রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫


পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায় ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী।

বাড়ি থেকে অফিস হয়ে আবার বাড়ি— মাঝে ওই সময়টা বাদ দিলে দিনের বেশির ভাগ সময়েই আমাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরেই থাকতে হয়। তাছাড়া ইদানীং যে হারে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে, তাতে এসি ছাড়া থাকাও খুবই কষ্টকর।

কিন্তু মুশকিল হল দীর্ঘক্ষণ এসি-তে থাকার অভ্যাস আসলে আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়। এটা হয়তো অনেকেরই জানা। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আমাদের বাইরের হাওয়া-বাতাসের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকলে ‘সিক বিল্ডিং সিন্ড্রোম’-এর শিকার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের একাংশও একই মত। তাঁদের কথায়, বাড়ির বাইরের তাপমাত্রার পারদের সঙ্গে ঘরের তাপমাত্রার ফারাক এতটাই বেশি যে, তৎক্ষণাৎ আমাদের শরীর তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না।

ফলস্বরূপ কারও কারও বুকে সর্দি বসে যাচ্ছে, শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ক্ষেত্র বিশেষে এর থেকে শ্বাসনালিতেও সংক্রমণ হতে পারে।
 

দীর্ঘক্ষণ এসি ঘরে থাকলে শারীরিক কী কী সমস্যা হতে পারে?

 

ঘন ঘন মাথাব্যথা

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে একটানা বেশি ক্ষণ থাকলে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে। এরকমই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ‘অ্যানাল্স অব ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ নিউরোলজি’-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, যাঁরা অনেক ক্ষণ অস্বাস্থ্যকর বাতাসযুক্ত পরিবেশে থাকেন তাঁদের মধ্যে ১৬ শতাংশ মানুষই প্রতি মাসে ১ থেকে ৩ দিন পর্যন্ত মাথাব্যথার সমস্যায় ভোগেন। তার মধ্যে আবার ৮ শতাংশ মানুষের প্রায় দিনই কোনও না কোনও সময় মাথাধরা বা মাথাব্যথার মতো সমস্যা দেখা যায়।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ১০: পূর্ণ রাজ্যে প্রথম কংগ্রেস মন্ত্রিসভা

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪৮: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা: কাঁকড়া, গরান ও গেঁওয়া

 

অ্যালার্জির সমস্যা

দরজা, জানালা বন্ধ করা ঘরে এসির মাধ্যমে আবর্তিত হওয়া দূষিত বায়ু অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী জীবাণুর আঁতুড়ঘর, এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। হাওয়ায় থাকা অ্যালার্জেন শরীরে ঢুকে ‘হিস্টামিন’কে উদ্দীপিত করে ফলে চোখ, নাক এবং গলায় অস্বস্তি শুরু হতে থাকে। অনেকের আবার টানা হাঁচি, নাক থেকে জল পড়ার মতো উপসর্গও দেখা যায়।

আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৮: ছবি আঁকতে আঁকতে অবনীন্দ্রনাথ টান দিতেন গড়গড়ায়, চিবোতেন পান

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬২: ক্রৌঞ্চবধের বিষাদ কী ছেয়ে আছে রামায়ণের প্রেক্ষাপট?

 

সারাক্ষণ ক্লান্তি

কেউ কেউ বলেন, সারা ক্ষণ এসিতে বসে কাজ করলে তাঁর ক্লান্তি কাটতে চায় না। তাই কাজকর্মের গতিও কমে যায়।
 

ড্রাই আইজ

দীর্ঘক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে আমাদের শরীর থেকে জল শুকিয়ে যায়। যদিও চিকিৎসকদের কাথায়, আমাদের যদি চোখ ভালো রাখতে হয়, তাহলে চোখের আর্দ্রতা বজায় থাকা খুবই প্রয়োজন। অনেকে হয়তো জানেন না, সারা ক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে আমাদের চোখও শুষ্ক হয়ে পড়ে। শুরু হয় নানা রকম অস্বস্তি। শুধু তাই নয়, কারও কারও দৃষ্টিও ঝাপসা হতে পারে।

আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৫: কথার কথা মা নয়—সত্য জননী

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২২: সরলাদেবী, এক পণ্ডিত মানুষ

 

শরীরে জলের অভাব

এমনিতেই গরমকালে আমাদের শরীরে জলের ঘাটতি থাকে। তার পরে যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকার অভ্যাস থাকে তাহলে তা মারাত্মক আকার নিতে পারে। আপনি বাইরে বেরোলে মাত্রাতিরিক্ত ঘামছেন, আবার ঘরে থাকলে চিলড এসি, জা নিজের অজান্তেই আমাদের শরীরকে জলশূন্য করে দিচ্ছে। ফলস্বরূপ দেখা দিতে পারে ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যা। তাই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।


Skip to content