খাদ্যরসিক বাঙালির অনেক রকম প্রিয় খাবারের মধ্যে একটি হল মাছ। মধ্যাহ্ন ভোজের সময়ে পাতে একটুকরো মাছ না হলে রসনার তৃপ্তি, অতৃপ্তিই থেকে যায়। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অনেক রকম মাছ থাকে। পোনা, ভেটকি থেকে শুরু করে চিংড়ি, পারসে প্রভৃতি। এই মাছগুলি আমাদের খুবই পছন্দের।
এই মাছগুলি ব্যতীত একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাছ আছে, যেগুলি খুবই সুস্বাদু। এরকম একটি গোষ্ঠী খুব একটা দেখা যায় না। এর নাম হল, ক্যাট ফিশ। ‘ক্যাট ফিশ’ বলার কারণ, এই মাছে বিড়ালের মতো গোঁফ থাকে। এদের আরও দুটি বৈশিষ্ট্য হল—এদের শরীরে কোনওরকম আঁশ থাকে না। আবার অতিরিক্ত কাঁটাও থাকে না।
এই মাছগুলি ব্যতীত একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাছ আছে, যেগুলি খুবই সুস্বাদু। এরকম একটি গোষ্ঠী খুব একটা দেখা যায় না। এর নাম হল, ক্যাট ফিশ। ‘ক্যাট ফিশ’ বলার কারণ, এই মাছে বিড়ালের মতো গোঁফ থাকে। এদের আরও দুটি বৈশিষ্ট্য হল—এদের শরীরে কোনওরকম আঁশ থাকে না। আবার অতিরিক্ত কাঁটাও থাকে না।
কোন কোন মাছ ‘ক্যাট ফিশ’?
এই গোষ্ঠীর মাছ অনেকগুলিই আছে। তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হল—পাবদা, ট্যাংরা, শিঙ্গি, মাগুর, বোয়াল প্রভৃতি। প্রত্যেকটি মাছই খুবই সুস্বাদু এবং রসনায় তৃপ্তিদায়ক।
কিন্তু খুবই দুঃখজনক ব্যাপার হল, এই মাছগুলি কিছু কিছু জায়গায় চাষ হলেও বেশিরভাগটিই প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করা হয়। তাই বলাই যায়, আমরা এখনও এই মাছগুলিকে চাষের আওতায় আনতে পারিনি। আনা সম্ভব হয়নি এই কারণেই হয়তো, আমারা পোনা মাছের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারিনি। মাছের চাষ বলতে আমরা শুধু রুই-কাতলা-মিরগেল চাষের কথা ভাবি। কিন্তু এই রুই-কাতলা-মিরগেলের সঙ্গে পাবদা, ট্যাংরা, শিঙ্গি, মাগুরও সুন্দর ভাবে চাষ করা যায়। ‘ক্যাট ফিশ’গুলিকে আলাদা ভাবে চাষতো করাই যায়। কিন্তু তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে পোনা মাছের সঙ্গেও করা সম্ভব।
চিন্তার বিষয় হল, এদের চাষের বিষয়ে আমরা সেরকম ভাবে এগিয়ে যেতে পারিনি। ফলে এদের দামও অনেক বেশি, আবার এই সব মাছ থেকে যায় বহু মানুষের সাধ্যের বাইরে। যদিও আমাদের রাজ্যে এমন পরিস্থিতি হওয়া উচিত নয়। কারণ, এই রাজ্যে একটি বৃহৎ মৎস্যদপ্তর রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত মৎস্য সংস্থা। কিন্তু বিষয় হল, কোনও দপ্তর বা কোনও সংস্থার চোখে এই বিষয়টি সেরকম ভাবে পড়ছে না। তাই এই মাছগুলি এখনও রয়ে গিয়েছে বহু মানুষের হাতের বাইরে।
এই ‘ক্যাট ফিশ’ যাতে ব্যাপক ভাবে আমাদের রাজ্যে চাষ হয়, সে বিষয়ে আমাদেরই উদ্যোগী হতে হবে। কারণ, সাধারণ মানুষের কাছে এই মাছ বড় পছন্দের। এই সব মাছ চাষের বিষয়ে আমরা যদি বিশেষ মনোযোগ দিই, তাতে যেমন আমাদের রসনার তৃপ্তি হবে, তেমনি যারা চাষ করবেন তাঁদের আয়ের পথও অনেকটা সুগম হবে।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।
এই ‘ক্যাট ফিশ’ যাতে ব্যাপক ভাবে আমাদের রাজ্যে চাষ হয়, সে বিষয়ে আমাদেরই উদ্যোগী হতে হবে। কারণ, সাধারণ মানুষের কাছে এই মাছ বড় পছন্দের। এই সব মাছ চাষের বিষয়ে আমরা যদি বিশেষ মনোযোগ দিই, তাতে যেমন আমাদের রসনার তৃপ্তি হবে, তেমনি যারা চাষ করবেন তাঁদের আয়ের পথও অনেকটা সুগম হবে।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।