রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা। কী হবে? কোথায় মিলবে চিকিৎসা? কোথায় ডাক্তার? এই অবস্থায় দেবদূতের মতো কামরায় থাকা এক তরুণী এগিয়ে এলেন। ওই তরুণী একটি মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস ছাত্রী। নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁকে সাহায্য করতে আগ্রহী হলেন। তাঁর সহায়তায় ট্রেনের মধ্যেই সন্তান প্রসব করলেন এক মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের অনকাপল্লিতে। এই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন সেকন্দরাবাদ দুরন্ত এক্সপ্রেসের যাত্রীরা।
সূত্রের খবর, ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা শ্রীকাকুলামের বাসিন্দা। তাঁর বয়স প্রায় ২৮ বছর। তিনি কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে আর এক আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার জন্য সেকন্দরাবাদ দুরন্ত এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন। কিন্তু অনকাপল্লি স্টেশন ছাড়ার পরই তাঁর প্রসববেদনা ওঠে। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন তিনি। ওই অবস্থায় কোথায় মিলবে ডাক্তার, কোথায় হাসপাতাল? তাঁর কাছে থাকা আত্মীয়েরা কী করবেন কুলকিনারা ভেবে পাচ্ছিলেন না। এমন সময় এগিয়ে আসেন কে স্বাতী রেড্ডি নামে এক মেডিক্যাল পড়ুয়া।
নিজের পরিচয় দিয়ে জানান, তিনি একজন ডাক্তারি পড়ুয়া। তারপর নিপুণ হাতে মায়ের গর্ভ থেকে বের করে এনে সদ্যোজাতকে পৃথিবীর আলো দেখালেন ওই ডাক্তারি পড়ুয়া। তবে মাথা ঠান্ডা রেখে জীবনে প্রথমবার প্রসব করালেন স্বাতী। কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই অন্তঃসত্ত্বা। তবে প্রসবের পরে একটি স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে মা ও সদ্যোজাতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন স্বাতী। মা ও শিশুকন্যার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সময়ের আগেই জন্ম হয়েছে শিশুটির। তবে সন্তান এবং মা দু’জনেই সুস্থ আছেন।
আরও পড়ুন:

ডাক্তারের ডায়েরি, পর্ব-৩৫: শ্যুটিংয়ের মজার গল্প

গৃহিণীদের মধ্যে বইয়ের নেশা বাড়াতে কাঁধে ঝোলা নিয়ে ঘুরে বেড়ান রাধা, ‘চলমান পাঠাগার’ তাঁর পরিচয়!

কোনও চিকিৎসার সরঞ্জাম ছাড়াই যে সাহসের সঙ্গে তিনি অন্তঃসত্ত্বাকে সাহায্য করেছেন, তাঁর এই কাজে কুর্নিশ জানিয়েছেন রেলের আধিকারিকরা। তাঁর এই সাহসী প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, ওই মহিলার পরিবারের লোক জন এবং ওই সেকন্দরাবাদ দুরন্ত এক্সপ্রেসের যাত্রীরাও। ওই ডাক্তারি পড়ুয়া বলেন, ‘এখানে আমি শুধু আমার দায়িত্বটুকু পালন করেছি।’ তিনি আরও জানান, ‘প্রসব করানোর সময়ে অন্য চিকিৎসকদের সাহায্য করেছি। কিন্তু নিজে চলন্ত ট্রেনের কামরায় প্রসব করাতে গিয়ে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। প্রায় ৪৫ মিনিট কেটে গেলেও শিশুটিকে বের করতে পারছিলাম না। তখন টেনশন আরও বেড়ে গিয়েছিল। তবে সমস্ত বিপদ কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত সুস্থভাবে জন্ম নিয়েছে শিশুকন্যা, এই ভেবেই খুশি।’

Skip to content