দরবনের পাখি—শামুকখোল
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০৩: দেবেন্দ্রনাথ হয়েছিলেন ‘কল্পতরু’
টুনটুনির বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘Orthotomus sutorius’। ইংরেজিতে এদের বলে ‘Tailor bird’। অর্থাৎ দোরজি পাখি। এদের এই নাম সার্থক কারণ যে কৌশলে এরা বাসা বানায় তা জানলে তাজ্জব হয়ে যেতে হবে। মাটি থেকে মাত্র ৬-১০ সেমি উঁচুতে এরা বাসা বাঁধে। আর বাসা বাঁধার জন্য ঝোপঝাড়পূর্ণ অঞ্চলের চওড়া পাতাওয়ালা গাছ পছন্দ করে। কারণ ওরা চওড়া পাতার দু’প্রান্ত মুড়ে কাছাকাছি এনে সূচ দিয়ে সেলাই করার মতো নিখুঁতভাবে সেলাই করে। দেখলে মনে হবে দোরজি সূচ দিয়েই সেলাই করেছে। একটা বড় পাতা যদি একান্তই না পায় তবে দুটো বা তিনটে পাতার কিনারা একইভাবে সেলাই করে জুড়ে দেয়। বাসা বানায় মূলত স্ত্রী পাখি। ওদের তীক্ষ্ণ ও সরু চঞ্চুই সূচের কাজ করে। আর সুতো হিসেবে ব্যবহার করে চুল, ছেঁড়া কাপড়ের সুতো, রেশম, মাকড়সার জাল বা গাছের ছালের আঁশ। পাতার প্রান্ত দুটোতে পাশাপাশি দুটো ছিদ্র করে একটা ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে সুতো গলিয়ে পাশের ছিদ্রের তলা দিয়ে সেই সুতো গলিয়ে উপরে তুলে আনে এবং তারপর প্রান্ত দুটো গিঁট দিয়ে বেঁধে দেয়। প্রতি জোড়া ছিদ্র আলাদা করে ও শক্তভাবে গিঁট দিয়ে বাঁধে।
এত চমৎকারভাবে ওরা এই গিঁট দেয় যে অনেকেই তা পারবে না। সত্যিই দোরজি পাখি নামকরণ সার্থক। বাসাটা বেশ গভীরই হয়। বাসার ভেতরে তলায় ও পাশে থাকে তুলো, পশমের বা নরম শুকনো ঘাসের লাইনিং। এবার বলি কেন ওদের আমি দেখলাম কচুরিপানার ঝোপে। কচুরিপানার পাতা বেশ চওড়া। আর দীর্ঘদিন এই পানা পরিষ্কার না করায় ঘন ঝোপে পরিণত হয়েছে। ওরা বাসা বানাচ্ছে কচুরিপানার পাতায়। পরে কচুরিপানার ঝোপ ঘেঁটে আমি ওদের বাসাও দেখেছি।
এত চমৎকারভাবে ওরা এই গিঁট দেয় যে অনেকেই তা পারবে না। সত্যিই দোরজি পাখি নামকরণ সার্থক। বাসাটা বেশ গভীরই হয়। বাসার ভেতরে তলায় ও পাশে থাকে তুলো, পশমের বা নরম শুকনো ঘাসের লাইনিং। এবার বলি কেন ওদের আমি দেখলাম কচুরিপানার ঝোপে। কচুরিপানার পাতা বেশ চওড়া। আর দীর্ঘদিন এই পানা পরিষ্কার না করায় ঘন ঝোপে পরিণত হয়েছে। ওরা বাসা বানাচ্ছে কচুরিপানার পাতায়। পরে কচুরিপানার ঝোপ ঘেঁটে আমি ওদের বাসাও দেখেছি।
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯৪: পরবর্তী পদক্ষেপ
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৬: ঠাকুরবাড়ির লক্ষ্মী মেয়ে
টুনটুনি লম্বায় হয় মাত্র ১০ থেকে ১৩ সেমি, লেজসহ। আর ওজন মাত্র ৫-১৫ গ্রাম। স্ত্রী ও পুরুষ দেখতে হয় একইরকম। লালচে মাথা, হলদেটে সবুজ পিঠ ও ডানা, আর গালের দু’পাশ, গলা ও পেটের রঙ সাদা। মাথার দু’পাশে সাদা পালকের মাঝে লালচে-হলুদ চোখ বেশ স্পষ্ট দেখা যায়। চঞ্চুর রং হালকা গোলাপি। ঊরুর রং লালচে হলেও পায়ের রং ফিকে হলুদ। এদের লেজটা হয় বেশ লম্বা, আর লেজের মাঝের পালকগুলো কাঁটার মতো সরু। প্রজনন ঋতুতে এদের লেজ প্রায় দু’ইঞ্চি বেশি লম্বা হয়।
