বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

সবে গরম পড়েছে। আর এখনই প্রায় সূর্যের তাপে নাজেহাল অবস্থা আমজনতার। যত দিন যাচ্ছে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। সেই কারণেই এসি কেনার জন্য ইলেক্ট্রনিকসের দোকানে ভিড় চোখে পড়ার মতো। কয়েক বছর ধরে বাজারে ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি-র চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। এখন আবার চলে এসেছে ডুয়েল ইনভার্টার এসি। দিন দিন যে হারে গরম বাড়ছে তাতে ক্রেতাদের এই প্রযুক্তির এসি-ই বেশি পছন্দের হয়ে উঠেছে। এই ডুয়েল ইনভার্টার এসি আরও বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী। এসি অনেক রকমের হয়, তবে চলে বেশি স্প্লিট এসি এবং উইন্ডো এসি।

স্প্লিট না উইন্ডো? কোনটি বেশি স্মার্ট?
উইন্ডো এসি-র চেয়ে স্প্লিট এসি অনেক বেশি স্মার্ট। আর দেখতেও খুব সুন্দর। এর সবচেয়ে সুবিধা হল, কম্প্রেসার ইউনিট বাড়ির বাইরে থাকে। তাই কোনওরকম শব্দও হয় না। এদিকে, উইন্ডো এসি’তে কম্প্রেসার ইউনিট সঙ্গে থাকে তাই ভালোই শব্দ হয়। ঘরে উইন্ডো এসি থাকলে একটা পুরো জানালা সব সময় বন্ধ রাখতে হয়। তাই ঘরে আলোবাতাসও কম প্রবেশ করে। যদিও স্প্লিট এসি’র থেকে উইন্ডো এসি’র দাম কিছুটা কম।

ইনভার্টার এসি-র চাহিদা বেশি
এই প্রযুক্তির এসি-র নামে ইনভার্টার কথাটা আছে বলে অনেকেই মনে করেন, এর মধ্যে ইনভার্টার সেট করা রয়েছে। তাই বিদ্যুৎ চলে গেলেও ইনভার্টার এসি চালু থাকবে। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। ইনভার্টার এসি চালাতেও বিদ্যুৎ লাগে। এই ধরনের ইনভার্টার এসি বা স্টার রেটেড ইনভার্টার এসি-র প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, সাধারণ স্টার রেটেড এসি’র থেকে এই প্রযুক্তির এসি অনেকটা বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। ইনভার্টার প্রযুক্তি কম্প্রেসারকে ধীর গতিতে সক্রিয় রাখে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে।

‘টন’-এর অর্থ কী?
এসি’র ক্ষেত্রে ‘টন’-এর অর্থ হল— একটি এসি প্রতি ঘণ্টায় যে পরিমাণ তাপ বের করতে পারে তার পরিমাণ। এই ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে আপনার ঘরে কত টনের এসি লাগবে। এক, দেড় না দু’ টন? বাজারে এখন এক, দেড়, দু’ টনের এসি-র চাহিদা বেশি। তবে আপনার বাড়িতে কত টনের এসি প্রয়োজন, সেই সিদ্ধান্তটা নিজে না নিয়ে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

কেনার আগে দেখে নিন স্টার রেটিং
বিভিন্ন প্রযুক্তির এসি’র গায়ে এক বা একাধিক স্টার চিহ্ন থাকে। সাধারণত এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত স্টার চিহ্ন থাকে। আপনার পছন্দের এসি’তে কতটা বিদ্যুৎ খরচ হবে, এই স্টার রেটিং সেটারই সাক্ষ্য বহন করে চলে। আপনার এসিতে যত বেশি স্টার থাকবে তত কম বিদ্যুৎ খরচ হবে।

কোথায় রাখবেন আউটলেট?
সরাসরি রোদ পড়ে না এমন জায়গায় এসি’র আউটলেট (কম্প্রেসার ইউনিট) রাখতে হবে। অনেকে রোদ, ধুলোবালির হাত থেকে আউটলেটকে বাঁচাতে ঢাকা দিয়ে রাখেন। যা করা কখনও উচিত নয়। এতে আউটলেট খারাপ হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

কীভাবে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবেন?
বাজেট যদি বেশি থাকে তাহলে ইনভার্টার এসি কেনাই শ্রেয়। কারণ, এই প্রযুক্তির এসিগুলো বেশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী। তবে ইনভার্টার এসি কেনা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে বেশি স্টার রেটিংয়ের এসি কেনা উচিত। বেশি স্টারের এসি’তেও বিদ্যুৎ খরচ অনেকটাই কম হয়। মনে রাখতে হবে, বিশেষ কোনও প্রয়োজন ছাড়া সব সময় ২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে এসি চালাতে হবে। এতে শুধু বিদ্যুৎ খরচ কমে না, আর শরীরও ভালো থাকে। এসিতে এনার্জি সেভার মোড থাকলে তাও ব্যবহার করতে পারেন। বছরে অন্তত দু’বার এসি পুরো সার্ভিস করা উচিত। এতে এসি অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।

গরমে এসি-র চাহিদা বেশি। আর তাই চাহিদা বুঝে বাজারেও এখন অনেক সংস্থারই আকর্ষণীয় নতুন প্রযুক্তির বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী এসি পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ভোল্টাস, ডাইকিন, হিতাচি, ব্লুস্টার, স্যামসাং, এলজি, হায়ার-এর মতো এসি প্রস্তুতকারী সংস্থা রয়েছে। এদের ইনভার্টার ও স্টার রেটিংয়ের এক টন, দেড় টন ও দু’ টনের এসি পাওয়া যায়। এক টনের ইনভার্টার এসি’র দাম কমবেশি প্রায় ৩২ হাজার টাকা থেকে শুরু। দেড় টনের ইনভার্টার এসি পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা থেকে। দু’ টনের ইনভার্টার এসি’র দাম শুরু হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে। তবে, সাধারণ স্টার রেটিংয়ের এসি কিনলে ইনভার্টার এসি’র থেকে কিছুটা দাম কম পড়বে।

Skip to content