শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


কলকাতায় বৃষ্টি

ছবি: প্রতীকী।

আজ ব্যথার জায়গায় সেঁক দেওয়া নিয়ে আলোচনা করব। ঘাড়, কোমর, পায়ের, বা হঠাৎ করে পা-আঙ্গুল মচকে গিয়ে ব্যথা অনেকেরই হয়। আবার এই ধরনের ব্যথা থেকে আরাম পেতে আমরা অনেক সময়ই গরম ও ঠান্ডা সেঁক দিই। কিন্তু এই ধরনের ব্যথা থেকে স্বস্তি পেতে কোন ধরনের ব্যথায়, কখন গরম বা ঠান্ডা সেঁক দেওয়া উচিত সে সম্পর্কে অনেকের পরিষ্কার ধারণা নেই। তাই আজ এই বিষয়েই দু’ চার কথা বলব। ব্যথার ধরন বুঝে ঠিক সেঁক না দিলে কিন্তু উপকার তো মিলবেই না, উল্টে ভোগান্তি বাড়বে। তাই কখন কোন সেঁক দিলে উপকার পাবেন তা এক ঝলকে জেনে নিন।
 

কতক্ষণ সেঁক দেবেন

কোনও জায়গায় হঠাৎ ব্যথা অনুভব হলে এবং ফুলে গিয়ে থাকলে সেখানে বরফের সেঁক দেওয়া উচিত। এতে শিরা-উপশিরাগুলো সংকুচিত হয়। ফলে ব্যথার মাত্রা ও ফোলাভাব ধীরে ধীরে কমে যায়। তবে একটানা ২০ মিনিটের বেশি সেঁক দেবেন না। এক ঘণ্টা পর পর লেগে যাওয়া জায়গায় মিনিট পনেরোর বেশি গরম সেঁক দেওয়া উচিত নয়। মনে রাখবেন, ব্যথার জায়গায় সরাসরি বরফের সেঁক দেওয়া যাবে না। তাতে উপকারের বদলে শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।

আরও পড়ুন:

প্রচণ্ড গরমে সতর্ক থাকুন প্রবীণেরা, একঝলকে জেনে নিন কী করবেন, কী করবেন না

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৫৯: আমার স্বপ্ন যে সত্যি হল আজ…

 

বাতের ব্যথায় বরফের সেঁক না

কোনও প্লাস্টিকের প্যাকেটে অথবা নরম সুতির কাপড়ের মধ্যে বরফের টুকরো নিয়ে তা দিয়ে সেঁক দিতে পারেন। তবে যাঁরা বাতের ব্যথায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের বরফের সেঁক দেওয়া উচিত নয়। কোথাও চোট লাগলে বা ব্যথা হলে প্রথম তিন থেকে চার দিন ঠান্ডা সেঁক দেওয়াই ভালো। তারপরও যদি ব্যথার মাত্রা বেড়ে যায় তখন আস্তে আস্তে গরম সেঁক দিতে হবে। ব্যথার তীব্রতা কেমন, তার উপর নির্ভর করে গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিতে হয়।

আরও পড়ুন:

মুভি রিভিউ: ভোটের বাজারে জমে যাবে ম্যাডাম চিফ মিনিস্টার

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-১৯: কামিনী রায়, জনৈক বঙ্গমহিলা

 

সাধারণ যন্ত্রণায় গরম সেঁক

কোথাও আচমকা লেগে যাওয়ার পর সেখানে যদি নাও ফোলে, যন্ত্রণা হলে গরম সেঁক দেওয়া উচিত। এছাড়া যে ব্যথা অনেক দিন ধরে আছে যেমন হাঁটুর ব্যথা বা পায়ের ব্যথা— সে ক্ষেত্রে গরম সেঁক দিতে হবে। হট ওয়াটার ব্যাগে গরম জল নিয়ে সেঁক দেওয়া যেতে পারে। আবার সুতির কাপড় ইস্ত্রিতে গরম করে নিয়ে ড্রাই সেঁক দিলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়। আগেই বলেছি, এক ঘণ্টা পর পর লেগে যাওয়া জায়গায় মিনিট পনেরোর বেশি গরম সেঁক দেওয়া উচিত নয়। হাঁটু এবং পায়ের পেশীর যন্ত্রণা কমাতেও একই সঙ্গে বরফ এবং ঠান্ডা সেঁক দেওয়াও যেতে পারে। মনে রাখবেন যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তাঁরা কখনওই গরম সেঁক দেবেন না।

আরও পড়ুন:

বিচিত্রের বৈচিত্র: হে নূতন…

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪১: মা সারদার অন্তরঙ্গ সেবক শরৎ মহারাজ

 

জানলে ভালো

ঠান্ডা সেঁকে আক্রান্ত অংশটি অসাড় হয়ে যায় ফলে ব্যথা কমে। অনেকে মনে করেন ঠান্ডা সেঁক জ্বর আসার সম্ভাবনা থাকে। এই ধারণা ভুল। মূলত ফোলা বা প্রদাহ কমানোর জন্যই ঠান্ডা সেঁক দেওয়া হয়। ঠান্ডা সেঁক রক্তপাত বন্ধ করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ঠান্ডা সেঁক গরম সেঁকের থেকে নিরাপদ। অন্যদিকে, আঘাত লাগার জায়গায় গরম সেঁক দিলে সেখানকার রক্ত চলাচল বাড়ে। তাই স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেনের পরিমাণও অনেকটা বাড়ে। ফলস্বরূপ ব্যথা তাড়াতাড়ি কমতে থাকে। গরম সেঁক হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা বা পেশিতে টান ধরে ব্যথা হলে খুব কাজ দেয়।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ব্যথা অনুভব হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গরম সেঁক না দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। উল্লেখ্য, গরম বা ঠান্ডা সেঁক দেওয়ার আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আবারও বলব যে, ব্যথা বুঝে সেঁক দিতে হবে। টানা দীর্ঘক্ষণ সেঁক দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি সেঁক দেওয়ার পরেও যদি কিছু দিনের মধ্যে ব্যথা না কমে তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে। গরম বা ঠান্ডা সেঁক দেওয়া নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে ওপরে দেওয়া YouTube video লিঙ্কটি ক্লিক করুন।

যোগাযোগ: ৯০৫১৮৪৩৫৩১


Skip to content