স্কেচ: গৌতম চট্টোপাধ্যায়।
বর্ষা মানেই রুপোলী শস্যর হাতছানি, মানে ইলিশের। হাজার-বারোশো টাকা কেজি! মেছো ভেতো বাঙালি আর্থিক অনটনের মধ্যেও মাছের আকর্ষণ এড়িয়ে যেতে পারেন না, বিশেষ করে তা যদি হয় ইলিশের। ১৫ দিনে একবার হলেও একটু ইলিশ পাতে পরা চাই। ইলিশের প্রতি বাঙালিদের বিশেষ করে বাঙালদের একটা জেনিটিক দুর্বলতা আছে। স্বাদ-গন্ধ এবং পুষ্টিমূল্যে ইলিশ তুলনাহীন।
পুষ্টি মূল্যের বিচারে
পুষ্টি মূল্যের বিচারে ইলিশকে পুষ্টিকর মাছ বলাই যেতে পারে। তবে একটু কিন্তু আছে! কিন্তুটা হল, অন্যান্য মাছের তুলনায় ইলিশে অনেক বেশি ফ্যাট থাকে, প্রায় ২০ শতাংশ। বেশি খেলে সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু দামের গুঁতোয় ইচ্ছে থাকলেও আমরা খুব বেশি পরিমাণে ইলিশ কেউই খাই না। ইলিশ মাছের তেল নিয়েও আমরা আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে যারা হৃদযন্ত্রের গন্ডগোল বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কিন্তু পুষ্টিবিজ্ঞানীরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ইলিশ মাছের তেল হল হার্ট ফ্রেন্ডলি।
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৫: আমাদের নাকি রোজই চুল পড়ে!
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪০: সে এক স্বর্গপুরীর ‘চিরকুমার সভা’
স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড বা SAFA কম খাওয়াই ভালো। কারণ রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়তে পারে। আবার ওমেগা সিক্স নামক PUFA-টিও শরীরে বেশি ঢুকলে বিপত্তি ঘটাতে পারে। রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে, রক্তনালীতে চর্বির আস্তরণ জমে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়তে পারে।
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৩: ব্যা ব্যা ব্ল্যাক শিপ
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-২০: জীবন্ত লাশ?
ওমেগা থ্রি-র জাদু
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের উপস্থিতির জন্য ইলিশ মাছ এখন শুধু আর আমাদের কাছে সুস্বাদু নয়, দেহের পক্ষে প্রচণ্ড উপকারিও বটে। গুণের শেষ নেই ওমেগা থ্রি-র।
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-২: চলমান সুন্দরবন
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৭: কোরবা হয়ে সাতরেঙ্গা
কী থাকে ওমেগা থ্রি ফাটি অ্যাসিডে?
মাছের তেলও কিন্তু ফ্যালনা নয়। এতে থাকে ফ্যাটি অ্যাসিডের ট্রাই গ্লিসারাইড এস্টার, সামান্য ফ্যাটি অ্যাসিড, ফসফোলিপিড এবং নানা ধরনের ভিটামিন। নিয়মিত আধ গ্রাম থেকে এক গ্রাম মাছের তেল খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ কমে যায়। ফ্যাট সমৃদ্ধ যে কোনও খাদ্য উপাদানে ওমেগা সিক্স এবং ওমেগা থ্রি-র আদর্শ অনুপাত হওয়া উচিত ৪:১। সুখের কথা, মাছে থাকা এই অনুপাত আদর্শ অনুপাতের কাছাকাছি। সেজন্যই শুধু পুষ্টির জন্য নয়, রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিদিন অন্তত ৫০ গ্রাম মাছ খাওয়া প্রয়োজন। ইলিশ মাছের বেলায়ও একই কথা। একবারে বেশি খাবেন না, হজমে অসুবিধা হবে।
যে কোনও মাছ বেশি ভেজে খেলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড-সহ নানা খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। বরং ভাপে ইলিশ বা হালকা ঝোলে ইলিশ অনেক বেশি উপকারি। কাজেই এই বর্ষায় পকেটের রেস্ত বুঝে সপ্তাহে অন্তত দু-দিন জমিয়ে ইলিশ খান, সঙ্গে অবশ্যই ইলিশ মাছের তেল।