রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


রেণু খাতুন ও শের মহম্মদ

দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা ওই হাসপাতালেই নার্স রেণু খাতুন। সরকারি চাকরি পাওয়ার পর ওই হাসপাতাল থেকে শনিবার ইস্তফাও দিয়েছেন তিনি। শনিবার রাতে রেণুর স্বামী শের মহম্মদ শেখ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ডান হাত কেটে দেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পর রেণুকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। এর পর তাঁকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁর পরিবারের লোকজন। ওই বেসরকারি হাসপাতালেই রেণুর হাতের কাটা অংশটি রয়েছে। ঘটনার পর ৩৬ ঘণ্টা সময় প্রায় কেটে গিয়েছে। চিকিৎসকরা এ সব ক্ষেত্রে সময়কে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন। প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসকদের মতে, শরিরের কাটা অংশ কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করছে ওই অংশটি জোড়া লাগানো যাবে কি না। শরীরের কোনও অঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরের ৬ ঘণ্টা সময়কে ‘গোল্ডেন পিরিয়ড’ হিসাবে ধরা হয়। তবে ওই ঘটনা যদি শনিবার হয়ে থাকে তা হলে কাটা হাত জোড়া লাগানো প্রায় অসম্ভব। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, রেণুকে যদি পিজির মতো সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা যেত তাহলে হয়তো তাঁর কাটা হাত জোড়া সম্ভব হতো। এখন প্রশ্ন হল, রেণু খাতুনের কেটে দেওয়া হাত কি আবার জোড়া যাবে? নাকি তাঁকে জীবনভর থাকতে হবে ওই অবস্থাতেই? উত্তর বলবে সময়ই।
আড়াই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের পর কোজলসার বাসিন্দা মহম্মদের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিয়ে হয়েছিল রেণুর। যাঁর হাত ধরে নতুন জীবন তিনি শুরু করেছিলেন সেই যে এই কাজ করবে রেণু তা ভাবতেও পারেননি। রেণু দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০২০ সালে চাকরি যোগ দেন। স্ত্রীর চাকরি মহম্মদের পছন্দ নয়। স্বামীর আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে তিনি সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সম্প্রতি নিয়োগপত্রও হাতে পেয়েছিলেন। রেণু সরকারি চাকরিতে যোগ দিলে তাঁকে ছেড়ে চলে যাবেন এই সন্দেহে মহম্মদ বন্ধুদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

Skip to content