বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


কাহিনি: ট্রাভেল অ্যাডভেঞ্চার
ভাষা: হিন্দি
প্রযোজনা: তাপসী পান্নু, প্রাঞ্জল খান্ধদিয়া, আয়ুষ মহেশ্বরী প্রমুখ
কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ: তরুণ দুদেজা পারিজাত জোশি
পরিচালনা: তরুণ দুদেজা
অভিনয়ে: দিয়া মির্জা, ফতিমা সানা শেখ, রত্না পাঠক শাহ, সঞ্জনা সাঙ্ঘি প্রমুখ
সময়সীমা: ১৪০মিনিট
রেটিং: ৭.০/১০
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম: নেটফ্লিক্স
ধক ধক করনে লাগা নয়। বড়সড় বাইক ইঞ্জিনের ধক ধক শব্দ নিয়ে গল্প। চার চার জন মহিলা বাইকারের দিল্লি থেকে সুউচ্চ খারদুংলা পাস বাইক-অভিযানের চমকপ্রদ কাহিনিচিত্র ধক ধক। প্রথম ছবিতেই পরিচালক তরুণ দুদেজা একটি অন্য ধারার গল্প বেছে নিয়েছেন। আমাদের পরিচিত পিতৃতান্ত্রিক সমাজের নানা স্তর থেকে উঠে আসা নানা বয়সের চারজন মহিলা দিল্লির কর্মব্যস্ত শহর জীবন থেকে নিজেদের ফিরে পেতে নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে ফিরে পেতে পাড়ি দিয়েছেন এক কঠিন পথে।
ছবির কাহিনি চিত্রনাট্যকার পরিচালক চিত্রগ্রাহক চিত্রসম্পাদকের প্রায় নিখুঁত সামঞ্জস্যে ছবির দর্শক এই চার মহিলার সঙ্গী হয়ে পড়েন নিজেদের অজান্তেই। বয়স্কা দাদি মাহি (রত্না পাঠক শাহ), মুসলিম পরিবারের পর্দানসীন গৃহবধূ উজমা (দিয়া মির্জা), এক সামাজিক কলঙ্কের শিকার হয়েও নিজস্ব আইডেন্টিটি ফিরে পেতে মরিয়া শশিকান্ত যাদব ওরফে স্কাই (ফতিমা সানা শেখ) আর বাবার মৃত্যুর পর একা মায়ের কাছে বড় হওয়া সনাতনী মঞ্জরি (সঞ্জনা সাংঘি)—নিজস্ব পটভূমি এবং তাদের যাত্রা পথের আনন্দ দুঃখ যন্ত্রণা আশঙ্কা বিপদ এসব নিয়েই টানটান সিনেমা ধক ধক।
আরও পড়ুন:

রিভিউ: ক্রাইম থ্রিলারে সাজানো সামাজিক পচনের গল্প, ‘দহাড়’-এ দাপটের সঙ্গে গর্জন সোনাক্ষীর

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৬: ভয়ের না ‘অভয়ের বিয়ে’

নায়কহীন কাহিনিবিন্যাস আকর্ষণ করে গল্প বলার নতুনত্বে। ভারতীয় মেজাজে কিছুটা হলিউড ঘরানার ছবি। ছবির অনেকটা জুড়েই ফতেমা সানা শেখ। চরিত্রের সঙ্গে একেবারে মানিয়ে গিয়েছে ফতেমা। দিয়া মির্জা খুব সুন্দর। রত্না পাঠক শাহ অনবদ্য। কয়েকটি নির্বাক মুহূর্তে তার অভিব্যক্তি তারিফ করার মতো। খুব সহজ কিন্তু শিক্ষনীয় সংলাপ রয়েছে সারা ছবির শরীর জুড়ে। নারীদের নিজস্ব মনের কথা সাবলীল ভাবে বলেছে এই ছবি।
আরও পড়ুন:

দশভুজা, শক্তিরূপেন সংস্থিতা, পর্ব-৩: মালতীর কথা…

এই দেশ এই মাটি, অসমের আলো-অন্ধকার, পর্ব-৩: ইতিহাসের পাতায় লাচিত বরফুকোন

ছবির কাহিনির অনুষঙ্গ কোথাও কখনও চাপিয়ে দেওয়া মনে হয়নি। খুব স্বাভাবিকভাবেই ছবিতে পরপর ঘটনা এসেছে এবং তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে গেছে ছবির পরবর্তী অংশে। গানগুলি সুখশ্রাব্য। গ্রেটার নয়ডা নিউ দিল্লি হিমাচল প্রদেশ-সহ লেহ লাদাখের প্রায় ৮৩টি লোকেশনে ছবি শুটিং হয়েছে ৪০ দিন ধরে।
আমাদের সকলের লক্ষ্য আলাদা আলাদা নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদও আলাদা ধরনের। কিন্তু মানব সম্পর্কের টানে সেই সব কিছু আলাদা শেষে এক হয়ে যায়। সেখানেই এই ছবির সার্থকতা। ভয়াবহ অতিমানবীয় কর্মকাণ্ড গুলিগোলা ফিনকি দিয়ে ছোটা রক্তে লাল হয়ে থাকা ফ্রেম-এর ভিড়ে চার ভিন্ন ধরনের মহিলার এই বাইকাভিযানের অন্যধরণের ছবি আপনার ভালো লাগবে।
* ফিল্ম রিভিউ: জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’। দ্বিতীয় খণ্ড লিখেছেন।

Skip to content