শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


ছবি প্রতীকী

তিন সপ্তাহের মধ্যে দুই ডাক্তারি পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু! বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে মঙ্গলবার আলোচনায় বসেন স্বাস্থ্যকর্তারা। আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও। এই আলোচনার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল কীভাবে ডাক্তারি পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যায়।
সোমবার ন্যাশনাল মেডিক্যালের এমবিবিএস-এর পঞ্চমবর্ষের প্রদীপ্তা দাসের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যভবন। বাংলার সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও মনোরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসকদের সঙ্গে ভারচুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যও।
অভ্যন্তরীণ একটি সমীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তথ্য উঠে এসেছে যে, প্রায় ১০ শতাংশ ডাক্তারি পড়ুয়াই কমবেশি মানসিক অবসাদের শিকার। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পালের বক্তব্য, ‘সন্তানসম ছাত্রছাত্রীদের এই ভয়ংকর পরিণতি মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে, তাহলে কি আমরা হেরে যাচ্ছি। সে কারণে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত করতে প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়েছে। তাকেই আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অবসাদের লক্ষণ সহজে চিনতে ‘গেট কিপার’ প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছিল। শিক্ষক,পড়ুয়া ও সহপাঠীরা যাতে সহজে বুঝতে পারেন অবসাদগ্রস্তকে এটাই ছিল ‘গেট কিপার’ প্রশিক্ষণ চালুর মূল উদ্দেশ্য। সেই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করছে বিশ্ববিদ্যালয়। জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে পড়ুয়ারা সেই নম্বরে ফোন করে কথা বলতে পারেন।
এদিকে, ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিয়ে গুগল ফর্মের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। প্রায় ছ’ হাজার পড়ুয়া সাইকোমেট্রিক ফর্ম পূরণ করেন। পড়ুয়াদের পূরণ করা সেই সব সাইকোমেট্রিক ফর্ম বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রায় ১০ শতাংশ পড়ুয়া অল্প থেকে মাঝারি পর্যায়ের হতাশা বা অবসাদের শিকার। আবার কারও কারও মানসিক অসুস্থতার মাত্রা এর থেকেও বেশি। এই তথ্য হাতে আসার পর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যভবনকে জানানোও হয়। এর পরই ওই ‘গেট কিপার’ কর্মসূচি চালু করা হয়।
স্বাস্থ্য সূত্রে এও জানা গিয়েছে, করোনার সময় সাধারণ মানুষের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়, সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের ওয়েবসাইটেও দেখা যাবে। শুধু তাই নয়, অধ্যক্ষদের বলা হয়েছে কলেজের একাধিক জায়গায় বোর্ড লাগিয়ে সেই হেল্পলাইন নম্বর লিখে রাখতে হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিকল্পনা রয়েছে, ভবিষ্যতে উচ্চ-শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ‘গেট কিপার’ কর্মসূচি রাজ্যের সব কলেজে চালু করার। বিষয়টি এদিনের বৈঠকেও উঠে আসে।

Skip to content