শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য নয়, রেলের তদন্ত ভয়ংকর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মানুষকেই দায়ী করছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, রবিবার সকালে ওড়িশার বাহানগা বাজারে ঘটা দুর্ঘটনার ৪০ ঘণ্টার মধ্যেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন। অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসবে। সেই সঙ্গে রেলমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘যাঁরা এই কাজ করেছেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে।’’

রবিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে দূরদর্শনকে সাক্ষাৎকার দেন রেলমন্ত্রী। সেখানে অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “গতকাল দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার (সিআরএস)। সিআরএস সবার সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্ত দ্রুত এগিয়েছেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এই কাজ করেছেন তাঁদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। সিআরএস-এর তদন্ত রিপোর্টে খুব শীঘ্রই দুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে।’’
তা হলে কি যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা উড়িয়েই দিলেন রেলমন্ত্রী? এর উত্তরে অশ্বিনী বলেন, “এ নিয়ে এখনই এরকম মন্তব্য করা ঠিক হবে না।” তদন্ত-রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

শুক্রবার সন্ধ্যা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ‘আপ মেন লাইন’ দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের প্রায় একই সময়েই ‘ডাউন মেন লাইন’ দিয়ে ফেরার কথা। রেল সূত্রের খবর, বাহানগা বাজার স্টেশনে দু’টি ট্রেনের দাঁড়ানোর কথা নয়। সেই মতো ‘থ্রু’ চলে যাওয়ার জন্য স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার দু’টি ট্রেনকেই সিগন্যাল দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১৪: কিশোরের শুধু কণ্ঠই নয়, তাঁর অভিনয় ক্ষমতাকেও গানের নেপথ্যে সুকৌশলে কাজে লাগাতেন পঞ্চম

‘রাজ ও আমার মধ্যে শারীরিক বা মানসিক, কোনও সম্পর্কই নেই’! পরীমণির পঞ্চম বিয়েও ভাঙনের পথে?

আগেই তিনি সিগন্যাল দিয়ে দু’টি মালগাড়িকে ‘ডাউন’ ও ‘আপ’ লুপলাইনে দাঁড় করান। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছাকাছি আসে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সবুজ সিগন্যাল থাকায় দু’টি ট্রেনই এগিয়ে যায়। রেলের ওই সূত্রের দাবি করেন, এর পরেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস আপ মেন লাইনের ‘১৭এ পয়েন্ট’ থেকে সোজা লুপ আপ লাইনে প্রবেশ করে তীব্র গতিতে ধাক্কা মারে ওই লুপ লাইনে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িকে। তীব্র গতির অভিঘাতে করমণ্ডলের অন্তত ১৭টি বগি ছিটকে যায়। মালগাড়ির ওয়াগনের উপরে উঠে যায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন।

রেল জানায়, এমন সময় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ঢুকে পড়েছিল ডাউন মেন লাইনে। সেই লাইনের উপর গিয়ে পড়ে আবার করমণ্ডলের কয়েকটি কামরা ছিটকে পড়েছিল। এর ফলে বেলাইন হয়ে যায় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের দু’টি কামরাও।
আরও পড়ুন:

আপনার সঙ্গীর মধ্যে এই লক্ষণগুলি প্রবল? হতে পারে আপনি তাঁর প্রথম পছন্দ নন

স্বাদে-আহ্লাদে: আম কাসুন্দি প্রিয়? বানানোর সময় এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন

শনিবারই রেলের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, লুপ লাইনে ঘোরানো ছিল ১৭এ পয়েন্টটি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল করমণ্ডল। ওই রিপোর্টের এও বলা হয়, ‘প্যানেল’-এ (স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা এবং যার তথ্য রেকর্ড হয়) কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি। পরিদর্শক কমিটির সদস্যদের মনে করছেন, দু’টি ট্রেনের জন্যই সিগন্যাল ঠিক ভাবে দেওয়া হয়েছিল। প্যানেলের তথ্য অনুযায়ী, করমণ্ডলের সিগন্যাল আপ লুপ লাইনে ঘোরানো ছিল না। সোজা চেন্নাই যাওয়ার জন্য সিগন্যাল দেওয়া হয়। শনিবারের রিপোর্ট এবং প্যানেলে পরিষ্কার ইঙ্গিত ছিল, দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে গাফিলতি বা বোঝাপড়ার অভাব। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও রবিবার সেই দুর্ঘটনার মানুষের হাতই দায়ি করেছেন।

Skip to content