ছবি প্রতীকী। সংগৃহীত।
তিলজলাতে এক নাবালিকা মেয়ের মৃত্যু বা হত্যা এবং তার নেপথ্যে যে ঘটনার বর্ণনা আমরা সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারছি তার প্রেক্ষিতে আমাদের সমাজে আবহমানকালে ঘটে চলা দুটি বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা। এক নাবালিকা মেয়ের মৃত্যু বা হত্যা খুব দুঃখজনক ঘটনা। যে কোনও দেশে শিশুর মৃত্যু তা আকস্মিক ছড়িয়ে পড়া অসুখের কারণে হোক অথবা তাকে কোনও উদ্দ্যেশের কারণে যেমন যৌন নিগ্রহের জন্য বা কোনও প্রমাণ লোপাটের জন্য হত্যা করা, বড়সড় অপরাধ।
তিলজলার ঘটনার সঙ্গে আরও একটি বিষয় জুড়ে গিয়েছে, তা হল তান্ত্রিক সাধনার যোগ। এখানে তন্ত্রের সাধনার যে কারণটি বলা হয়েছে, সেটি আরও মারাত্মক। কারণটি হল, নিজেদের সন্তান কামনায় সফল্য লাভের জন্য অই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে, সমাজে এই ধরনের বিশ্বাস এবং অভ্যাস গড়ে ওঠে কীভাবে? কীভাবে একটি শিশুকন্যাকে রাষ্ট্র এবং প্রশাসনিক নজরদারির ঘেরাটোপের মধ্যে হত্যা করা হয় কতগুলি এমন কারণে যা এখনও সুস্পষ্ট হয়নি? আমাদের সমাজে মেয়েদের, সে শিশু হোক বা বড়— কেউ যৌন হেনস্থা বা হিংসা থেকে মুক্ত নয়। জীবনের প্রতিটি পর্যায় তাদের এ ভাবে শুধুই হেনস্থার সম্মুখীন হয়ে যেতে হয়। কারণ কি শুধুই পিতৃতান্ত্রিক সমাজের প্রেক্ষাপট, নাকি আরও কোনও জটিল সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যুক্ত আছে। অনেকেই প্রতীকী ভাবে বলতে চান যে, নিজেদের বিজয় পতাকা তুলতে হবে শত্রু শরীরে আঘাত করে।
তিলজলার ঘটনার সঙ্গে আরও একটি বিষয় জুড়ে গিয়েছে, তা হল তান্ত্রিক সাধনার যোগ। এখানে তন্ত্রের সাধনার যে কারণটি বলা হয়েছে, সেটি আরও মারাত্মক। কারণটি হল, নিজেদের সন্তান কামনায় সফল্য লাভের জন্য অই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে, সমাজে এই ধরনের বিশ্বাস এবং অভ্যাস গড়ে ওঠে কীভাবে? কীভাবে একটি শিশুকন্যাকে রাষ্ট্র এবং প্রশাসনিক নজরদারির ঘেরাটোপের মধ্যে হত্যা করা হয় কতগুলি এমন কারণে যা এখনও সুস্পষ্ট হয়নি? আমাদের সমাজে মেয়েদের, সে শিশু হোক বা বড়— কেউ যৌন হেনস্থা বা হিংসা থেকে মুক্ত নয়। জীবনের প্রতিটি পর্যায় তাদের এ ভাবে শুধুই হেনস্থার সম্মুখীন হয়ে যেতে হয়। কারণ কি শুধুই পিতৃতান্ত্রিক সমাজের প্রেক্ষাপট, নাকি আরও কোনও জটিল সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যুক্ত আছে। অনেকেই প্রতীকী ভাবে বলতে চান যে, নিজেদের বিজয় পতাকা তুলতে হবে শত্রু শরীরে আঘাত করে।
ভারতীয় সমাজে একসঙ্গে দুটি দর্শন যেন পাশাপাশি অবস্থান করে। একদিকে পিতৃতান্ত্রিক দর্শন, অন্যদিকে সীতা ও সূর্পণখাদের দর্শন। পিতৃতান্ত্রিক দর্শন আমাদের সব সময় মনে করায়, আমরা আছি পিতার দেশে। পিতার দেশে আমাদের একটি নির্দিষ্ট ধাঁচের লিঙ্গ বিভাজনকে মাথায় রেখে চলতে হয়। সেখানে নারী মূলত থাকবে শিশুদের মানুষ করতে। আর পরিবারের সবাইকে এবং শিশুকে খাবার তৈরি করে খাওয়াতে। এই দুটি কাজ সামলে নারী যদি পারে তাহলে অন্য কাজ করবে। এ ভাবে নারী এবং পুরুষের মধ্যে এই ধারনা