শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি: নব্যেন্দু অধিকারী

জাগতিক বস্তু ক্রয়ের মধ্য দিয়ে আমরা পেতে পারি সুখের সন্ধান। কিন্তু শান্তির খোঁজ মেলে না জাগতিক দ্রব্যসামগ্রীর বেড়াজালে। তাই মানুষ সুখের আলোয় সমৃদ্ধ হলেও শান্তির অন্বেষণে ব্যস্ত থাকে সতত। আমাদের আজকের আলোচনা সেই রূপ এক অকৃত্রিম শান্তি।

মিষ্টি জলের মাছ, নোনা জলের মাছ, ঠান্ডা জলের মাছ প্রভৃতির উৎপাদন দেশের মানচিত্রে ভারতের স্থান খুবই ওপরের দিকে। এমনকি আমাদের রাজ্যেও পুকুর, খাল-বিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় কিছু না কিছু মাছ চাষ হয়ই। কিন্তু এগুলি সবই তো খাবারের জন্য, রসনা তৃপ্তির জন্য উৎপাদন হয়। বর্তমানে রসনা তৃপ্তি ছাড়াও মনের আনন্দও একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই মনের আনন্দ প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে রঙিন মাছ।

রঙিন মাছগুলির মধ্যে অ্যাঞ্জেল, মলি, গোরামি, গাপ্পি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বাড়িতে অ্যাকোরিয়ামে, কাচের পাত্রে, অফিসে, এয়ারপোর্টে প্রভৃতি জায়গায় এই রঙিন মাছগুলি শোভা বৃদ্ধি করে। পরিবেশের মাধুর্যতা বৃদ্ধিতে এবং শান্ত বাতাবরণ সৃষ্টিতে এই মাছের জুড়ি মেলা ভার। যেকোনও কারণেই হোক আমরা অনেক সময় আমাদের মনকে শান্ত রাখতে পারি না। মনকে শান্ত রাখার জন্য কেউ ব্যায়াম করেন, কেউ বা ধ্যান করেন। এসবের পাশাপাশি আমরা যদি দৃষ্টিনন্দন, মনোহর রঙিন মাছের ছন্দময় জীবন পাঁচটি মিনিট দাঁড়িয়ে দেখি তাহলে আমাদের উদ্বেগ ও চঞ্চলতার উপর পরে শান্তির আবরণ।
এই মাছগুলিকে আমরা যদি প্রতিপালন করি বা প্রজনন করিয়ে ছোট মাছগুলিকে যদি বিভিন্ন জায়গায় রাখি এবং ব্যবসায়িক ভাবনাচিন্তা করি তাহলে এর মধ্য দিয়ে আয়েরও একটি উৎস খুঁজে পাওয়া যায় তা বলাই বাহুল্য। খুব অল্প ব্যয়ে গ্রামের মহিলারা পর্যন্ত নিজেদের গৃহস্থালির কাজ শেষ করেও এই মাছের চাষ করতে পারেন।

হাওড়ার দাশনগরে প্রত্যহ সকালে রঙিন মাছের হাট এবং প্রতি রবিবারে কলকাতার গালিফ স্ট্রিটে রঙিন মাছের যে বিশাল বাজার বসে তা দেখলেই ধারণা করা যায় এই মাছের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে। আমাদের দেশে রঙিন মাছের প্রভাব অতীতে সেরূপ ভাবে ছিল না। পড়শি দেশগুলি যেমন তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশ প্রচুর পরিমাণে রঙিন মাছের চাষ করে অর্থ উপার্জন করছে। সেই ধারা যে আমাদের দেশ তথা পশ্চিমবঙ্গেও পড়েছে তা বলাই যায়। বিষয়টি খুবই ইতিবাচক।
মূলকথা একটিই শান্তিপূর্ণ বাতাবরণের সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা দানে রঙিন খুবই মাছ উল্লেখযোগ্য।

* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।
 

অনুলিখন: সুমন্ত দাস


Skip to content