শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

আনুমানিক ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দীতে লঙ্কা গাছ প্রথম দক্ষিণ আমেরিকাতে দেখা গিয়েছিল। তারপর গাছটি মেক্সিকো, ব্রাজিল, মধ্য আমেরিকার অঞ্চলগুলি থেকে স্পেন এবং পর্তুগাল হয়ে সম্পূর্ণ পৃথিবীতে ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করেছে। মতান্তরে ৬০০০ বছর আগে ম্যাক্সিকোর বাসিন্দারা নিজেদের খাদ্যের স্বাদ বাড়াবার জন্য প্রথম লঙ্কা ব্যবহার করেন।

তবে বর্তমানে সারা পৃথিবীতে লঙ্কা উৎপাদনের দিক থেকে চিনের স্থান প্রথম। চিন দেশের নাগরিকরা খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে লঙ্কা রাখেন। পৃথিবীতে উৎপাদিত মোট লঙ্কার প্রায় অর্ধেক পরিমাণই উৎপন্ন হয় এই দেশে। আমাদের ভারত বা কম যায় কিসে। পৃথিবীর ৯০টি দেশে লঙ্কা রপ্তানি করে ভারত। কারণ, আমাদের দেশের লঙ্কার গুণগত মান অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় অনেক অনেক বেশি উন্নত। আবার আমাদের দেশের মধ্যে লঙ্কা উৎপাদনে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে অন্ধপ্রদেশ রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও যেমন মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ইত্যাদি জেলাতেও লঙ্কা উৎপাদন করে যথেষ্ট পরিমাণে।

এ ভাবে সারা পৃথিবী জুড়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার লঙ্কার প্রজাতি ছড়িয়ে রয়েছে। লঙ্কার আকৃতি, রঙ এবং ঝালের তীব্রতা অনুযায়ী ভারতের কয়েকটি লঙ্কার প্রজাতির নাম হল ধানি লঙ্কা, কাড্ডি, সান্নাম, জ্বালা, কানঠারি, কাশ্মীরি লাল, সূর্যমুখী, উজ্জ্বালা, পাঞ্জাবি লাল, অপর্ণা, জওহর ইত্যাদি।

পাঠকদের মনে হতেই পারে গ্রীষ্মের অত্যাধিক দাবদাহের মধ্যে ঠান্ডা ও মিষ্টি কোন ফলের পরিবর্তে ঝাল লঙ্কার কথ কেন শোনাচ্ছি! কিন্তু লঙ্কা অত্যাধিক গরমে আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বাস্তবিক ক্ষেত্রে লঙ্কা হল ঘর্মস্রাবকারক অর্থাৎ কাঁচালঙ্কা নিয়মিত খেলে তা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। ঝাল লঙ্কা শরীরের কুলিং প্রসেসকে সক্রিয় রাখে এবং দেহের ভেতরে জমে থাকা বিভিন্ন টক্সিন টেনে বার করে দেয়। এর ফলে শরীর ভেতর থেকে অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে ওঠে। এই কারণবশতই হয়তো ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলের লোকেরা নিজেদের শরীরকে অত্যাধিক গরমের হাত থেকে ঠান্ডা রাখতে নিজেদের খাবারের সঙ্গে বেশি পরিমাণে লঙ্কা খান।

প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তাই লঙ্কার কথা ঘুরেফিরে এসেছে। অর্থাৎ লঙ্কার গুণাগুণ বারবার ফল দিয়েছে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে।
 