গড়ে তোলা হয়েছে যে, নারী এই পিছুটান সামলেই সমাজে নারী রূপে থাকবে। আর পুরুষ? মল্লিকা সেন গুপ্তের কথায়, ছোটবেলা থেকেই এই দর্শন এবং অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে বড় হয়ে উঠে যখন নিজেরা বাবা হয়, তখন অজান্তেই নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে। পিতারা এখনও মনে করেন, তাঁরাই পরিবারের মূল অন্ন রোজগার করার মানুষ। সেই কারণে তিনি বাড়ি থেকে দূরে থেকে হলেও তাঁদের নানা রকম কাজ করে যেতে হবে। ফলে সন্তান মানুষ করার কাজে তিনি নিজেকে সেই ভাবে জড়িয়ে নিতে পারেন না।
এই ভাবে নিজেকে একটা কঠোর নিয়মের মধ্যে আটকে রাখা কোথাও যেন নিজের চারপাশে একটা পরিখা কেটে রাখা নিঃসঙ্গ মানুষ হয়ে থেকে যাওয়াকে মনে করায়। নিজেকে যেহেতু সন্তানকে মানুষ করার জন্য যোগ্য মনে করছেন না, তাই সন্তান মানুষ করার দায়টাও সন্তানের মায়ের উপর দিয়ে রাখছেন। সেই নিঃসঙ্গতার কারণে শিশুরা এখনও মায়ের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে বেশি। মা তার জীবনে নিজেকে সন্তানের থেকে আলাদা করার অনুভুতিকে পাত্তা দেন না। মায়ের সঙ্গে সন্তানের বন্ধুত্ত্ব গড়ে ওঠে। ওদিকে পিতা সবার কাছেই মানে স্ত্রী, সন্তান সবার কাছেই পিতা হয়ে থেকে যেতে চায়। পিতার আদেশকে অমান্য করা যাবে না। পিতার আদেশ অমান্য করলেই শাস্তির খাঁড়া নেবে আসবে। তবে কেট মিলেটের বলা এই লিঙ্গ রাজনীতিতে যে বদল আনা যায় তার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। সেই বিষয়টি নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে। আপাতত এই যৌন হেনস্থা এবং অন্যান্য যে সমস্ত হেনস্থা হয়ে চলেছে সেগুলর কারণ আলোচনা করি।
এই ভাবে নিজেকে একটা কঠোর নিয়মের মধ্যে আটকে রাখা কোথাও যেন নিজের চারপাশে একটা পরিখা কেটে রাখা নিঃসঙ্গ মানুষ হয়ে থেকে যাওয়াকে মনে করায়। নিজেকে যেহেতু সন্তানকে মানুষ করার জন্য যোগ্য মনে করছেন না, তাই সন্তান মানুষ করার দায়টাও সন্তানের মায়ের উপর দিয়ে রাখছেন। সেই নিঃসঙ্গতার কারণে শিশুরা এখনও মায়ের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে বেশি। মা তার জীবনে নিজেকে সন্তানের থেকে আলাদা করার অনুভুতিকে পাত্তা দেন না। মায়ের সঙ্গে সন্তানের বন্ধুত্ত্ব গড়ে ওঠে। ওদিকে পিতা সবার কাছেই মানে স্ত্রী, সন্তান সবার কাছেই পিতা হয়ে থেকে যেতে চায়। পিতার আদেশকে অমান্য করা যাবে না। পিতার আদেশ অমান্য করলেই শাস্তির খাঁড়া নেবে আসবে। তবে কেট মিলেটের বলা এই লিঙ্গ রাজনীতিতে যে বদল আনা যায় তার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। সেই বিষয়টি নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে। আপাতত এই যৌন হেনস্থা এবং অন্যান্য যে সমস্ত হেনস্থা হয়ে চলেছে সেগুলর কারণ আলোচনা করি।
আরও পড়ুন:
বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১২: দক্ষ কর্মী নির্বাচন বনাম নারী সহকর্মী
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৬: কবির ভালোবাসার পশুপাখি
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৭: ওখানে কে?
