আগে দক্ষিণী সিনেমা মানেই তামিল ভাষার সিনেমাকেই বুঝতেন দর্শকবৃন্দ। কিন্তু ওই যে আগেই বলা হল যুগ বদলেছে, তাই মানুষের ভাবনারও পরিবর্তন হয়েছে। দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রি মানে যে শুধু তামিল নয়, দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রি মানে তেলেগু, মালায়ালাম, তামিল কিংবা কন্নড় ভাষার সিনেমা বোঝায়, তা বুঝতে শিখেছেন দর্শকরা। এক সময়ে রজনীকান্ত, কমল হাসান, নাগার্জুনা, পবন কল্যাণ, চিরঞ্জীবীর মতো অভিনেতাদের সিনেমা দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রি কাঁপিয়েছে। এখন সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আরও অভিনেতাদের নাম। ধনুষ, আল্লু অর্জুন, সুরিয়া, চিয়ান বিক্রম, থালাপতি বিজয়, রবি তেজা, বিজয় সেতুপাত্তি, জুনিয়র এনটিআর, রাম চরণ, পৃথ্বিরাজ, নাগা চৈতন্য, প্রভাস, যশ, বিজয় দেবরকোন্ডা প্রমুখ।
সম্প্রতি আল্লু অর্জুন অভিনীত ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। এই ছবির প্রত্যেকটি দৃশ্য এবং গান দর্শকের মন ছুঁয়ে গেছে। এই ছবির পর ভারতীয় সিনেমার অন্যতম দামি হিরো হতে চলেছেন আল্লু অর্জুন। মুক্তি পাওয়ার পর থেকে বক্স অফিসে ঝড় তোলে এই ছবি। প্রথম তিন দিনে বুক মাই শো থেকে এই ছবির ২৬ লাখ টিকিট বিক্রি হয়েছিল, যা বর্তমান সময়ে বিরল।
অন্যদিকে, প্রভাস পাঁচ বছর কোনও সিনেমায় অভিনয় করেননি বাহুবলীর জন্য। পাঁচ বছর ধরে প্রভাসের অভিনয় দেখার জন্য অপেক্ষা করেছে দর্শক। তারপর বাহুবলী মুক্তি পেতেই দর্শকের সেই উচ্ছ্বাস, সেই ভালোবাসা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বলিউডে এখন আর এমন কোনও তারকা নেই যার জন্য দর্শক পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে পারবে। আমির, শাহরুখ, সলমনের অভিনীত কোনও সিনেমা পাঁচ বছরে মুক্তি না পেলে কিংবা এদের কোথাও অভিনয় করতে না দেখা গেলে দর্শক হয়তো মনেও রাখবেন না তাঁদের। এখানেই দক্ষিণী সিনেমার বাজিমাত৷
একটা সময় ছিল যখন বলিউড সিনেমার প্রতি দর্শকের একটা আলাদা ভালোবাসা ছিল, আলাদা টান ছিল। আমরা যদি একটু ৯০-এর দশকের দিকে চোখ রাখি, তাহলে দেখব, বলিউডের প্রায় সব সিনেমাই সুপারহিট। কারণ, দর্শক ভালোবেসেছে সেই সিনেমাগুলিকে, তাই সুপারহিট হয়েছে। সরষের খেতের মাঝে শাহরুখ-কাজলের রোমান্স দেখার কিংবা শাহরুখের গলায় একবার ‘কি কি কি কিরণ’ শোনার জন্য পাগল হয়ে যেত দর্শককুল। কয়েক বছর আগেও সলমন, শাহরুখ, আমির খানদের সিনেমা থাকত আড্ডার বিষয়। কিন্তু যুগ বদলেছে, আর তার সঙ্গে সেই ধারারও পরিবর্তন হয়েছে। যত দিন যাচ্ছে দক্ষিণী সিনেমার কাছে ক্রমশ জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে বলিউড।