চিকিৎসকরা সব সময়ই আমাদের বলে থাকেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে। এর জন্য তাঁরা পর্যাপ্ত পরিমাণ শাক-সব্জি খেতে বলছেন। মিষ্টি কুমড়ো অনেকে পছন্দ করলেও, কেউ কেউ আবার এই সব্জিটি একেবারেই পছন্দ করেন না। যদিও পুষ্টিবিদদের মত, ভিটামিন এ-এর একটি ভালো উৎস হল কুমড়ো।
ভিটামিন এ আমাদের চোখের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। তবে শুধু কুমড়ো না, তার বীজও একেবারে পুষ্টিগুণে ভরপুর। অনেকরই হয় জানা নেই, কুমড়োর বীজ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস। সে-কারণে কুমড়োর বীজ ফেলে দেওয়ার আগে দু’বার চিন্তা করে দেখা উচিত। এখানেই শেষ নয়, স্বাস্থ্যের জন্য তো উপকারী জানা গেল, এই বীজ রূপচর্চাতেও অত্যন্ত কার্যকর!
রোজকার খাদ্যতালিকায় কেন কুমড়োর বীজ রাখবেন?
● এই বীজে রয়েছে ট্রিপ্টোফ্যান নামে এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এই অ্যামাইনো অ্যাসিড আমাদের সুখানুভূতি সৃষ্টিকারী হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে মেলাটোনিন এবং সেরোটোনিন নিঃসৃত হতেও সহায়তা করে থাকে। মেলাটোনিন এবং সেরোটোনিন আমাদের অবসাদ কাটিয়ে শরীর ও মনকে তাজা রাখতে সাহায্য করে। এমনকি, শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধিতেও দারুণ উপকার করে এই বীজ।
● কুমড়োর বীজ আমাদের ত্বকের আর্দ্রতাকে রাখতে সাহায্য করে। তাই উজ্জ্বল দেখায় ত্বক।
● এটি উচ্চ ফাইবারযুক্ত একটি সব্জি। নিয়মত খেলে আমাদের খাবার হজমেও উন্নতি করতে পারে।
● কুমড়োর বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সালফার, জিংক, ভিটামিন এ, বি, কে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এই সব প্রাকৃতিক উপাদান চুল উজ্জ্বল এবং ঘন করতে সাহায়তা করে। এমনকি, বীজে থাকে কিউকারবিটিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড আমাদের চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
● প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে কুমড়োর বীজে। এই ফাইটোকেমিক্যাল সালে মাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে খুব সাহায্য করে।
● রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কুমড়োর বীজ সাহায্য করে। ঝুঁকি কমায় হৃদ্রোগেরও।
● টাইপ ২ ডায়াবেটিকদের রক্তে শর্করার মাত্রাও কমায়।
● এতে থাকা সেরোটোনিন রাসায়নিক উপাদান স্নায়ুতন্ত্রের চাপ কমিয়ে অনিদ্রার সমস্যা মেটাতে বেশ সাহায্য করে।
● এই বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক রয়েছে। এই সব উপাদান অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের সমস্যা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেই।
কুমড়োর বীজ কী ভাবে খাবেন?
● কুমড়োর বীজ বেটে বিভিন্ন ধরনের রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। স্যুপ ও স্যালাডেও খাওয়া যায়। তবে কুমড়োর বীজকে হালকা সেঁকে স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারলে সবথেকে বেশি সুফল পাওয়া যেতে পারে।