রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ডাক্তার মাছ। ছবি: সংগৃহীত।

সমাজে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে আমাদের যেমন ডাক্তারবাবুকে দরকার, তেমনই মাছেদের মধ্যেও বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে বসবাসকারী মাছেদেরও এইরকম কিছু চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়। এইরকম এক মাছেদের ডাক্তার হল, ল্যাবরয়ডেস ডিমিডিয়েটাস। এর ডাক নাম ‘Wrasse’। এরা বংশপরম্পরায় ডাক্তার মাছ।
বিভিন্ন মাছেদের মধ্যে অনেক রকম অসুখ দেখা যায়। কখনও পরজীবির সংক্রমণের কারণে, কখনও বা ব্যাকটিরিয়া-ছত্রাক সংক্রমণের জন্যে মাছেদের অসুখ হয়। গ্রুপার জাতীয় মাছেদের পরজীবির বিশেষ করে উকুনের উৎপাত বেশি হয়। এরা তখন ডাক্তার মাছের কাছে আসে। আর সেই ‘wrasse’ ডাক্তার সেগুলিকে খুঁটে খুঁটে সব খেয়ে নেয়। মাছটিও রোগমুক্ত হয়, আর wrasse -র হয় উদরপূর্ত্তি।
আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-১০৭: মাছচাষ করেও মশার জন্ম ও বংশবিস্তার প্রশিক্ষণের সাহায্যে আটকানো সম্ভব

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৮: আনন্দের নির্বাসন থেকে উত্তরণের উপায়?

এ ছাড়াও রোগসংক্রমণের কারণে পুঁজ, রক্ত, ঘায়ের মাংস—সবই ‘wrasse’ খেয়ে নেয়। প্রয়োজনে মুখ দিয়ে হাওয়া যোগান দিয়ে অক্সিজেন বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে মাছগুলি ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠে। দূষিত মাংসকণা মুক্ত করে রোগ সারায় যার ফি বাবদ পায় এই খাবার। কখনও কখনও রোগী মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে স্বামী-স্ত্রী দুই ‘wrasse’-ই দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থায় তৎপর হয়ে ওঠে। এ ভাবেই চলে ‘Symbiotic life’। এখানে এই একটি মাছের কথা উল্লেখ করা করা হলেও এ রকম কয়েকশো মাছ আছে, যাদের ডাক্তার মাছ নামে অভিহিত করা যেতে পারে।—চলবে।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।

Skip to content