বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

আমাদের রাজ্যে মাছচাষ শুরু হয় ফাল্গুন মাস থেকে। চাষের শুরুতে কয়েকটি বিষয় জানা জরুরি। যেমন: জলাশয়ে জলের ঠিকঠাক গভীরতা এবং গুণমান।
পর্যাপ্ত উদ্ভিদকণা ও প্রাণীকণার উপস্থিতি।
মাছের সঠিক প্রজাতি নির্বাচন এবং স্বাস্থ্যবান নীরোগ পোনার যোগানের বন্দোবস্ত করা।
নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পরিমাণমতো জৈব সার প্রয়োগ।
মাছের খাবারের ব্যবস্থাপনা।
মাসে একবার করে জাল টানা এবং মাছের স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণ।
নিয়মিত পুকুরের তদারকি, বিশেষকরে ভোরের দিকে হলে ভালো হয়।
সর্বোপরি রোগ এবং মাছের শত্রুর হাত থেকে তাকে রক্ষা।
 

জানলে ভালো

ধানিপোনা লম্বায় হয় ১০ থেকে ২৫ মিলিমিটার। চারাপোনা সাধারণত হয় ৪০ থেকে ১০০ মিলিমিটার। ডিমপোনা সাধারণত ৮ মিলিমিটার হয়ে থাকে। মে পুকুরে ডিমপোনা থেকে ধানীপোনা অবধি পালন করা হয় তাকে আঁতুর পুকুর বলে। এর ক্ষেত্রফল ২ থেকে ১০ কাঠা পর্যন্ত এবং জলের গভীরতা ৩ থেকে ৪ ফুট হলেই ভাল। যে পুকুরে ধানি থেকে চারাপোনা অবধি চাষ করা হয় সেটি হবে ১০ থেকে ২০ কাঠা এবং জলের গভীরতা ৪ থেকে ৬ ফুট হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৯৬: পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ‘মিল্ক ফিশ’ কখনও চেখে দেখেছেন?

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৫৬: রামায়ণে রামচন্দ্রের যাত্রাপথ সুগম হওয়ার কারণেই কি সীতার উপস্থিতি?

মে মাসে পুকুরে চারাপোনা থেকে বড় মাছ উৎপাদন করা হয় সেটিকে পালন পুকুর বলা হয়। এটির জলের গভীরতা ৫ থেকে ৭ ফুট এবং এর আকার হবে ২০ কাঁটার বেশি। পুকুর পাড়ের দু’ দিকের ঢাল ৪৫ ডিগ্রি হতে হবে। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ৫ সিপিএম-এর কম নয় এবং জলের পিএইচ ৭.৫ থেকে ৮, স্বচ্ছতা ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার হওয়া দরকার। তলদেশের মাটি দোঁয়াশ হলে ভালো হয়। কাঠাপ্রতি ১০ কেজি গোবর সার প্রতিমাসে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। গোবরসারের কোনও পরিবর্ত হবে না।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৫: কোন আলো লাগলো ‘পুত্রবধূ’-র চোখে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩৯: ইন্দুমতী ও সুরবালা

ভুলবশত পোল্ট্রি থেকে মুরগীর বিষ্ঠা যেন ভুলবশত ও যেন না দেওয়া হয়। কিঞ্চিৎ অজৈব সারের প্রয়োজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অম্লমাটিতে ক্যালশিয়াম, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, যদি ক্ষারমাটি হয় সেক্ষেত্রে কিঞ্চিৎ অ্যামোনিয়াম সালফেট এবং নিরপেক্ষ মাটি হলে ইউরিয়া প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে মনে রাখা দরকার, অজৈব সার প্রয়োগের আগে ব্লকের বা জেলার মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। জৈব সার প্রয়োগের পরে কাঠাপিছু সর্বোচ্চ ১কেজি চুন প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।

Skip to content