এক নজরে

● বিজ্ঞানসম্মত নাম: ক্যাপসিকাম এনাম
● গোত্র: সোলানেসি
● বাংলা নাম: লঙ্কা অথবা মরিচ
● ইংরাজি নাম: চিলি
● গাছের প্রকৃতি: লঙ্কা গাছ হল দ্বিবীজপত্রী, ছোট গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর কান্ড শক্ত এবং কাষ্ঠল প্রকৃতির। গাছটি বহু শাখা-প্রশাখা যুক্ত হয় এবং এক থেকে চার ফুট পর্যন্ত দৈর্ঘ্য হয়। পাতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সবুজ হলেও কোনও কোনও অঞ্চলে লঙ্কা গাছের পাতার রং কালো অথবা গাঢ় বেগুনি হয়ে থাকে।
● বিস্তৃতি: লঙ্কা বা মরিচ গাছ আমেরিকা মহাদেশে প্রথম দেখা গিয়েছিল এবং সেখান থেকে পশ্চিমের বিভিন্ন দেশগুলি ঘুরে ভারতে বিস্তার লাভ করেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি গাছের পক্ষে ক্ষতিকর হওয়ায় উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়াতেই লঙ্কা গাছ ভালো জন্মায়। দোঁয়াশ এবং বেলে মাটি যুক্ত অঞ্চলে এর আধিক্য লক্ষ্য করা যায় তবে অত্যাধিক সূর্যালোকে লঙ্কার উৎপাদনশীলতা বাড়লেও এর ঝাল ভাবটা অনেকটা কেটে যায়। তাই উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু যুক্ত দোআঁশ মাটি হল লঙ্কা গাছের জন্য আদর্শ।

আরও পড়ুন:

হাত বাড়ালেই বনৌষধি: ডাব ও নারকেলের ইতিকথা

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৩: হৃদয়পুরের লক্ষ্যপূরণ ‘কঙ্কাবতীর ঘাট’

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৯: ‘মেরা কুছ সামান…’ গানে সুর দেওয়ার প্রস্তাবে গুলজারকে পত্রপাঠ বিদায় জানান পঞ্চম

 

কী কী উপাদানে ভরপুর?

প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা লঙ্কা থেকে আমরা পাই প্রোটিন ২.৯ গ্রাম, ফ্যাট ০.৬ গ্রাম শর্করা ৩ গ্রাম ফাইবার ৬.৫ গ্রাম। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ থেকে থাকে লঙ্কাতে, বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থগুলোর পরিমাণ হল ক্যালশিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৮০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৭২ মিলিগ্রাম, কপার ১.৪ মিলিগ্রাম, ১.৩৮ মিলিগ্রাম এবং জিংক ১.৭৮ মিলিগ্রাম। এগুলো ছাড়াও থাকে নানান ধরনের ভিটামিন। যেমন ভিটামিন সি, থাইয়ামিন, রাইবোফ্ল্যাবিন, ভিটামিন-এ লঙ্কাতে উপস্থিত থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম লঙ্কা থেকে আমরা ২৯ কিলো ক্যালরি শক্তি পেয়ে থাকি।

আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৩: যার কাছে টাকা-পয়সা থাকে এ জগতে সেই হল পণ্ডিত

ভবিষ্যবাণী, আপনার জীবনে বাস্তুশাস্ত্রের আটটি দিকের গুরুত্ব ঠিক কতটা? জেনে নিন একঝলকে

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬১: চাষাবাদ নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ভেবেছেন

 

চিকিৎসাশাস্ত্রে এর ব্যবহার

 

ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে

আমরা প্রতিদিন খাবারে যা খাই তাতে ভিটামিন-সি এর অভাব সম্পূর্ণরূপে পূরণ হয় না তাই রোজ তিন থেকে চারটি কাঁচা লঙ্কা বীজ বাদ দিয়ে যদি তরকারির সঙ্গে খাওয়া যায়। তাহলে ভিটামিন-সি এবং বিভিন্ন ধরনের খনিজ লবণ শরীরে প্রবেশ করবে। আবার শরীর অনেকাংশে ঠান্ডাও থাকবে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনাও কমে যাবে।
 

কানের ব্যথা ও যন্ত্রণায়

৫ থেকে ৬ টি শুকনো লঙ্কা, ৫০ গ্রাম পরিমাণ ঘি তে ভেজে নিয়ে লঙ্কা তুলে ফেলতে হবে। তারপর সেই ঘি থেকে একটি শিশিতে রাখতে হবে। কানের ব্যথা এবং যন্ত্রণা হলে ওই ঘি সামান্য গরম করে দুই এক ফোঁটা কানে দিতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর তুলোর সাহায্যে কান পরিষ্কার করে নিলে ব্যথার উপশম হবে।
 

