ছবি প্রতীকী।
হাইপারটেনসিভ হার্ট ডিজিজ
উচ্চ রক্তচাপ থেকে যদি হার্টের সমস্যা হয়, তাহলে তাকে হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজ বলা হয়। আর দীর্ঘদিন ধরে যদি রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকে বা তার কোনও চিকিৎসা না করা হয় তাদের সাধারণত হাইপারটেন্সিল হার্টের সমস্যাই দেখা যায়। তাই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তার চিকিৎসা করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে হার্টের সমস্যার পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক সমস্যা এড়ানো এড়ানো যায়। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের হার্টের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে। দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আট বছর থেকে ৬০ বছর বয়সি মানুষের হার্ট ফেলিওর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ক্রনিক বা দীর্ঘদিনের উচ্চ রক্তচাপ হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং হার্টের দেওয়ালকে শক্ত করে দেয়। এর ফলে হৃৎপিণ্ডের পাম্প করার ক্ষমতা কমতে থাকে এবং তা রক্ত প্রবাহের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এর থেকেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়ে হার্ট। এর সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেয় রক্তবাহের দেওয়ালগুলি শক্ত হয়ে গেলে পরে তার গায়ে যখন কোলেস্টেরল জমতে থাকে। একে এ্যাপেরস কেরোসিস বলা হয়। এটি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকায় প্রতি তিনজন প্রাপ্তবয়স্কর মধ্যে একজনের এই হাইপারটেন্সির হার্টের সমস্যা দেখা যায়। ভারতে ক্ষেত্রে এরকম নির্দিষ্ট কোনও পরিসংখ্যান এখনও নেই। তবে দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ মানুষই, যারা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছে তারা সকলেই প্রায় উচ্চ রক্তচাপের শিকার।
উচ্চ রক্তচাপ পুরুষদের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে তিনগুণ হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যদি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তাহলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও অনেক কম থাকে। যাদের হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের মধ্যে অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোম ডিকম্পেন্স এবং হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজ কী কী
উচ্চ রক্তচাপের ফলে রক্তবাহগুলির মধ্যে দিয়ে রক্ত প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তবাহ ধমনীর গায়ে এবং হার্টের পেশিতে সরবরাহকারী রক্তবাহগুলির মধ্যে ছোট ছোট প্লাক ( কোলেস্টেরল জমে তৈরি হওয়া) জমলে করোনারি আরটারি ডিজিজ এবং লেফট ভেন্ট্রিকুলার এট্রফি (হার্টের সাইজ বেড়ে যাওয়া) হতে পারে। এর ফলে হার্ট ফেলিওর, এরিদমিয়া, স্ট্রোক, ইসকিমিক হার্ট ডিজিজ এবং হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: উচ্চ রক্তচাপ কিন্তু ডেকে আনে স্ট্রোক-হার্ট অ্যাটাক, অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী করবেন?
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: সবসময়ের সাথী ‘হরিতকী’
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৩: ‘তিসরি মঞ্জিল’ ছিল পঞ্চমের প্রথম অগ্নিপরীক্ষা
কাদের ঝুঁকি বেশি
নিচে দেওয়া কোন এক বা একাধিক কারণ যদি আপনার থেকে থাকে তাহলেই আপনার হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকছে।
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৮: পূর্ণ অপূর্ণ-র মাঝে পথ দেখায় ‘দেবত্র’
বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-৯: ফেরেন্তস পুসকাস: দুটি দেশের হয়েই বিশ্বকাপ খেলেছেন
স্বাদে-আহ্লাদে: কুলের আচারের নাম শুনলে জিভে জল আসে? রইল সহজ রেসিপি
প্রাথমিক লক্ষণ
যেহেতু উচ্চ রক্তচাপের সেরকম কোনও লক্ষণ নেই, তাই বহু মানুষই জানতে পারেন না যে তারা উচ্চ রক্তচাপের শিকার হয়ে আছেন। কোনওরকম শারীরিক লক্ষণ যখন দেখা যায় ততক্ষণে সেই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়ে আছেন। সাধারণত হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজের লক্ষণগুলি হল—
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৪৭: অ্যাকোয়াপোনিক্স প্রযুক্তির প্রয়োগে উৎকৃষ্টমানের মাছ এবং গাছ বেড়ে উঠতে পারে
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১১: বন থেকে বনান্তরে
ডায়েট ফটাফট: ড্যাশ ডায়েট, এক ঢিলে কমবে ওজন ও রক্তচাপ
কীভাবে বুঝবেন আপনি হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজে ভুগছেন
যেহেতু উচ্চ রক্তচাপের সেরকম কোনও লক্ষণ থাকে না, তাই একটা বয়সের পর সাধারণত ৪০ বছরের পর থেকে নিয়মিত রক্তচাপ মাপা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া যাদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা দেখা যায় তাদের ক্ষেত্রে ৪০ বছরের পর থেকেই নিয়মিত রক্তচাপ মাপা খুবই দরকার। আর উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।
চিকিৎসা ও ঘরোয়া ভাবে প্রতিরোধের উপায়
চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেলে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রা পরিবর্তন আনলে, যেমন ফ্যাট জাতীয় খাবার, তেলেভাজা, ফাস্টফুড জাঙ্কফুড না খেয়ে, নিয়মিত শরীর চর্চা করে, ওজন কমিয়ে, মদ্যপান এবং ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করে হাইপারটেন্সিভ হার্ট ডিজিজ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
একটা বয়সের পর নিয়মিত রক্তচাপ মাপাটাই হাইপারটেনশিভ হার্ট ডিজিজ প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায়। বিশেষত যাদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা আছে তারা ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সের পর থেকেই নিয়মিত নিজেদের রক্তচাপ মাপবেন। যদি উচ্চ রক্তচাপ বেশি দেখা যায় তাহলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যা যা করা দরকার সেগুলি নিয়ম করে পালন করতে হবে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।