স্কেচ: গৌতম চট্টোপাধ্যায়।
আলু কার্বোহাইড্রেট প্রধান খাদ্য। দেহের প্রয়োজনীয় শক্তির ৬০-৭০% আসে এই কার্বোহাইড্রেট থেকেই। ১০০ গ্রাম আলুতে থাকে প্রায় ২০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, যার অধিকাংশই স্টার্চ বা শ্বেতসার, যা প্রায় ১৭.৫%। এছাড়া ০.৩ শতাংশ থাকে গ্লুকোজ–ফ্রুকটোজ, ০.৫ গ্রাম সুক্রোজ বা জাইলোজ এবং ০.৭১ গ্রাম সেলুলোজ বা ফাইবার। কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও ১০০ গ্রাম আলুতে ফ্যাট থাকে মাত্র ১০০ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, লোহা ০.৭ মিলিগ্রাম, ক্যালশিয়াম ১০ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া ভিটামিন বি১, বি ২, বি ৩, ভিটামিন সি ইত্যাদি। টোটাল নাইট্রোজেন থাকে ৫৪.৭ শতাংশ।
এবার একটু জেনে নিই, কাকে বলে ডায়াবেটিস বা হাই ব্লাড সুগার। আমাদের দেহের অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস গ্রন্থির এন্ডোক্রিন বা অন্তক্ষরা অংশ থেকে ইনসুলিন নামক এক ধরনের হরমোন ক্ষরিত হয়। এর কাজ হল আমাদের রক্ত স্রোতে বয়ে চলা গ্লুকোজের হারটাকে একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখা, যা কমবেশি একশো মিলি লিটার রক্তে ৮০ থেকে ১২০ মিলি গ্রামের মধ্যে। যদি কোনও কারণে দেহে ইনসুলিনের ঘাটতি পরে অর্থাৎ প্যানক্রিয়াস থেকে কম ইনসুলিন ক্ষরণ হয় বা একেবারেই হয় না বা ক্ষরণ হবার পর তা নিষ্ক্রিয় থাকে, তখন রক্তে গ্লুকোজের হার অনেকটা বেড়ে যায়। দেখা দেয় নানা জটিলতা। এই অবস্থাটির নামই হল ডায়াবেটিস।
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৮: সাইনাস নাকি কখনওই সারে না?
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩: আত্মারামে কুটো বাঁধা আছে
সত্যিই কি আলু খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়?
এবার আসল কথায় আসি। আলু খেলে কি সত্যিই ডায়াবেটিস বাড়ে? না বাড়ে না, কখনওই বাড়ে না, যদি প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে আলু খাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম আলুতে তো মাত্র ২০ গ্রাম কার্বোহাইডেট থাকে, যার অধিকাংশই স্টার্চ বা শ্বেতসার। গ্লুকোজ থাকে নামমাত্র। শুধু আলু কেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান জানাচ্ছে, ডায়াবেটিসে সবই খাওয়া যায়, তবে একটু সমঝে এবং অবশ্যই আপনার ডাক্তারবাবুর পরামর্শে। আলু কার্বোহাইড্রেট প্রধান খাদ্য হলেও নানা পুষ্টিগুণে ভরা।
কাজেই ডায়েট থেকে আলুকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেলবেন কেন! আপনার সুগার লেভেল, বয়স, ওজন, উচ্চতা, লাইফস্টাইল ইত্যাদি নানা বিষয়ে মাথায় রেখে আপনার ডাক্তারবাবুই ঠিক করে দেবেন যে প্রতিদিন আপনি কতটা আলু খেতে পারবেন। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অর্থাৎ কত দ্রুত রক্তের সুগার লেভেল বাড়ছে, সেটা দেখে নিলে আরও সুবিধা হবে। বেশি তেল ঝাল ব্যবহার করে আলু রাধবেন না। ডায়াবেটিক রোগীরা রোজ ২-১ টুকরো করে আলু খাবেন সেদ্ধ করে, ঝোলে বা তরকারিতে, কিংবা ভাপিয়ে— ঝালে ঝোলে অম্বলে নয়।
রিভিউ: ‘সির্ফ এক বান্দা কাফি হ্যায়’—মনোজ বাজপেয়ী একাই একশো
লাইট সাউন্ড ক্যামেরা অ্যাকশন, পর্ব-৭: গোদারের ব্রেথলেস ও প্যারিসের শঁসেলিজে
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৬: মজল আঁখি মজেছে মন, ইমোজি তোদের ডাকল যখন
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-২৩: গোবিন্দর হেঁয়ালি
কাজেই ব্লাড সুগারের রোগীরা এখন থেকে রোজই দু-এক টুকরো করে আলু খেতে পারেন। বেশি খেয়ে ফেললে সেদিন অন্য কার্বোহাইডেট কম পরিমাণে খাবেন। তাহলেই ব্যালেন্স হয়ে যাবে।