শরীরচর্চার অভাব এবং খাদ্যাভাসে অনিয়মে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের লিভার। অতিরিক্ত তেলমশলা, ঘি, মাখন দিয়ে তৈরি খাবার, অ্যালকোহল নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে লিভারে চর্বি জমতে শুরু করে। আর লিভারের ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হলেই তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। এক্ষেত্রে লিভারের অসুখের সঙ্গে দেখা দেয় অন্যান্য রোগও। মূত্রথলির ক্যানসার, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার— সবেরই মূলে রয়েছে লিভারের অসুস্থতা। শুধু তাই নয়, কিডনির সমস্যার নেপথ্যেও লিভারের ভূমিকা রয়েছে। ফলে লিভারকে সুস্থ রাখা খুবই প্রয়োজন। আর সে জন্যই লিভার ‘ডিটক্স’ করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে লিভার থেকে যতটা সম্ভব দূষিত পদার্থ দূর করে দেওয়ার। তবে এর জন্য কিছু পানীয় আছে, যা আমাদের লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী হতে পারে।
পুদিনা ও শশার শরবত
● অনেকেই জানেন শশার শরবত খুবই উপকারি। তবে লিভারের জন্যও যে এই শরবত খুবই কার্যকরী তা হয়তো অনেকে জানেন না। পুদিনা দেওয়া শশার রস আমাদের হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরকে টক্সিন-মুক্ত করতে পুদিনা ও শশার শরবতের কোনও বিকল্প নেই। শশাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন ও বিভিন্ন রকম খনিজ লবণ রয়েছে। শশার শরবত স্মুদির মতোই বানিয়ে নিতে পারেন। রোজ দিন খালি পেটে এই শরবত পান করলে আবার ওজনও কমবে।
গাজরের রস
● চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ শরীর সুস্থ রাখতে মরসুমি ফল-সব্জি খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেকেই স্যালাড হিসাবে কাঁচা গাজর খেতে পছন্দ করেন না। তেমনটা হলে ঘরেই গাজরের স্মুদি বানিয়ে নিতে পারেন।গাজরের রস গরমে পেট ঠান্ডা তো রাখবেই, সঙ্গে হজমশক্তিও বাড়াবে। গাজরে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে এবং পটাশিয়াম। তাই গাজর খাওয়া চোখের জন্যও ভালো। এমনকি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ক্যানসার প্রতিরোধে, ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
হলদি চা
● হলুদে রয়েছে কারকিউমিন। এই উপাদান একাই নানা শারীরিক অসুস্থতার দাওয়াই হতে পারে। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এশিয়ায় হলুদ শুধু মশলা হিসেবে নয়, ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার হয়ে আসছে। ভিটামিন ই বা ভিটামিন সি-র তুলনায় পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কারকিউমিন। ফলে হলুদ আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা তো বাড়ায়, সেই সঙ্গে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, আবার লিভার ভালো রাখে।
অ্যালো ভেরা জুস
● অ্যালো ভেরায় আছে অ্যালোইন নামে এক প্রোটিন। এই প্রোটিন শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। অ্যালো ভেরার জুসের সুবিধা হল এটি দিনের যে কোনও সময়ে খেতে পারেন। আবার অ্যালো ভেরায় তাহাক ভিটামিন, এ, সি এবং ই লিভারও ভালো রাখে।
লেবুর রস
● পাতিলেবুতে আপেল আর আঙুরের থেকেও পটাশিয়াম বেশি থাকে। ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম— কী নেই এই পাতিলেবুতে! পুষ্টিবিদের একাংশের বক্তব্য, রোজ সকালে উঠে এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে লিভার ভালো থাকবে।