শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


বছর পঁয়তাল্লিশের রাহুল পারামারগুজরাতের বাসিন্দা। মেয়েকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কোলার থানার পুলিশ। রাহুল কিন্তু কর্মসূত্রে থাকেন বেঙ্গালুরুতে। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু সেই কাজ চলে যায়। বিটকয়েনে একটি ব্যবসাও ছিল তাঁর। কিন্তু তাতেও বিপুল ক্ষতি হয়েছিল। ফলে বাজারে প্রচুর ধারদেনা করে ফেলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তার দেনার পরিমাণ এতটাই ছিল যে, সোনার গয়নাও বিক্রি করতে হয়েছিল রাহুলকে। নিত্য দিন পাওনাদাররা তার বাড়িতে হানা দিতেন। ফলে সব মিলিয়ে দিশাহারা হয়ে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করেন তিনি।
১৫ নভেম্বরমেয়ে জিয়াকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তাকে নিয়ে গাড়িতে করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রাহুল। সকালে বেঙ্গালুরুর আশপাশে মেয়েকে গাড়িতে নিয়ে ঘোরেন। কী ভাবে আত্মহত্যা করবেন স্থির করতে পারছিলেন না। বিশেষ করে মেয়ের সামনে আত্মহত্যা করবেন, কীভাবে তা স্থির করতে পারছিলেন না। অন্য দিকে, সময়ও পেরিয়ে যাওয়ায় আরও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছিলেন রাহুল। তিনি বলেন, “বেশ কিছু ক্ষণ এ দিক ও দিক গাড়ি চালিয়ে ঘোরার পর শেষমেশ বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু পাওনাদারদের অশ্রাব্য গালিগালাজ, হেনস্থা বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। তার পরই হ্রদের ধারে সন্ধ্যাবেলায় গাড়ি থামিয়েছিলাম।”
আরও পড়ুন:

ইংলিশ টিংলিশ: I talk কিন্তু he talks কেন হয়? সঙ্গে আরও জেনে নাও be এবং have verb-এর সঠিক প্রয়োগ

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১০: কান্না-হাসির দোল দোলানো ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ [২০/০২/১৯৫৩]

পুলিশকে তিনি আরও জানিয়েছেন, হ্রদের কাছে গাড়ি পার্ক করে সামনেরই একটি দোকান থেকে মেয়ের জন্য বিস্কুট এবং চকোলেট কিনে এনেছিলেন। পকেটে আর টাকা অবশিষ্ট ছিল না তাঁর। মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে কিছু ক্ষণ খেলেনও। কিন্তু মেয়ে আবার খিদের জ্বালায় কেঁদে ওঠে। সেই জ্বালা সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে বুকের মধ্যে জোরে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি। এর পরই মেয়েকে নিয়ে হ্রদের জলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু জল কম থাকায় বেঁচে যান রাহুল।
আরও পড়ুন:

মহাভারতের আখ্যানমালা, পর্ব-৪৪: বনের পথে গল্প রাশি রাশি— যাত্রাপথ যত এগোয় তত অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে ওঠে পাণ্ডবদের

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৩৩: খালেবিলে, ধানখেতে, পুকুরে, নদীতে ঘুরে বেড়ানো ‘ম্যাজিশিয়ান’ জেব্রা ফিশ ভবিষ্যতে রোগ নিরাময়ে নতুন দিশা দেখাবে

রাহুলের কথায়, “হ্রদের জলে ঝাঁপ দিয়েও যখন কিছু হয়নি, মেয়েকে ওখানে ফেলে রেখে রাস্তায় উঠি। এক ব্যক্তিকে বলি, আমাকে বাঙ্গেরপেট স্টেশনে ছেড়ে দিতে। ভেবেছিলাম ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করব। কিন্তু শেষমেশ তাও করে উঠতে পারিনি। শেষে তামিলনাড়ুগামী ট্রেনে উঠে পড়ি।”
কিন্তু সারাদিন কেটে যাওয়ার পরেও স্বামী-সন্তান না ফেরায় রাহুলের স্ত্রী ভব্য বাগালুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু তার পর দিনই বেঙ্গালুরু-কোলার হাইওয়ের ধারে একটি হ্রদে জিয়ার দেহ উদ্ধার হয়। রাহুলের দাবি কতটা সত্য, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Skip to content