কোলাইটিস নিরাময়

বীজ বাদ দিয়ে পুষ্ট ধানি লঙ্কা শুকিয়ে গুঁড়ো করে রাখতে হবে। তারপর সেই গুড়ো ১০ থেকে ১২ দিন জলখাবারের পর এক কাপ দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে অথবা প্রতিদিন কাঁচাকলা, গাদাল পাতা ও চারা পোনার ঝোল বানিয়ে মাস দুইয়েক খান। তাহলে কোলাইটিসে উপকার পাবেন।
 

বিছে মৌমাছি বা বিষাক্ত পোকার কামড়ের জ্বালার উপশমে

বোঁটা এবং বীজ বাদ দিয়ে কয়েকটি শুকনো লঙ্কা বেটে সেই বাটা সামান্য পরিমাণে ফোলা, ব্যথা ও যন্ত্রণায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
 

বাতের ব্যথা উপশমে

শুকনো লঙ্কার কেপসাইসিন নামক একটি যৌগ উপস্থিত থাকে যেটি ব্যথা এবং ফোলানাশক। ১০০ গ্রাম সর্ষের তেলে আস্ত শুকনো লঙ্কা ১০ থেকে ১৫টি ভেজে নিতে হবে এবং তারপর লঙ্কাটি ছেঁকে ওই তেলে পুনরায় ১০ থেকে ১৫টি রসুনের কোয়া ভেজে নিতে হবে। তারপর ওই লঙ্কা রসুন মেশানো তেলটি তীব্র যন্ত্রণা বা ব্যথা এবং ফোলার স্থানে ধীরে ধীরে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়। রয়ে যাওয়া ভাজা রসুন এবং ভাজা শুকনো লঙ্কা আপনারা গরম ভাতের সঙ্গেও খেতে পারেন এটি। আবার বাতের ক্ষেত্রে উপকারী।
 

হার্টকে সুস্থ রাখতে

লঙ্কাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাপসাইসিন নামক যৌগ থাকে, যা রক্তের কোলেস্টেরল এবং টাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়। এল ডি এল কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটাই কমিয়ে দেয়, যা হার্ট ব্লক প্রতিরোধ করে।

 

ইমিউনিটি বাড়াতে

খনিজ পদার্থ, ফ্যাটি অয়েল এবং ভোলা টাইল ওয়েল এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে থাকে লঙ্কায়। এইগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে নানান রোগের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে। আধুনিক বিজ্ঞানে প্রমাণিত হয়েছে লিউকোমিয়া অর্থাৎ ব্লাড ক্যানসার এবং ফুসফুস, প্যানক্রিয়াস এর ক্যানসার প্রতিরোধে লঙ্কা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
 

অজীর্ণ প্রতিরোধে

কয়েকটি ধানি লঙ্কা শুকিয়ে গুঁড়ো করে রেখে রোজ সকালে জলখাবারের পরে দেড়শ থেকে আড়াইশো মিলিগ্রাম মাপের কাপে সাদা দই অথবা ঘোলের সঙ্গে মিশিয়ে একবার খেলে কয়েক দিনের মধ্যেই ক্ষুধামান্দ্য ভাব কেটে যাবে, সঙ্গে খিদেও বাড়বে। কিন্তু যাদের পেট জ্বালা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তাদের এটি চলবে না।
 

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, কাঁচা লঙ্কা হল শীত বীর্য এবং শুকনো লঙ্কা উষ্ণ বীর্য। লঙ্কা তথা মরিচের বহুগুণের বিবরণ পাওয়া গিয়েছে ভারতীয় প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে। সন্ধিবাত, আমবাত, গেটে বাত, মধুমেহ রোগ,পার্শ্বশূল, কটিশুল, কফ, অরুচিতে, মানসিক অবসাদে, মেদো রোগে, তন্দ্রা-মোহ-প্রলাপ ইত্যাদি প্রতিরোধে কাঁচা এবং শুকনো দুই ধরনের লঙ্কাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
 

কোষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণে

লঙ্কায় থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ আমাদের শরীরের অন্ত্রের কুঞ্চন গতি অর্থাৎ পেরিস্টলিক মুভমেন্ট ঠিকঠাক রাখে। এর ফলে আমাদের কোষ্ঠবদ্ধতা আসে না।
 