পিতৃতান্ত্রিক সমাজে এই লিঙ্গ রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিভিন্ন সম্পর্কের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের নিষেধ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি। এ বিষয়ে ফ্রয়েডিয় আলোচনার সাহায্য নিচ্ছি। তিনি দেখিয়েছেন, মানুষ গোষ্ঠীবদ্ধ থাকাকালীন সময়ে নিজেদের আদি পুরুষ যার থেকে তাদের উৎপত্তি হয়েছে তাকে টোটেম বলেছেন এবং এই টোটেম মূলত কোনও প্রাণী। এই টোটেম বংশানুক্রমিক এবং সমস্ত রীতিনীতি এই টোটেমের প্রতি তাঁদের অনুগত ভাব থেকে তৈরি হয়ে ছিল। এই প্রথার সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বিষয় হল, একই টোটেমভুক্ত ব্যক্তিরা পরস্পর যৌন সম্পর্কে আবদ্ধ হতে পারবেন না। অর্থাৎ তাঁরা পরস্পর বিবাহ করতে পারবেন না। আবার এই নিষেধের অন্যথা হলে শাস্তি যেমন আছে, সেই সঙ্গে সমস্ত গোষ্ঠী প্রতিশোধ গ্রহণে তৎপর হয়।
গোষ্ঠী এই ধরনের সম্পর্ককে এক ধরনের বিপদ এবং অকল্যাণকর বলে মনে করত। তাই গোষ্ঠীর সবার দায়িত্ব এই ধরনের ঘটনা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখা। সে-কারণে প্রথমেই মা এবং বোন সম্পর্কে অজাচার অর্থাৎ তাঁদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না বলা হয়। কোনও কোনও গোষ্ঠীতে বলা হয়, দলের যে কোনও নারীর সঙ্গে বিবাহ-সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না। এই অজাচারের অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য দেখা গিয়েছে, ছেলেদের বোনেদের নাম না নিতে। বয়ঃসন্ধি পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ এই সমাজে বয়ঃসন্ধি তে পৌঁছলে উৎসব করা হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও মেয়েরা রজস্বলা হলে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসব আসলে এই মেয়ে বা ছেলেটির শরীরে এবং মনে যৌন আচারের প্রতি আকর্ষিত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। ফলে নিজেদের সেই যৌন ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ যাতে অজাচার না হয়ে যায় তাই তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও রাত কাটাতে চায়।
গোষ্ঠী এই ধরনের সম্পর্ককে এক ধরনের বিপদ এবং অকল্যাণকর বলে মনে করত। তাই গোষ্ঠীর সবার দায়িত্ব এই ধরনের ঘটনা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখা। সে-কারণে প্রথমেই মা এবং বোন সম্পর্কে অজাচার অর্থাৎ তাঁদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না বলা হয়। কোনও কোনও গোষ্ঠীতে বলা হয়, দলের যে কোনও নারীর সঙ্গে বিবাহ-সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না। এই অজাচারের অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য দেখা গিয়েছে, ছেলেদের বোনেদের নাম না নিতে। বয়ঃসন্ধি পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ এই সমাজে বয়ঃসন্ধি তে পৌঁছলে উৎসব করা হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও মেয়েরা রজস্বলা হলে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসব আসলে এই মেয়ে বা ছেলেটির শরীরে এবং মনে যৌন আচারের প্রতি আকর্ষিত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। ফলে নিজেদের সেই যৌন ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ যাতে অজাচার না হয়ে যায় তাই তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও রাত কাটাতে চায়।
আরও পড়ুন:
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১২: বাইগা রিসর্ট ও বস্তি
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৯: সুরের আকাশে ঘটালে তুমি স্বপ্নের ‘শাপমোচন’
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৪: পঞ্চমকে সিনেমা হলে বসিয়েই বেরিয়ে যান রীতা
শুরুতে গোষ্ঠীতে সঙ্ঘ বিবাহ প্রচলিত ছিল। এর ফলে যে নারী গোষ্ঠীর আইন-কানুন মেনে চলেছেন তাঁর সন্তান তাঁকে মা বলে বলছেন শুধু নয়, সামাজিক সম্পর্কের জন্য গোষ্ঠীর সমস্ত পুরুষ এবং মহিলাকেই পিতা এবং মাতা বলে ভাবতে শিখছে। এতে অজাচার নির্দিষ্ট মূল্যবোধ নৈতিকতা, সামাজিক কর্তব্য এবং কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম হল, গোষ্ঠী বিবাহ অজাচারকে পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে পারছে না কেন? দ্বিতীয়ত, পরবর্তীকালে কি ব্যক্তি বিবাহ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পিছনে অজাচারের বদলে সমাজে ক্ষমতা দখলের লড়াই অনেক বেশি নৈতিকতার প্রকটধারী হয়ে ওঠে? যার ফলে নারীকে, শিশুকে আঘাত করা, যৌন নিপীড়ন করা খুব সহজ মাধ্যম হয়ে ওঠে ক্ষমতা বিস্তার করার জন্য।
অর্থাৎ অজাচারের মধ্যে কোথাও নারী এবং শিশুদের রক্ষা করতে হবে যেমন ভীষণ সত্যি, তেমনই যদি নারী এবং শিশু অজাচারে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের অত্যাচার করে মেরে ফেলাও খুব কঠিন হবে না এই সব পুরুষদের কাছে। ফলে পুরুষের এক ধরনের বিশিষ্ট তৈরি হয়, যাকে আমরা হেজেমনিক বা আধিপত্যবাদি পৌরুষের ধারণা বলতে পারি। এই ধরনের পৌরুষের ধারণার মূল জায়গাটা হল, শক্তি প্রদর্শন। শারীরিক, মানসিক, যৌন অভিব্যক্তি সব জায়গায় শক্তি প্রদর্শন করার মধ্যেই আধিপত্যবাদি পৌরুষের জয়গান লুকিয়ে আছে।
অর্থাৎ অজাচারের মধ্যে কোথাও নারী এবং শিশুদের রক্ষা করতে হবে যেমন ভীষণ সত্যি, তেমনই যদি নারী এবং শিশু অজাচারে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের অত্যাচার করে মেরে ফেলাও খুব কঠিন হবে না এই সব পুরুষদের কাছে। ফলে পুরুষের এক ধরনের বিশিষ্ট তৈরি হয়, যাকে আমরা হেজেমনিক বা আধিপত্যবাদি পৌরুষের ধারণা বলতে পারি। এই ধরনের পৌরুষের ধারণার মূল জায়গাটা হল, শক্তি প্রদর্শন। শারীরিক, মানসিক, যৌন অভিব্যক্তি সব জায়গায় শক্তি প্রদর্শন করার মধ্যেই আধিপত্যবাদি পৌরুষের জয়গান লুকিয়ে আছে।
