মঙ্গলবার ১ এপ্রিল, ২০২৫


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

আপনারা অনেকেই জানেন যে কিডনির সমস্যা হলে তার প্রধানত দুটি চিকিৎসা—এক ডায়ালসিস, দুই কিডনি বদল। যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় কিডনি প্রতিস্থাপন।

কিডনির সমস্যা কেন হয়?
হাসপাতালে যত রোগী কিডনির সমস্যার জন্য আসেন বা যাদের হাসপাতালে ডায়ালসিস করতে হয় তাদের মধ্যে কিডনির নিজস্ব সমস্যায় ভুগছেন এরকম রোগীর সংখ্যা খুব কমই হয়। ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৯৫ জনের কিডনি খারাপ হয় প্রধানত দুটি কারণে। ডায়াবেটিস বা ব্লাড প্রেসার বা এই দুটিই আছে। অথচ দুটিই নিয়ন্ত্রণে নেই।

কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে কী করণীয়
ডায়াবেটিস এবং ব্লাড প্রেসারকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। সেই সঙ্গে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। যাতে কিডনিতে স্টোন বা সংক্রমণ যাতে না হয়। আমরা ওষুধের দোকান থেকে ব্যথার ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাই। সেগুলি বন্ধ করতে হবে। শুনলে আশ্চর্য হবেন, প্যারাসিটামল ছাড়া যেকোনও ব্যথার ওষুধই ক্ষতিকর হতে পারে কিডনির জন্য। তাই ডাক্তারবাবুর পরামর্শ ছাড়া এগুলি খাওয়া উচিত নয়।

ডায়াবেটিসে কী হয়?
ডায়াবেটিস যদি আপনার নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে খাবারের মধ্যে থাকা প্রোটিন কিডনি থেকে বেরিয়ে যায়। এটিই কিডনির সমস্যার প্রথম উপসর্গ।
প্রোটিন বেরিয়ে যাচ্ছে বুঝবেন কীভাবে
আপনি যখন প্রস্রাব করছেন তখন ফ্যানা হচ্ছে। প্রসাবে এই ফ্যানা যদি হয় তাহলে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন। ইউরিনের একটি পরীক্ষা ‘ইউরিন ফর অ্যালবুমিন ক্রিয়েটিন রেসিও’ করে দেখতে হবে। তবে এতে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এটা প্রথম উপসর্গ এবং আপনি চাইলেই এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। যদি আমরা ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে সমস্যা এড়ানো সম্ভব। ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের সেই সব ওষুধ নির্বাচন করতে হবে যেগুলি আমাদের কিডনিকে সুরক্ষিত রাখবে। ডায়াবেটিসের এমন কিছু ওষুধ বা ইনসুলিন আছে যেগুলি কিডনি থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়াকে বন্ধ করে ও কিডনিকে সুরক্ষিত রাখে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
সুতরাং প্রস্রাবে ফ্যানা হলে সত্তর ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন। প্রস্রাব করার সময় প্রসাব আটকে যাওয়া, জ্বালা করা, রক্ত পড়ে তাহলেও ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ঠিক আছে কি না তা দেখতে হবে। ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক। ‘HbA1c’ -কে ৭-এর নিচে রাখতে হবে। দেখা গিয়েছে এটিকে যদি আমরা সাড়ে ছয়-এর নীচে রাখতে পারি তাহলে আমাদের কিডনি সুরক্ষিত থাকে। ব্লাড প্রেসারকে ১৩০-৮০-এর নীচে রাখতে হবে। আপনার যদি কিডনির সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ব্লাড প্রেসারকে ১২৫-৭৫ এর নীচে রাখতে হবে। এরকম রাখলে আপনার শরীর কিডনির জটিলতাকে এড়াতে পারবে। অর্থাৎ ডায়ালসিসের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

Skip to content