মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

ত্বকের লাবণ্য ও বয়স ধরে রাখতে আট থেকে আশি আমরা সকলেই প্রত্যাশি। এই সমস্যা সমাধানে ফেস অয়েলের জুড়ি মেলা ভার। এর কাজও অনেক। ত্বককে আর্দ্র রাখে। তার সঙ্গেই বলিরেখা, চোখের তলার কালি দূর করতেও সাহায্য করে থাকে। কিন্তু গোড়াতেই জেনে রাখা ভালো, এই ধরনের তেলের দাম বেশি হয়। তাই নিজের ত্বকের প্রয়োজন বুঝে ফেস অয়েল কিনতে জানতে হবে।
 

ফেস অয়েলের কাজ কী?

সাধারণত ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতেই ফেস অয়েল ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়াও ভালো লিপ বাম, আন্ডারআই ক্রিম হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অন্য দিকে মেকআপ তুলতে বা মেকআপ টাচআপ করতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এটি। সে ক্ষেত্রে মেকআপ শুরুর আগেই কয়েক ফোঁটা ফেস অয়েল আঙুলের ডগায় নিয়ে ভালো করে পুরো মুখে মেখে নিন। এতে যেমন মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হবে। তেমনি ত্বকেও ঔজ্জ্বল্য আসবে।

 

কোন ত্বকে কী তেল?

 

স্পর্শকাতর ত্বকে

এই ধরনের ত্বকে কোনও তেল ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট জরুরি। কিছুটা তেল লাগিয়ে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে দেখুন, কোনও ইরিটেশন হচ্ছে কি না। যদি কোনও কিছু সমস্যা না হয়ে থাকে তার পরে তা ব্যবহার শুরু করুন। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর থাকায় মরিঙ্গা অয়েল বা অ্যালোভেরা অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এই তেল খুব হালকাও হয়।

আরও পড়ুন:

মুক্তি পেল জিৎ-রুক্মিণী জুটির প্রথম ছবি বুমেরাং

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫১: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—পশুর, ধুধুল ও হাবল

 

তৈলাক্ত ত্বকে

অনেকেই ভাবতে পারেন, তৈলাক্ত ত্বকে আবার তেল দিয়ে কী হবে? এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, এমন অনেক তেল আছে, যা ত্বকের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব নিয়ন্ত্রণ করে। অন্য দিকে ত্বকের সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রিত করে তৈলাক্ত ভাব কমায়। ত্বক খুব তৈলাক্ত হলে হোহোবা এবং গ্রেপসিড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। হোহোবা খুব হালকা তেল। অন্য দিকে ত্বকের অতিরিক্ত শাইনকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে এই তেল। গ্রেপসিড অয়েল ত্বকের ভাল সমতা বজায় রাখে। ফলে ত্বকে শুষ্ক প্যাচও থাকে না, আবার তৈলাক্তও হয় না। এই তেল হোহোবার চেয়েও তাড়াতাড়ি ত্বকে বসে যায়।

আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৫: সুর হারানো হারানো সুর

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৬: কুসুমকুমারী দাশ—লক্ষ্মী সরস্বতীর যুগ্ম মূর্তি

 

অ্যাকনে থাকলে

এই ধরনের ত্বকে এমন তেল দরকার, যাতে অ্যান্টব্যাকটিরিয়াল প্রপার্টি আছে। যেমন রোজহিপ অয়েল বা পোমেগ্র্যানেট অয়েল। রোজহিপ তেলে ফেনলস থাকে। রোমকূপের মুখ বন্ধ না করেই ত্বকে অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল চিকিৎসা চালিয়ে ত্বকের ব্রণ, অ্যাকনে দূরে রাখে। পোমেগ্র্যানেট অয়েলও ব্যাকটিরিয়া দূরে রেখে ত্বককে করে তোলে সজীব ও তরতাজা।

আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৯: রসিক স্বভাব মা সারদা

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৩: এক্সপায়ারি ডেটের ওষুধ খাবেন?

 

শুষ্ক ত্বকে

এই ধরনের ত্বকে সেবাম কম পরিমাণে উৎপাদন হয়। ফলে ত্বক শুষ্ক হওয়া, ফাটার মতো নানান সমস্যা দেখা দেয়। অন্য দিকে হোহোবা বা গ্রেপসিড মূলত অ্যাস্ট্রিনজেন্টের মতো কাজ করে। তাই শুষ্ক ত্বকে এমন তেল লাগাতে হবে, যাতে ওলেইক অ্যাসিড আছে। এই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বকে ময়শ্চার বজায় রেখে ত্বককে করে তোলে উজ্জ্বল। যেমন মারুলা অয়েল। এই তেলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় তা ত্বকের পক্ষে বেশি স্বাস্থ্যকর। আরও আছে আমন্ড অয়েল। এই তেলও হাইড্রেটিং। আবার ভিটামিন এ-সমৃদ্ধ তাছাড়া এতে রয়েছে অ্যাভোকাডো অয়েল। এই তেল ভিটামিন-ই, লেসিথিন এবং পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বককে ময়শ্চারাইজ করার সঙ্গে সঙ্গে পুষ্টি জোগায়। ত্বকের এপিডার্মিসে এই তেল শোষিত হয় খুব তাড়াতাড়ি।

আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৪৬: রাজার নিয়ন্ত্রণহীন অনুচরেদের কুকর্মের দায় রাজাকেই নিতে হয়

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩৩: এখনও সারেঙ্গিটা বাজছে

 

স্বাভাবিক ত্বকে

এই ত্বকে শুষ্কতা, তৈলাক্ত ভাব বা অ্যাকনের সঙ্গে মোকাবিলা করার দরকার নেই। তাই এমন তেল মাখাই ভাল, যার গুণাগুণ বেশি। আর্গন অয়েলে ভিটামিন ই থাকায় তা ত্বকের দাগছোপ, বলিরেখা দূরে রাখতে সক্ষম। রেটিনল অয়েল ত্বক হাইড্রেট করে ত্বকের টেক্সচার সমান করে, ঔজ্জ্বল্য বাড়াতেও সহায়ক। স্বাভাবিক ত্বকে এই ধরনের তেল ব্যবহার করা যায়।
তাই সবার প্রথমে ত্বকের ধরন বুঝে তেল কিনুন। একাধিক তেল একসঙ্গে মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। তবে ফেস অয়েল বেশি ঘষবেন না। হালকা হাতে পুরো মুখে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন।


Skip to content