শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


হুমা কুরেশি ও সোনাক্ষী সিনহা।

কাহিনি বৈশিষ্ট্য: বিনোদনমূলক বাণিজ্যিক ছবি (২০২২)
ভাষা: হিন্দি
কাহিনি চিত্রনাট্য সংলাপ : মুদাসসর আজিজ ও সাশা সিং
নির্দেশনা: সাত্রাম রামানি
অভিনয়ে: হুমা কুরেশি, সোনাক্ষী সিনহা, জাহির ইকবাল, মাহাট রাঘবেন্দ্র, শোভা খোটে প্রমুখ
প্রযোজনা: হুমা কুরেশি, মুদাসসর আজিজ, সাকিব সালেম, টি-সিরিজ ফিল্মস ও অন্যান্য
সময়সীমা: ১২৮ মিনিট
দেখা যাবে: নেটফ্লিক্স


৪ নভেম্বর ২০২২ হিন্দি ছবি ‘ডাবল এক্সএল’ মুক্তি পেয়েছিল। সাতরাম রামানি পরিচালিত এই ছবি মূলত বিনোদনমূলক কমেডিতে ভরপুর। ফ্যাশন ডিজাইনার সায়রা খান্না থাকেন দিল্লিতে। আর রাজশ্রী ত্রিবেদী থাকেন মিরাটে। দু’জনেই তাঁদের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচেন। রাজশ্রীর স্বপ্ন ক্রিকেট। না খেলোয়াড় হিসেবে নয়, সে স্পোর্টস প্রেজেন্টার হতে চায়। কিন্তু দু’জনের স্বপ্নের মূল বাধা হল তাঁদের মোটাসোটা চেহারা। বারবার ধাক্কা খেতে খেতে দুই অপরিচিত ভিন্ন ধারার স্বপ্ন দেখা মানুষ কীভাবে একসঙ্গে হলেন, আর কীভাবেই বা তাঁদের স্বপ্ন সত্যি হল, সেই নিয়েই আদ্যন্ত মজাদার ছবি ‘ডাবল এক্সএল’।
১২ মে ২০২৩-এ মুক্তি পেয়েছিল বাংলা ছবি ফাটাফাটি। সেখানেও মোটাসোটা নায়িকার টেলারিংয়ের দোকান ছিল। ছবি ক্লাইম্যাক্স-এ নায়িকা ফ্যাশন শোতে শো স্টপার হয়েছিলেন। ডাবলএক্স এল ঠিক তাই। তবে দুটি ছবির চলন ও গল্প বলার ধরণ আলাদা। গল্পের অনুষঙ্গ অন্যরকম। হয়তো ভাবনার সময় মিল হয়ে গিয়েছে। এমন তো হয়। ২০২০ তে ওভারসাইজ লাভ নামে একটি চাইনিজ ছবি মুক্তি পায়, সেখানে নায়িকার সমস্যাও তার মোটাসোটা চেহারা। ২০১৯ সালে গন কেশ (Gone Kesh), বালা বা উজড়া চমন সবই মাথার চুল কমে যাওয়ার গল্প। বাংলা ছবি টেকো-তে অবশ্য মাথার চুল কমে যাওয়া থেকে গল্পটা লোক-ঠকানো বিজ্ঞাপনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই ভাবনার অনুপ্রেরণা নিয়ে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:

মুভি রিভিউ: স্ক্যাম ২০০৩: দ্য তেলগি স্টোরি, একটি রদ্ধশ্বাস ওয়েব সিরিজ

এই দেশ এই মাটি, ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব-৩: ত্রিপুরা সমৃদ্ধিতে রাজা বিজয় মাণিক্যের ভূমিকা অপরিসীম

একেবারে আত্মবিশ্বাস চুরমার হবার আগের মুহুর্তে ‘ডাবল এক্সএল’-এর জোড়া নায়িকা সায়রা খুঁজে পেলো রাজশ্রীকে। রুমাল খুঁজতে গিয়ে বেড়াল পাওয়ার মতো ব্যাপার। সায়রা তার ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ফাউন্ডার খুঁজে পেতে তার ডিজাইন করা পোশাকের একটা প্রমোশনাল ফিল্ম বানাতে চায়। কিন্তু ডিরেক্টর শেষ মুহূর্তে ডোবাল আর দিল্লির বিখ্যাত স্পোর্টস চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে এসে রাজশ্রী বাদ পড়ে গেল শুধু মোটা বলে। সায়রা ও রাজশ্রী একে অপরের দিকে হাত বাড়াল। লন্ডনে পৌঁছে তাঁরা শুরু করলেন বিজ্ঞাপন ছবির শুটিং। ইউটিউবে আপলোড করার জন্য নিজের স্পোর্টস প্রেজেন্টেশন তৈরি করা ছাড়া কোনও অভিজ্ঞতা নেই রাজশ্রীর। তবু তাকেই বাজি ধরল সায়রা।
আরও পড়ুন:

পর্দার আড়ালে, পর্ব-৫০: অর্ধশতাব্দী ছুঁলো ‘অমানুষ’

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-১৬: কল্যাণী—অন্দরমহলের সরস্বতী

বিবাহযোগ্যা মেয়ের বিয়ে হয়নি তাই রাজশ্রীর মা সবসময় চিন্তিত। আর সায়রার প্রেমিক তাঁকে মিথ্যে বলে ঠকিয়েছে। তাই তাঁরা পুরুষদের খুব একটা পাত্তা দিতে চায় না। সায়রা আর রাজশ্রীর স্বপ্ন সত্যি হল, তাঁরা কি তাঁদের সত্যিকারের মর্যাদা দেবে এমন মানুষ খুঁজে পেল? সেই নিয়েই এই কমেডি ছবি ‘ডাবল এক্সএল’। বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করেছেন হিন্দি ছবির দু –দু’জন অসাধারণ অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৩৫: ঘুম ঘুম চাঁদ ঝিকিমিকি তারা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫২: বইয়ের সব কপি কবির নির্দেশে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল

ছবির বেশিরভাগ অংশ লন্ডনে চিত্রায়িত। গানগুলি মজাদার। একটি গানে তামিল লিরিক্সের ব্যবহার খুব সুন্দর। মাহাত রাঘবেন্দ্র ও জাহির ইকবালের অভিনয় নজর কাড়ে। তরুণ সুরকার সোহেল সেনের সুরের তরতাজা উপস্থাপনা মন ভালো করে দেয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোহেল সেন স্বনামধন্য সুরকার জুটি দিলীপ সেন-সমীর সেনের অন্যতম সমীরের পুত্র। সোহেল উচ্চাঙ্গ সংগীতের শিক্ষা নিয়েছে তাঁর দাদু শম্ভু সেনের কাছে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে সোহেল রোশনি নামে একটি টেলিফিল্মের সুরারোপ করেন। সেই গানে প্লেব্যাক করেছিলেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। সোহেলের প্রথম হিন্দি ছায়াছবিতে সুযোগ পাওয়াটাও চমকপ্রদ। পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকর তাঁর ‘What is your raashee’ ছবিতে সুরকার হিসেবে এআর রহমানকে চেয়েছিলেন। কিন্তু রহমান এই ছবিটির বদলে বিখ্যাত স্লামডগ মিলিয়নের ছবিটিতে সুরারোপ করার সিদ্ধান্ত নেন। ছবিতে সুযোগ পেলেন সোহেল সেন।
* জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’। এখন লিখছেন বসুন্ধরা এবং…এর ৩য় খণ্ড।

Skip to content