টুনটুনিদের প্রিয় খাবার হল পোকা। টু-ইট টু-ইট করতে করতে লাফিয়ে লাফিয়ে পোকা ধরে। এছাড়া পোকাদের ডিম ও লার্ভাও খায়। তবে লাল মাদার ও শিমূল ফুলের মধু টুনটুনির বড়ো প্রিয়। আজ মাদার গাছ আর দেখতে পাই না। কমে গিয়েছে শিমুল গাছও। আবার গ্রামে চাষের জমিতে যে হারে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে তাতে টুনটুনির খাদ্যাভাব হওয়া অস্বাভাবিক নয়। হয়তো বিষ প্রয়োগে মৃত পোকা ও লার্ভা খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েও টুনটুনিরা মারা যাচ্ছে। আমার মনে হয় এই সব কারণেই আমি আমাদের গ্রামে কখনও টুনটুনি দেখিনি। শহরে চাষবাস নেই। ফলে কীটনাশকের ব্যবহারও নেই। তাই মনে হয় এরা শহরে এখনও বেঁচে আছে।
টুনটুনিদের প্রিয় খাবার হল পোকা। টু-ইট টু-ইট করতে করতে লাফিয়ে লাফিয়ে পোকা ধরে। এছাড়া পোকাদের ডিম ও লার্ভাও খায়। তবে লাল মাদার ও শিমূল ফুলের মধু টুনটুনির বড়ো প্রিয়। আজ মাদার গাছ আর দেখতে পাই না। কমে গিয়েছে শিমুল গাছও। আবার গ্রামে চাষের জমিতে যে হারে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে তাতে টুনটুনির খাদ্যাভাব হওয়া অস্বাভাবিক নয়। হয়তো বিষ প্রয়োগে মৃত পোকা ও লার্ভা খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েও টুনটুনিরা মারা যাচ্ছে। আমার মনে হয় এই সব কারণেই আমি আমাদের গ্রামে কখনও টুনটুনি দেখিনি। শহরে চাষবাস নেই। ফলে কীটনাশকের ব্যবহারও নেই। তাই মনে হয় এরা শহরে এখনও বেঁচে আছে।
আরও পড়ুন:
গল্পবৃক্ষ, পর্ব-৯: আসছে আমার পাগলা ঘোড়া
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩৭: লোকে যারে বড় বলে
একদিন সকালে আমি দাঁত মাজতে মাজতে আমার বর্তমান বাড়ির পেছনে যেতেই শুনলাম টুনটুনির সেই টু-ইট টু-ইট ডাক। শব্দটা আসছে নয়নতারা ও পাথরকুচি গাছের তলা থেকে। গাছগুলো ছোটখাট একটা ঝোপ তৈরি করে ফেলেছে। আমি দেয়ালের আড়ালে সরে গিয়ে টুনটুনিটাকে দেখার চেষ্টা করলাম। একটু পরেই তাকে দেখতে পেলাম। দেখি ঝোপের মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে মশা ধরে খাচ্ছে। খুব দ্রুত ধরছে মশাগুলো। প্রায় দু’মিনিটের মধ্যে আঠারোটি মশা ধরে খেতে দেখলাম। তারপর সে পাঁচিলের ফোকর দিয়ে গলে চলে গেল পাশেই কচুরিপানার ঝোপে। মনে হয় পেট ভরে গিয়েছিল মশা খেয়ে। এমনিতেই আমাদের এলাকায় প্রচুর মশার উপদ্রব। বিশেষ করে বাড়ির দু’পাশে কচুরিপানার ঝোপ হল মশাদের আঁতুড়ঘর। এতক্ষণে আমার মালুম হল, কেন এরা আমার বাড়ির দুপাশে বহাল তবিয়তে আছে। খাবার আর থাকার জায়গার ব্যবস্থা যেখানে নিরুপদ্রব, সেখানেই তো তারা থাকবেই। আমার সেদিন আরও একটা বিষয় সেই টুনটুনিটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে টুনটুনিরা কতখানি সাহায্য করতে পারে। টুনটুনির মাধ্যমে মশার জৈবিক নিয়ন্ত্রণের এই বিষয়টি সত্যিই আমার কাছে একটা আবিষ্কার।
আরও পড়ুন:
রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৪৬: আলাস্কার আকাশে অহরহ ব্যক্তিগত বিমান ওঠানামা করে
ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৪১: রবীন্দ্রনাথ ও ব্রজেন্দ্র কিশোর
