বল পায়ে গ্যারিঞ্চা।
ব্রাজিলের আরজে শহরের পাঁউ গ্রান্ডি অঞ্চলে ২৮ অক্টোবর ১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন ম্যানুয়েল ফ্রান্সিস্কো দস সান্তোস। বিশ্ব ফুটবলে গ্যারিঞ্চা নামে বিখ্যাত। তাঁকে বলা হয় পেলের দোসর। ফুটবল বিশ্বে সমালোচকরা বলেন, ব্রাজিলে তাঁর মতো ফুটবলার পেলের পর আর কেউ আসেননি। কিন্তু সেটা কোনও কথা নয়। বহু বিখ্যাত ফুটবলার পরবর্তী সময়ে দর্শকদের মন কেড়েছেন এবং এখনও কেড়েই চলেছেন। গ্যারিঞ্চা তাঁদের অন্যতম। যাঁকে আজও ফুটবল দুনিয়া মনে রেখেছেন, রাখবেন।
গ্যারিঞ্চা শব্দের অর্থ হচ্ছে উড়ন্ত পাখি। তিনি পাখির মতো সারা মাঠ জুড়ে যেন উড়ে চলতেন। তাঁর ড্রিবলিং যাঁরা দেখেছেন তাঁরাই মুগ্ধ হয়েছেন নিমেষে। গ্যারিঞ্চার পা দুটি সমান ছিল না। দুটি পায়ের মধ্যে প্রায় ৬ সেন্টিমিটারের ছোট বড় তারতম্য ছিল। তাঁর সেই বাঁকানো পায়ের জাদুতে এমন এক সম্মোহন ছিল যে, আবেগে আপ্লুত হতেন মাঠ ভর্তি হাজার হাজার দর্শক, সাংবাদিক এবং রাষ্ট্র নেতারা।
আরও পড়ুন:
বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-১২: স্ট্যানলি ম্যাথুজ— একজন কিংবদন্তি, লড়াই আবেগ আর মেহনতী জনতার বন্ধু
অজানার সন্ধানে: অঙ্কই ধ্যানজ্ঞান, মোটা বেতনের চাকরি নির্দ্বিধায় ছেড়ে দেন আইআইটি-র শ্রবণ
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৫: যে ছিল আমার ‘ব্রতচারিণী’
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১৪: ভয়ংকর গর্ভ
ক্রীতদাস পরিবারে জন্ম। বস্তির অলিতে গলিতে বল পায়ে দৌড়ে বিশ্বকাপের মাঠ অবধি আসতে বহু চড়াই উৎরাই ডিঙোতে হয়েছে। ১৯৫৩ সালে বোটোফোগোর হয়ে প্রথম অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক। দল যখন ২-১ গোলে পিছিয়ে তখন এই বাঁকা পায়ের জাদুতে পরপর তিন গোল দিয়ে একাই বোটোফোগোকে জিতিয়ে দিলেন। ব্রাজিল পেয়ে গেল এক অনবদ্য ফুটবলার।
আরও পড়ুন:
বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-২০: দুর্নীতির দুর্বিপাকে পিতৃতান্ত্রিক দ্বন্দ্ব
পর্দার আড়ালে, পর্ব-৩৩: ‘অপরাজিত’র সম্পাদনার সময় সত্যজিতের মনে হয়েছিল মিলি চরিত্রটির প্রয়োজন নেই, অগত্যা বাদ পড়লেন তন্দ্রা
স্বাদে-আহ্লাদে: তপ্ত দিনে প্রাণ জুড়োতে বন্ধুদের জন্য বানিয়ে ফেলুন আমপান্না
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: মানুষ কি মৃত্যুর পরেও জীবনের ছবি দেখতে পায়? অদ্ভুত চমকপ্রদ তথ্য ধরা পড়ল ইইজি রেকর্ডিংয়ে
১৯৫৪-র বিশ্বকাপে জায়গা পাননি। ১৯৫৮-র বিশ্বকাপে তাঁর এবং পেলের জুটি ব্রাজিলকে বিশ্ব সেরার খেতাব এনে দেয়। ১৯৬২-র বিশ্বকাপে পেলে চোট পেয়ে দু’ ম্যাচ খেলার পরেই মাঠের বাইরে। হাল ধরলেন গ্যারিঞ্চা। ফাইনালে জ্বর গায়ে খেলতে নেমে ভাভা এবং আমালিরদোদের দিয়ে গোল করিয়ে পান সোনার বুট। সেই সঙ্গে সেরা খেলোয়াড়ের জন্য সোনার বল।
আরও পড়ুন:
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১১: ‘কটি পতঙ্গ’ ছবিতে পঞ্চমের সুরে কিশোর নিজেকে উজাড় করে দেন
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: মর্ত্যের অমৃত রসুন
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২০: শোওয়ার বালিশ বিছানা কেমন হবে? শক্ত না নরম?
মাত্র ৫০ বছর বয়সে, ২০ জানুয়ারি ১৯৮৩ সালে প্রয়াত হন এই ফুটবল নায়ক। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই এর জন্য দায়ি। কিন্তু মহাকাল তাঁকে স্মরণ রাখবে প্রতি নিয়ত।
* বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল (Football – Top players first goals): শমীন্দ্র ভৌমিক (Samindra Bhowmick), শিল্পী ও ছড়াকার।