শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

জলাশয়ে দূষণ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আর তার কারণেই জলজ জৈব সম্পদ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ সবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সততই। সতর্ক না হলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য ব্যাহত হবে। জল দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করা হয় জল পরীক্ষার মাধ্যমে। মূলত ভৌত, রাসায়নিক ও অনুজীব বিজ্ঞানের পদ্ধতি অবলম্বন করেই এই পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে। জলজ প্রাণী বিশেষত, মাছের দেহজ ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন দেখে জল দূষণের মাত্রা ও প্রভাব নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে আজকাল।
মাছের কানকোতে কিছু উৎসেচক পরীক্ষা বা পরিমাপ করে যেমন ATPase, Alkaline phosphatase, N এবং O ডিমিথাইলেটস এবং Cytochrome P-420 এগুলিকে Bio-indicator বা Bio-marker হিসেবে দেখা হচ্ছে মাছের মুড়োতে অবস্থিত Acetylcholinestense পরিমাপ করে বলা সম্ভব হচ্ছে যে জলে কীটনাশকজনিত দূষণ হয়েছে কিনা। যদি জলে দূষণের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয়ে থাকে, তাহলে এই উৎসেচকটির মাত্রা লক্ষণীয়ভাবে কম হবে। এই লক্ষণ দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা দিয়ে গ্রহণ করে জলকে শুদ্ধিকরণ করা প্রয়োজন। এই রাসায়নিক কীটনাশকগুলি খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। আগাম ব্যবস্থা নিলে অনুপ্রবেশকারী অবাঞ্ছিত এই জাতীয় রাসায়নিকের দ্বারা ক্ষতি এড়ানো সম্ভব কেবলমাত্র কয়েকটি মাছের কানকোতে থাকা উৎসেচকের পরীক্ষার মাধ্যমে।
আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৯২: অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ ল্যাটা মাছ প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষ করলে স্বনির্ভর হওয়া সম্ভব

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৫০: লক্ষ্মণ—ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত

পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানী মহলে মাছের কানকোতে অবস্থিত এই জাতীয় উৎসেচকগুলি যথেষ্ট আগ্রহের সঞ্চার করেছে। এ তো গেল জৈব নির্দেশকের কিছু কার্যকারিতার কথা। এছাড়া মাছের যদি ভিটামিন-সি বা অ্যাসকরবিক অ্যাসিডের ঘাটতি না থাকে তাহলে মাছ অনেক বাড়তি সুবিধা পায়। তবে মাছের শরীরে অনুপ্রবেশকারী রাসায়নিক কীটনাশক বা কীটবিতারক বা ভারী ধাতু সম্বলিত কোনও ক্ষতিকর পদার্থ যদি মাছের শরীরে কোনও ভাবে ঢুকে যায়ও তাহলেও কয়েকটি উৎসেচক আছে যেমন Cytochrome P-420, NADPH Cytochrome P-420, Reductase এদের সাহায্যে (থাকে সাধারণত যকৃত ও কানকোতে) দ্রবণীয় পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। তাই জলজ দূষণ চিহ্নিতকরণে মাছের এক সদর্থক ভূমিকা আছেই।

Skip to content