অভিজ্ঞতা দিয়েই বুঝলাম টুনটুনিদের ভয়ডর বেশ কম। এখন আমি পাঁচিলের পাশে দাঁড়িয়ে কচুরিপানার ঝোপে ওদের কাণ্ডকারখানা প্রায়ই দেখি। আমার দাঁড়িয়ে থাকাটা ওরা খুব একটা ভ্রূক্ষেপ করে বলে মনে হয় না। মাঝে মাঝে দেখি ওরা আমার বাড়ির একতলার বারান্দার সামনেও চলে এসেছে। কখনও কখনও আমার জবা ফুলের গাছে এসেও বসে। তবে মনে হয় জবা ফুলের মধু খেতে নয়, জবা গাছে থাকা পিঁপড়ে খেতে আসে। ভারি সুন্দর লাগে ওদের লাফানোর ভঙ্গি। লম্বা লেজটা সবসময় খাড়া রেখে লাফায়, আর থেকে থেকেই নাড়ায়। সকাল আর দুপুরে ওদের হাঁক-ডাক বেশি শুনতে পাই। সন্ধ্যে হবার অনেকটা আগে থেকেই মনে হয় ওরা আস্তানায় ফিরে যায়। এখন প্রতিদিন ওদের চ্যাঁচামেচি শুনেই আমার ঘুম ভাঙে। সুন্দরবনের এই ছোট্টো বাসিন্দারা মনে হয় মূলতঃ শহর ও মফস্বল অঞ্চলে সীমাবদ্ধ।
(বাঁদিকে) চঞ্চল টুনটুনি। (মাঝখানে) পোকা মুখে টুনটুনি। (ডান দিকে) টুনটুনির ডিম। ছবি: সংগৃহীত।
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে স্ত্রী টুনটুনি বাসা বানায়। বাসা বানাতে পুরুষ পাখি সাহায্য করে। বাসা বানানো শেষ হলে স্ত্রী টুনটুনি বাসায় নীলচে-সাদা রঙের ও লালচে-বাদামি ছিটযুক্ত ৩-৪টি ডিম পাড়ে। স্ত্রী টুনটুনি ডিমে তা দেয়। ১৪ দিন পর ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে ছানারা। মা ও বাবা টুনটুনি উভয়েই বাচ্চাদের লালনপালনের দায়িত্ব পালন করে। ২৫ দিন বয়স হলে ছানারা উড়তে সক্ষম হয়। তবে এদের বাচ্চাদের মৃত্যুহার অনেক বেশি, কারণ ধেড়ে ইঁদুর, বিড়াল, সাপ, কাক ইত্যদি প্রাণী প্রায়শই টুনটুনির বাচ্চা ও ডিম খেয়ে নেয়।
কিন্তু ওরা আমার প্রতিবেশি হয়ে কতদিন আর থাকতে পারবে তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ যে গতিতে শহরের জলাভূমি, ঝোপঝাড় সাফ করে গজিয়ে উঠছে বাড়ি সেখানে আমার বাড়ির দু’পাশের জলাজমি কতদিন আর আস্ত থাকবে! একদিন না একদিন এখানেও মাথা তুলবে কংক্রিটের কাঠামো। তখন কোথায় থাকবে, কী খাবে আমার এই ছোট্টো মিষ্টি প্রতিবেশীরা? —চলবে।
কিন্তু ওরা আমার প্রতিবেশি হয়ে কতদিন আর থাকতে পারবে তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ যে গতিতে শহরের জলাভূমি, ঝোপঝাড় সাফ করে গজিয়ে উঠছে বাড়ি সেখানে আমার বাড়ির দু’পাশের জলাজমি কতদিন আর আস্ত থাকবে! একদিন না একদিন এখানেও মাথা তুলবে কংক্রিটের কাঠামো। তখন কোথায় থাকবে, কী খাবে আমার এই ছোট্টো মিষ্টি প্রতিবেশীরা? —চলবে।
* সৌম্যকান্তি জানা। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র। নিবাস কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। পেশা শিক্ষকতা। নেশা লেখালেখি ও সংস্কৃতি চর্চা। জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের জন্য ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল ২০১৬ সালে ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড’ এবং শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান লেখক হিসেবে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ ২০১৭ সালে ‘অমলেশচন্দ্র তালুকদার স্মৃতি সম্মান’ প্রদান করে সম্মানিত করেছে।