দূষিত পদার্থ নিষ্কাশন করে

শরীর শীতল রাখতে-লঙ্কা শরীর থেকে বিভিন্ন রকম দূষিত পদার্থ নিষ্কাশন করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। মানব শরীরের কুলিং প্রসেসকে সক্রিয় রাখতে লঙ্কার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

এছাড়াও কাঁচা লঙ্কা এবং শুকনো লঙ্কা আরও অনেক রোগ প্রতিরোধ করে। হার্ট, ত্বক, চোখ, চুল সুস্থ রাখতেও লঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

আরও পড়ুন:

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৭: কোরবা হয়ে সাতরেঙ্গা

দশভুজা: জীবনে যা কিছু করেছি, প্রত্যয়ের সঙ্গে করেছি: কানন দেবী/২

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১৮: গৃহ-সহায়িকার পাঁচালি এবং আমাদের ভদ্র সমাজ

 

লঙ্কার আনুষাঙ্গিক ব্যবহার

শুকনো লঙ্কা এবং কালোজিরে সমপরিমাণে নিয়ে একটি সাদা কাপড়ের মধ্যে পুটলি বাঁধতে হবে এবং সেটি মশলার জায়গা বা জামা কাপড়ের মধ্যে রেখে দিলে সেখানে আরশোলা বা অন্যান্য পোকামাকড়ের হাত থেকে সেগুলিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
সরষে বাটার সময় কয়েকটি কাঁচা লঙ্কা মিশিয়ে একসঙ্গে যদি বাটা হয় এবং তারপর তাতে খানিকটা সর্ষের তেল ও সামান্য নুন মিশিয়ে ফ্রিজে রাখলে সর্ষের তেতো ভাব কেটে যায় এবং অনেক দিন সেটা স্থায়িত্ব লাভ করে।
কাঁচা লঙ্কা এবং পাতিলেবু পরপর সাজিয়ে একটি সুতো দিয়ে গেঁথে তা নতুন ঘরের চৌকাঠে গাড়িতে বা দোকানে ঝুলিয়ে রাখা রীতি প্রাচীনকাল ধরেই চলে আসছে । অনেকেরই ধারণা এটি অশুভ শক্তিকে দূরে সরিয়ে রাখে। তবে বাস্তবিক অর্থে এটা পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করা হয়।

লঙ্কাকাণ্ডের শেষে একটা কথা বলতেই হয় যে প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রই হোক বা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় হোক প্রমাণিত যে, লঙ্কার মধ্যে উপস্থিত যৌগগুলি মানুষের নানাবিধি রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরও পড়ুন:

ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-১: জলের তলায় তার শরীরের কোনও অস্তিত্ব নেই!

প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, জাপানের মতো এ দেশের তরুণ তরুণীরাও হিকিকোমোরি-র সমস্যায় ভুগছেন না তো?

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৮: শুঁটকি মাছে কি আদৌ কোনও পুষ্টিগুণ আছে?

 

সাবধানতা

লঙ্কার অতিরিক্ত ব্যবহারে আমাদের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় আন্ত্রিক ক্ষত বা আলসার রোগ দেখা যায়।
লঙ্কায় উপস্থিত অক্সালিক এসিড বা ফাইটিন নামক যৌগ খাদ্য থেকে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং দস্তার শোষণকে বাধা দেয়। তাই অতিরিক্ত লঙ্কা খাবারের ফলে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম আয়রন এবং দস্তার ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়।
অনেকেরই লঙ্কা খেলে এলার্জি জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
শুকনো লঙ্কা খাওয়ার বা ব্যবহারের পূর্বে সেটিকে ভেঙে দেখে নিতে হবে যেন ভেতরে কোন ফাঙ্গাস বা ছত্রাক না জন্মায়। কারণ লঙ্কাতে মারাত্মক একটি ফাঙ্গাস আফলা টক্সিন জন্মায়। যেটি খেলে লিভার ক্যানসার এবং কিডনিজনিত ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বহু গুনে বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই একই ফাঙ্গাস চিনা বাদামেও হয়ে থাকে। তাই একটিতে হলে সমস্ত লঙ্কা বা বাদাম তৎক্ষণাৎ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

* হাত বাড়ালেই বনৌষধি (Herbs-and-seeds): স্বাতীলেখা বাগ (Swatilekha Bag), উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ।

Skip to content