আরও পড়ুন:
হেলদি ডায়েট: দাঁতকে অবহেলা নয়, শিশুর দাঁতের যত্ন নিন গোড়া থেকেই, সতর্ক হন এই সব খাবারে
বিধানে বেদ-আয়ুর্বেদ, আধুনিক আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় সায়াটিকার অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব
ছোটদের যত্নে: আপনার সন্তান কি প্রায়ই কাঁদে? শিশুর কান্না থামানোর সহজ উপায় বলে দিচ্ছেন ডাক্তারবাবু
এই ভাবে আধিপত্যবাদি পৌরুষের দর্শন যা অনেকটাই শ্রুতি ক্রমেই পরের প্রজন্মের মধ্যে চালিত হতে থাকে। আর নারী পুরুষের মধ্যে দু’ ভাগের যাকে বাইনারি বলছি, তার মধ্যে ক্রমেই বৈষম্যকে ঠেলে ঢুকিয়ে দিতে থাকে। যুদ্ধ বা শান্তির সময়ে যখনই ঐক্যবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করতে যায়, তখন এই বৈষম্যের মধ্যে আরও গভীর ভাবে ঢুকিয়ে দিতে থাকে পুরুষের প্রতি পুরুষের ভ্রাতৃত্ব বা আনুগত্যের ধারণা। এই আনুগত্যের ধারণা আবার পুরপুরি বিসমকামিতার উপর দাড়িয়ে আছে। নারীর শরীর ও মন সবকিছুর উপর অধিকার স্থাপন না হলে পিতৃতন্ত্র বিপন্ন হয়ে যাবে। তাই যৌন হেনস্থা করে নারীকে সবসময় ত্রস্ত রাখতে হবে। ভয়ের পরিবেশ সবসময় তৈরি করে রাখতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, নারীদের সন্তান উদপাদন করার ক্ষমতাকে নিয়েই আমাদের মধ্যে যত সমস্যা। নারীকে ক্ষমতার বেড়ি না পরালে নিজের সম্পত্তি তা ইন্টেলেকচুয়াল হোক বা টাকা পয়সা, কোনও কিছুই রক্ষা করা যাবে না। এ সবকে রক্ষা করা না গেলে পৃথিবীতে যে ক্ষমতা ভোগ করছে পিতৃতন্ত্র তা আর করা সম্ভব হবে না। তাই নারী শরীরকে সবসময় নির্মাণ করছি আর ভাঙছি। হিংসা সেখানে একটি মাধ্যম, যার নানা রকমের রূপ আছে, হত্যা করা থেকে মানসিক, শারীরিক আঘাত করা। তা দিয়ে প্রতিনিয়ত পৌরুষ আর নারীত্ব নির্মাণ করে চলেছে সমাজ।
ছবি: লেখক
* প্রবন্ধের বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
পরিশেষে বলা যায়, নারীদের সন্তান উদপাদন করার ক্ষমতাকে নিয়েই আমাদের মধ্যে যত সমস্যা। নারীকে ক্ষমতার বেড়ি না পরালে নিজের সম্পত্তি তা ইন্টেলেকচুয়াল হোক বা টাকা পয়সা, কোনও কিছুই রক্ষা করা যাবে না। এ সবকে রক্ষা করা না গেলে পৃথিবীতে যে ক্ষমতা ভোগ করছে পিতৃতন্ত্র তা আর করা সম্ভব হবে না। তাই নারী শরীরকে সবসময় নির্মাণ করছি আর ভাঙছি। হিংসা সেখানে একটি মাধ্যম, যার নানা রকমের রূপ আছে, হত্যা করা থেকে মানসিক, শারীরিক আঘাত করা। তা দিয়ে প্রতিনিয়ত পৌরুষ আর নারীত্ব নির্মাণ করে চলেছে সমাজ।
ছবি: লেখক
* প্রবন্ধের বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
* বৈষম্যের বিরোধ-জবানি (Gender Discourse): নিবেদিতা বায়েন (Nibedita Bayen), অধ্যাপক, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, পি আর ঠাকুর গভর্নমেন্ট কলেজ।